বগুড়ায় পুলিশের ওপর ছাত্রদলের হামলা, আহত ৫

বগুড়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২০, ২১:১৫ | প্রকাশিত : ০১ জানুয়ারি ২০২০, ২১:১০

বগুড়ায় ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নেতাকর্মীদের জুতা পায়ে শহীদ মিনারে দাঁড়াতে নিষেধ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে পুলিশ। এতে পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মাথা ফেটে যাওয়া একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বুধবার দুপুর ১২টার দিকে বগুড়া শহরের সাতমাথা সংলগ্ন শহীদ খোকন পার্কের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘটনা ঘটে। পরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশ থেকে ফেরার পথে পুলিশের ওপর হামলা ও অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে ছাত্রদলের ২০ কর্মীকে আটক করে পুলিশ।

ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের হামলায় আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী, সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আশরাফুল ইসলাম এবং পুলিশ লাইনসে কর্মরত কনস্টেবল পারভেজ, সিফাত ও মামুন। পারভেজকে বগুড়া পুলিশ লাইনস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

লাঠির আঘাতে মাথা ফেটে যায় পুলিশ সদস্য পারভেজ মিয়ার। পরে তাঁকে চিকিৎসার জন্য পুলিশ লাইনস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পুলিশ জানায়, বগুড়ায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হলেও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা বেলা ১১টা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শহীদ খোকন পার্কের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে জমায়েত হতে থাকেন। দুপুর ১২টার দিকে বগুড়া-৬ আসনের সাংসদ ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জি এম সিরাজ, বগুড়া-৪ আসনের সাংসদ মোশারফ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান লালুসহ জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রা বের করার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় ২০ থেকে ২৫ জন নেতা-কর্মী জুতা পায়ে শহীদ মিনারে ওঠেন। বিষয়টি পুলিশের নজরে এলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পাঁচ পুলিশ সদস্য জুতা পায়ে শহীদ মিনারে না উঠতে অনুরোধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুই সাংসদের সামনেই ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা করেন। লাঠির আঘাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তীর নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়, কনস্টেবল পারভেজের মাথা ফেটে যায়। পরে তাঁদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন, ‘হঠাৎ করেই নেতা-কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা করেন এবং অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তখন পুলিশ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। পরে সমাবেশ থেকে ফেরার পথে ২০ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়।’ এ ঘটনায় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় মামলা করবে পুলিশ।

এ ব্যাপারে বগুড়া জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, শহীদ মিনারে জুতা পায়ে নেতা-কর্মীদের ওঠা এবং পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ সঠিক নয়। বগুড়া সদর ফাঁড়ির পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদের কাছে মৌখিক অনুমতি নিয়েই শহীদ খোকন পার্কে নেতা-কর্মীরা জমায়েত হন। এরপরও পুলিশ সমাবেশ শেষে ফেরার পথে ছাত্রদলের অনেক নেতা-কর্মীকে আটক করেছে।

জানতে চাইলে বগুড়া-৬ আসনের সাংসদ এবং বগুড়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জি এম সিরাজ ‘শহীদ মিনারে কোনো নেতা-কর্মী জুতা পায়ে দাঁড়াননি’ দাবি করেন। তিনি বলেন, সাংসদ ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান কোনো সরকারবিরোধী কর্মসূচি নয়। শহীদ টিটু মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশ আয়োজনের জন্য জেলা পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়েও মেলেনি। পরে পুলিশ ঐতিহাসিক আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে জমায়েত হওয়ার অনুমতি দেয়। নেতা-কর্মীরা সেখানে জমায়েত হওয়া শুরু করলে পুলিশ নেতা-কর্মীদের শহীদ খোকন পার্কে যেতে বলে। সেখানে কোনো কারণ ছাড়াই উসকানিমূলকভাবে পুলিশ লাঠি হাতে মারমুখী আচরণ করে। এতে পুলিশের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।

ঢাকাটাইমস/০১জানুয়ারি/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :