দাঙ্গা রোধে হবিগঞ্জ পুলিশের সাফল্য

প্রকাশ | ০৬ জানুয়ারি ২০২০, ১৭:৪৭

পাবেল খান চৌধুরী, হবিগঞ্জ

হবিগঞ্জে বছরজুড়েই আলোচিত হয়েছে বেশকিছু ডাকাতির ঘটনা। পুলিশ কর্মকর্তার গাড়িও বাদ যায়নি ডাকাতদের হাত থেকে। ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা গেছে দুই ডাকাত। গ্রেপ্তার হয়েছে শতাধিক। একটু প্রচেষ্টার ফলে গত এক থেকে দেড় বছরে মামলার সংখ্যা কমেছে ছয় শতাধিক। কমেছে পারিবারিক বিরোধ। নিষ্পত্তি হয়েছে চার শতাধিক জমিসংক্রান্ত বিরোধ। স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব নিষ্পত্তি হয়েছে ২২০টি। মাদক নিয়ন্ত্রণ হয়েছে অন্যান্য বছরের দ্বিগুণ।

তবে গত বছর জেলাজুড়ে আলোচিত হয়েছে পুলিশের বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ও দাঙ্গা-সন্ত্রাস রোধের ওপর প্রচারাভিযান। ফলে মামলার সংখ্যা কমে এসেছে। তবে এর সঙ্গে আলোচনার শীর্ষে স্থান করে নিয়েছিল খোয়াই নদীর ওপর নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম। জেলা পুলিশের পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যে জেলায় প্রায় প্রতিদিন কোথাও না কোথাও গ্রাম্য-দাঙ্গা হতো, স্থানীয় বা জাতীয় পত্রিকা খুললেই চোখে পড়ত হবিগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার বা তুচ্ছ বিষয় নিয়ে সংঘর্ষে আহত-নিহতের সংবাদ। মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস, মাইক্রো থামিয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতি বা ছিনতাই হতো প্রায়ই। তবে গত এক-দেড় বছর এমন সংবাদ খুব একটা চোখে পড়েনি।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, শুধু পুলিশ একা নয়, জেলার জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং সার্কেল) শেখ মো. সেলিম বলেন, আমি যোগ দেয়ার চার মাসে ৩০-৪০টি বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি করেছি। যার সিংহভাগই ছিল জল-মহাল, জমি-জমা, স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব এবং টাকা পয়সা পাওনা নিয়ে। যে কয়টি অভিযোগ আমার কার্যালয়ে এসেছে প্রতিটি বিষয়ে পুলিশ সুপারের পরামর্শ ও নির্দেশ মতে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও ভুক্তভোগী উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেছি। বর্তমান ওইসব বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। 

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বলেন, আমি যোগদানের পর প্রথম লক্ষ্যই ছিল এ জেলার গ্রাম্য-দাঙ্গা রোধ করতে হবে। তাই প্রথমে টার্গেটে নিয়েছি শিক্ষার্থীদের। তাদেরকে মোটিভেট করতে পারলে সব ধরনের অপরাধ প্রতিরোধের ক্ষেত্রেই ভালো ফল পাওয়া সম্ভব। তারা যদি বাবা, চাচা, ভাইকে বলে তোমরা দাঙ্গায় গিয়ে আহত-নিহত হলে আমার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে। আমাদের পরিবারের কী হবে? এসব কথার প্রভাব অনেক বেশি পড়বে। তাছাড়া অপরাধের কুফল সম্পর্কে জানা থাকার কারণে তারাও বড় হয়ে এসব অপরাধ থেকে বিরত থাকবে।

উচ্ছেদের বিষয়ে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান জানান, উচ্ছেদ কার্যক্রম একটি চলমান প্রক্রিয়া। হবিগঞ্জকে একটি পরিচ্ছন্ন জেলায় রূপান্তরিত করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। কিছু অবৈধ দখলদার আদালতে মামলা দিয়ে জমি দখলে রেখেছেন। মামলা নিষ্পত্তি হলেই সেগুলো উচ্ছেদ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/৬জানুয়ারি/কেএম)