মজনু কোনো ভিনগ্রহের প্রাণী নয়

মনদীপ ঘরাই
| আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ১০:৫৬ | প্রকাশিত : ০৮ জানুয়ারি ২০২০, ২১:৪৪
মনদীপ ঘরাই

এক একটি ধর্ষণ মানেই বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে ওঠা কষ্ট, আক্রান্ত অচেনা নারীটির জন্য অন্তর থেকে বের হওয়া দীর্ঘশ্বাস। আমি জানি, এমনি করে কিংবা এর চেয়েও গভীর অনুভূতি তৈরি হয় অনেকের মনে।

এত এত ইতিবাচক অনুভূতি আর ধর্ষণের প্রতি শতভাগ ঘৃণাতেও কাজ হচ্ছে কই? শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধা ধর্ষণের ঘটনা সামনে আসছে একের পর এক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী ধর্ষণের দায়ে আজ আটক হয়েছে মজনু নামের একজন ‘না মানুষ’।

র‍্যাবের ব্রিফিং থেকে জানা যায়, এবারের জঘন্যতম কাজটি তার প্রথম নয়। নেই কোনো অনুশোচনাও। 'সিরিয়াল রেপিস্ট' এই পশুটির লক্ষ্য ছিল ভিক্ষুক আর প্রতিবন্ধী নারীও। চিন্তার জগতটা এলোমেলো লাগে।

সম্পূর্ণ মানষিক বিকারগ্রস্ত এসব মানুষ কি তাহলে এলিয়েন? ভিনগ্রহ থেকে এসেছে?

যদি না-ই এসে থাকে তাহলে সমাজের মধ্যে এই নরপশুগুলোকে পুষছি কেন?

সত্যি বলতে কি, জ্ঞাতসারে সমাজ এদেরকে পোষে না। এদের বিকারগুলো সমাজের সামনে এত সহজে আসে না। মুখোশ উন্মোচিত হয় জঘন্য ঘটনার পরে।

যেকোনো পরিবারের খুব কাছের সদস্যের শিশু ধর্ষক হয়ে ওঠার হিসাব যেমন মেলে না, তেমনি মেলে না মজনুর মস্তিষ্কের ভেতরকার বিকারের ব্যাখা।

সবচেয়ে ভয়ের কথা, সমস্যাটা বৈশ্বিক। আজ যখন দেশের একটি ধর্ষণের ঘটনার আলাপ করছি, ঠিক পাশের দেশেই আগামী ২২ তারিখ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে দিল্লির নির্ভয়া কেইসের আসামিদের।

এই বিকার কি শুধুই মজনু কিংবা নির্ভয়া কেইসের আসামিদের মতো নিম্নবিত্তের মানুষের?

উত্তরটা অপ্রিয়, তবু বলতে হবে; না। সমাজের কোনো অংশই এমন বিকারের কুপ্রভাব থেকে মুক্ত না। ডার্ক ওয়েব, অবাধ নীল দুনিয়া আর সোশ্যাল মিডিয়ার কিছু ক্ষতিকর দিক পরিবার-বিচ্ছিন্ন, অবসাদগ্রস্ত এমনকি বিকারগ্রস্ত করে তুলছে কিশোর কিংবা যুবাদের।

কখনও খোঁজ রেখেছেন, বহুতল ভবনের লিফটে পাঁচ-সাতজন পুরুষের সাথে একা একটা মেয়ে কতটা অনিরাপদ বোধ করে? রাত করে একাকী রিকশা, সিএনজি কিংবা বাসে কতটা আতঙ্কে কাটে আমার আপনার মা-বোনদের?

এবার নিশ্চয়ই বলবেন, ঠেকাবার উপায় কী? আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক বলে, সচেতনতা কিংবা মোটিভেশন নয়, ধর্ষণ রুখতে সবচেয়ে উপায় দ্রুততম সময়ে সর্বোচ্চ আইনানুগ শাস্তি।

একটা বিষয় তো পরিষ্কার, আগুন পোড়াতে জানে দেখে ভুলেও কোনো পাগল আগুনের সংস্পর্শে আসে না।

ধর্ষণের চিন্তাকেও শাস্তির দৃষ্টান্তের আগুনে পোড়াতে হবে। না হলে এমন দহনে থেকে মুক্তি মিলবে না সহজে। দ্রুততম সময়ে আসামি গ্রেপ্তারের জন্য র‍্যাবকে সাধুবাদ জানাই। তবে, আমাদের বোনটির সম্ভ্রম হারানোর বুকচেড়া কষ্টটা মিটবে না কিছুতেই।

লেখক: সিনিয়র সহকারী সচিব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

সংবাদটি শেয়ার করুন

নির্বাচিত খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাচিত খবর এর সর্বশেষ

ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করছেন মাদ্রাসায় পড়ুয়া মাজিদুল হক

মুন্সীগঞ্জে ১০ কোটি টাকার পানি শোধনাগার কাজেই আসছে না

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে সৌর বিদ্যুৎ দিচ্ছে ‘সোলার ইলেক্ট্রো’

শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণাসহ ৯ দাবি বাস্তবায়ন চায় শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ

শিশু নির্যাতন: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুলিং র‌্যাগিং প্রতিরোধ নীতিমালা বাস্তবায়নের আহ্বান

শহরের ব্যস্তজীবনে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ড. রাশেদা রওনকের আলোচনায় আমন্ত্রণ

২৪ ঘণ্টায় ১৩ জনের করোনা শনাক্ত

২৪ ঘণ্টায় ৯ জনের করোনা শনাক্ত

২৪ ঘণ্টায় ১৩ জনের করোনা শনাক্ত

দা‌ড়ি-গোঁফ গজাচ্ছে জান্না‌তির মুখে, প‌রিবর্তন হয়েছে কণ্ঠস্বর

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :