ধর্ষকরা কি অপ্রতিরোধ্য?

প্রকাশ | ০৬ জানুয়ারি ২০২০, ১৬:১৯ | আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২০, ১৬:৪১

মানিক মুনতাসির
মানিক মুনতাসির

তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশু, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, গৃহবধূ, বৃদ্ধাসহ সব প্রায় শ্রেণির নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। বিশেষ সংরক্ষিত এলাকা, বাসা বাড়ি, যাত্রীবাহী বাস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গহীন জঙ্গল, লোকালয়, গ্রাম, শহর, কর্মক্ষেত্র, রাজধানী সবখানেই ধর্ষক। এদের কি রুখে দেয়া যায় না। করুন না একটা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা। মৃত্যুদণ্ড, নপুংশক করে দেয়া কিংবা ফাঁসিতে ঝোলানো এবং দ্রুততম সময়ে। ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের শাস্তি কেন দ্রুত বিচার আইনে নয়। কেন ঝুলে থাকে বছরের পর বছর। কেন তনুদের নাম ভুলে যাওয়ার আগে তাদের ধর্ষণের বিচার হয় না। সমাজব্যবস্থাটা বোধহয় পচে গেছে। গন্ধ বেরুচ্ছে উৎকট। পচা লাশের গন্ধ সর্বত্র। আমরা আসলেই দিনে দিনে পচা লাশে রূপ নিচ্ছি। কারো কোনো বিকার নেই। প্রতিবাদ হয় সাময়িক।

হোক না যতবড় অন্যায়, অপরাধ প্রতিবাদ খুবই ক্ষীণ। সবাই খালি নিজে বাঁচা আর নিজে ভালো থাকা নিয়ে ব্যস্ত। দেশ, সমাজ, মানুষ, সমাজব্যবস্থা, রাজনীতি, প্রতিবেশী সব গোল্লায় গেলেও আমি/আমরা কোনো প্রতিবাদ করি না। গভীর রাতে উচ্চস্বরে গান বাজে প্রতিবাদ না করে দরজা জানালায় খিল দিয়ে শুয়ে থাকি। এ যেন  নিজের বিবেকের দরজায় খিল দিয়ে দিই। বিবেক বলতে এখন নিজে বাঁচা আর ভালো থাকার চিন্তা!

পাশেই উচ্চ শব্দে গগণবিদারী হর্ন বাজলেও প্রতিবাদ না করে কান চেপে ধরি। বাসের হেলপার জোর করে ভাড়া আদায় করে সেখানেও ভাবি দু-পাঁচ টাকাই তো। প্রতিবাদ করি না। এই দেখুন না ২৫ টাকার পেঁয়াজ আর ২৫০/২০০ টাকা অথচ নীরবে কিনে বাড়ি ফিরছি। হয়তো গৃহকর্মীকে বলছি ব্যবহার কমাও। প্রয়োজনে পেঁয়াজ খাবো না তবুও প্রতিবাদ করবো না। অবশ্য সেটাও এক ধরনের প্রতিবাদ কিন্তু তা আমরা করি না। বরং দাঁতে দাঁত আর ঠোঁটে ঠোঁট চেপে সয়ে যাই সব।

সাভারের অবুঝ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর প্রহর গুনছে। অথচ বাসার ডাইনিং টেবিলে নিজের পাঁচ বছরের মেয়েটাকে হাতে তুলে খাওয়াচ্ছি। একবারও কি ভেবেছি সে নিরাপদ কি না। সে ধর্ষণের শিকার হবে কি না! বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে অচেতন করে ধর্ষণ। যদিও এ রহস্য আমরা এখনো জানি না। হয়তো সে ধর্ষক জানোয়ারটা ধরা পড়লে জানা যাবে রহস্য। কিন্তু সে ধরা পড়বে তো? নাকি সে অপ্রতিরোধ্য?

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী