শিক্ষার্থীরা যখন দিনমজুর

প্রকাশ | ০৮ জানুয়ারি ২০২০, ১৫:২৬ | আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২০, ১৬:১৭

বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

পেঁয়াজের কৃষিপ্রধান অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি আছে পাবনার বেড়া-সাঁথিয়া উপজেলার। দুই উপজেলায় বেশির ভাগ ফসলি জমিতে হালি পেঁয়াজের চারা রোপণ শুরু করেছেন কৃষকরা। এখানকার প্রধান ফসল হিসেবে কৃষকরা পেঁয়াজ চাষকে বেছে নিয়েছেন। তারা পেঁয়াজ রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। রোপণের কাজ চলবে পুরো জানুয়ারি মাস।
গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার প্রতিটি জমিতে পেঁয়াজের চারা রোপণ করতে দিনমজুর হিসেবে কাজ করছেন  বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে দুই উপজেলায় ২১ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে হালি পেঁয়াজ রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
পেঁয়াজের চারা রোপণ করতে আসা বেড়া উপজেলার বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আলিম বলেন, জেএসসি পরীক্ষা দিয়ে নবম শ্রেণিতে উঠেছি। জানুয়ারি মাসে ক্লাসে ছাত্রছাত্রী কম হয়, তাই কিছু টাকা উপার্জন করে সংসারে সচ্ছলতা আনার জন্য এ কাজ করছি।
সাঁথিয়ার পুন্ডুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আজাদুল বলেন, আমি পিএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করে পুন্ডুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছি। ক্লাসে এখন ঠিকমত যাচ্ছে না কেউ। স্কুলের ড্রেস, জুতা, গাইড কেনার জন্য কয়েক দিন কাজ করছি।
বেড়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সিপন বলেন, গত বছর  পেঁয়াজ রোপণের মৌসুমে ১০ হাজার টাকা রোজগার করেছিলাম। এবার ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা রোজগার করতে চাচ্ছি। এই টাকা দিয়ে এবারে একটি এনড্রয়েড মোবাইল ফোন ও জামা-কাপড় কিনব।
পরিশ্রমের বিষয়ে সবাই জানান, সকালে কুয়াশার মধ্যে পেঁয়াজের চারা তুলতে কষ্ট হয়। তবে গল্পে গল্পে কখন যে দিন চলে যায় টেরই পাই না।
জানা গেছে, প্রতি বিঘা জমিতে এই পেঁয়াজের চারা রোপণ করতে ১৩ থেকে ১৪ জন দিনমজুর লাগে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই শিক্ষার্থী কাজ করছে। প্রতি বিঘাতে খরচ হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। তবে গত বছরের থেকে এ বছর ৫-৭ হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে ও পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরাও পেঁয়াজ বেশি রোপণ করছে। পেঁয়াজ তিন মাসের ফসল, দামও বেশি, তাই পেঁয়াজ রোপণে আগ্রহী অনেক কৃষক।
বেড়া উপজেলার বঙ্গবন্ধু আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানিক হোসেন বলেন, গ্রামাঞ্চলের সব ছাত্রই কৃষক পরিবারের। তাই পেঁয়াজ লাগানোর মৌসুমে সব স্কুল-কলেজেই ছাত্রদের উপস্থিতি একেবারেই কম হয়।

(ঢাকাটাইমস/০৮জানুয়ারি/পিএল/এলএ)