মুজিবর্ষের ক্ষণগণনা শুরু আজ

প্রকাশ | ১০ জানুয়ারি ২০২০, ০৮:৩৫ | আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২০, ১৫:৫১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাকে পাকিস্তান নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলেন। তার ফিরে আসার দিনটিকে বেছে নেয়া হয়েছে মুজিব শতবার্ষিকীর ক্ষণগণনার দিন হিসাবে।

২৯০ দিন পাকিস্তানের কারাগারে প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর প্রহর গুনতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তান কারগার থেকে মুক্তি পান। এরপর বঙ্গবন্ধু ৯ জানুয়ারি লন্ডনের স্থানীয় সময় ৮টা ৩০ মিনিটে হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছান। এরপর ১০ জানুয়ারি ব্রিটিশ রাজকীয় কমেট বিমানে দিল্লিতে সাময়িক যাত্রা বিরতি দিয়ে দুপুর দেড়টার পরে তিনি তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমান বিন্দরে নামেন। সেদিন পুরাতন বিমানবন্দর ছিল লোকে লোকারন্য। বঙ্গবন্ধুকে দেখতে লাখ লাখ মানুষ হাজির হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দর থেকে নেমে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান বর্তমানে যা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় যোগ দিয়েছিলেন।

জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনকে স্মরণীয় করতে পুরাতন বিমানবন্দরে জাঁকজমক আয়োজন করা হবে। ১৯৭২ সালের দুপুর দেড়টার পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বহনকারী ব্রিটিশ কমেট বিমান তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমান বন্দরে অবতরণ করে। আজ যেহেতু শুক্রবার। আর বিশ্ব ইজতেমার প্রথমদিন তাই ক্ষণগণনার অনুষ্ঠান বিকাল তিনটার পর থেকে করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিকাল সাড়ে চারটার দিকে মুজিববর্ষের লোগো উন্মোচন করবেন। এরপর তিনি ভাষণ দিবেন। বিকাল পাঁচটা নাগাদ প্রধানমন্ত্রী ক্ষণগণনার ডিজিটাল ঘড়ির উদ্বোধন করবেন। একই সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জাতীয় সংসদের সামনে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত ক্ষণগণনার ডিজিটাল ঘড়ি চালু হয়ে যাবে। সারা দেশের ২৮টি বড় শহর, ৫৩টি জেলা, টুঙ্গিপাড়া ও মুজিবনগরের স্থাপিত ডিজিটাল ঘড়ি চালু করার হবে একই সঙ্গে।

জানা গেছে, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারির বঙ্গবন্ধু পুরতান বিমান বন্দরের যে জায়গায় নেমেছিলেন সেখানে প্রতীকী আবহ তৈরি করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এ আয়োজন বাস্তবায়নে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি ও স্বশস্ত্র বাহিনী কাজ করছে। সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হতে পারে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতীকী উপস্থাপনা। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এটি বাস্তবায়ন করবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারির মতোই একটি এয়ারক্রাফট থেকে নেমে আসবেন বঙ্গবন্ধু। এ সময় তোপধ্বনি করা হবে। সেই সঙ্গে প্রতীকী অভ্যর্থনা ও গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। লেজার লাইটিংএর মাধ্যমে এ ছবিটাকে জীবন্ত করে তোলার সব চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাস্তবায়ন কমিটি। একই সময় ডিজিটাল ঘড়ি স্থাপন ও এলইডি স্ক্রিনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবন-সংগ্রাম তুলে ধরা হবে। থাকবে বিভিন্ন অডিও ভিজ্যুয়াল পরিবেশনা।

বাস্তবায়ন কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭২ সালের সেদিন বঙ্গবন্ধুকে বরণ করার জন্য তেজগাঁও পুরাতন বিমান বন্দর ছিলো লোকারন্য কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় ততলোককে স্থান দেয়া সম্ভব হবে না। তাই পুরাতন বিমানবন্দরে আজকের অনুষ্ঠানে ২ হাজার আমন্ত্রিত অতিথি ও ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এর বাহিরে সারাদেশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ডিজিটাল স্ক্রিনের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করার কথা রয়েছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, পাকিস্তান কারাগার থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু যে দিন দেশে ফিরেছিলেন সেই ঐতিহাসিক দিনকে মুজিব বর্ষের ক্ষণ গণনার দিন হিসাবে বেছে নেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ফিরে আসার পরিবেশটা আমরা পরিপূর্ণভাবে তুলে ধরতে পারবো না। কিন্তু একটা প্রতিকী, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে আমাদের যে অপেক্ষা এবং বঙ্গবন্ধুর যে ফিরে আসার সমন্বয় করে আবহ তৈরি করে আমরা চাচ্ছি জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণ গণনার কাজটা শুরু করতে।

তিনি বলেন, আমার মনেহয় আমরা এরপর আমরা অপেক্ষা করবো প্রতি মুর্হূত। সেটা ১৭ই মার্চ জিরো আওয়ারে শেষ হবে।

এদিকে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগ। দলটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সকাল সাড়ে ৬টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও সারাদেশের সকল কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধ ভবনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন। এরপর বিকাল ৩টায় জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন ক্ষণ গণনা কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ।

ঢাকাটাইমস/১০জানুয়ারি/এমআর