ঢাকা সিটি নির্বাচনের কাউন্সিলর প্রার্থী

যোগাযোগ আর প্রচারণার ছক আঁকছেন প্রার্থীরা

প্রকাশ | ০৪ জানুয়ারি ২০২০, ০৮:১৩ | আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২০, ১১:৩৮

কাজী রফিক, ঢাকাটাইমস

নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দের আগ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় অংশ নেয়ার সুযোগ নেই। ফলে নির্বাচনী আচরণবিধি রক্ষা করে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রচারণার ছক আঁকছেন দুই সিটির কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের পাশাপাশি নির্বাচনের মাঠ গুছিয়ে নিচ্ছে বিএনপির প্রার্থীরাও।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। উত্তরে ৫৪টি সাধারণ ওয়ার্ড, ১৮টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড, দক্ষিণে ৭৫টি সাধারণ ও ২৫টি সংরক্ষিত আসনে এরই মধ্যে ১৪ জন মেয়র প্রার্থী ও ১ হাজার ২৫ জন কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার মনোনয়ন যাচাই-বাছাই শেষে বৈধ প্রার্থীও চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। অবৈধ বিবেচিত হওয়া প্রার্থীদের নিজেকে বৈধ প্রমাণে আপিলের সুযোগ রয়েছে। আগামী ৯ জানুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। এরপর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হলে তারা আনুষ্ঠানিক প্রচারণার সুযোগ পাবেন।

তত দিন তর সইছে না প্রার্থীদের। কিন্তু বাধা নির্বাচনী আচরণবিধি। নির্বাচন কমিশনের বিধি মোতাবেক, প্রতীক বরাদ্দের আগ পর্যন্ত কোনো প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারণা করলে তা নির্বাচনের আচরণবিধি ভঙ্গ বলে গণ্য হবে।

তাই বলে বসে নেই প্রার্থীরা। আচরণবিধির দিকে লক্ষ্য রেখে আপাতত অল্প পরিসরে ঘরোয়া জনসংযোগ, সামাজিক যোগােযাগমাধ্যমে নিজেদের প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা। একই সঙ্গে ছক আঁকছেন আগামী দিনের নির্বাচনী প্রচারণার।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, মাঠের বিরোধী দল বিএনপির পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও আছেন আলোচনায়।

ঢাকার বিভিন্ন স্থানের ঘরোয়া, রাজনৈতিক কার্যালয়গুলোতে বৈঠকে সময় দিচ্ছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। কেউ কেউ নিজেরা উপস্থিত না থাকলেও নেতাকর্মীদের মাধ্যমে আংশিক প্রচারণা চালাচ্ছেন। প্রার্থীরা জানান, আচরণবিধি ভঙ্গ হয়, এমন কোনো কার্যক্রম তারা করছেন না। প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারণার কৌশল, নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে কাজ করছেন তারা।

ঢাকা উত্তরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন আনোয়ার শহিদ খান রনি। ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘প্রচারণা এখন করার সুযোগ নেই। আমরা ভোটও চাইতে পারব না। এখন আমরা আমাদের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ ও তাদের সমন্বয় করছি।’

নির্বাচনী ইশতেহার তৈরিতে সময় দিচ্ছেন দক্ষিণের ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া মোহাম্মদ হোসেন। তিনি ওয়ার্ডটির সদ্য সাবেক কাউন্সিলর। বর্তমান কর্মসূচি সম্পর্কে জানাতে গিয়ে ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘আমি আপাতত নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করছি। নির্বাচন পরিচালনা জন্য টিম তৈরি করছি। কীভাবে প্রচারণা করব, সব টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে ঠিক করে নিচ্ছি।’

প্রচারণার ছক আঁকার পাশাপাশি স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করছেন উত্তরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এ জি এম শামসুল হক। ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘আপাতত নির্বাচন সামনে রেখে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ ছাড়া কোনো প্রচারণায় অংশ নিচ্ছি না।’

নির্বাচনী মাঠ গুছিয়ে নিতে কাজ করছেন উত্তরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলেয়া সারোয়ার ডেইজি। এলাকায় দলীয় কার্যালয়ে নিয়মিত যাতায়াত রয়েছে তার। পাশাপাশি তৈরি করছেন নির্বাচনী ইশতেহার।

বসে নেই ওয়ার্ডটির স্বতন্ত্র প্রার্থী সোহেল রানাও। তিনি জানান, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডকে একটি আদর্শ ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে তার। সে অনুযায়ী একটি নির্বাচনী ইশতেহার তৈরিতে সময় দিচ্ছেন তিনি।

একই সিটির ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগে মনোনীত প্রার্থী শেখ মোহাম্মদ হোসেন। এই মুহূর্তে কোনো ধরনের প্রচারণায় তিনি নেই বলে জানান। তবে স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক দাওয়াত ও অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। কুশল বিনিময় করছেন।

এবারের নির্বাচনে ঢাকা উত্তরে ভোটার সংখ্যা ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৬২১ জন। সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা এক হাজার ৩৪৯ এবং ভোটকক্ষ সাত হাজার ৫১৬টি। দক্ষিণে ভোটার রয়েছে ২৩ লাখ ৬৭ হাজার ৪৮৮ জন। সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র এক হাজার ১২৪ আর ভোটকক্ষ পাঁচ হাজার ৯৯৮টি।

(ঢাকাটাইমস/৪জানুয়ারি/মোআ)