অভিজাত এলাকায় জাল টাকার রমরমা কারবার

প্রকাশ | ১০ জানুয়ারি ২০২০, ১৫:৫৬ | আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২০, ১৬:০৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

২০১৪ সালে ধানমন্ডিতে দুই রুমের বাসা ভাড়া নেন সাইফুল ইসলাম। স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে থাকতেন সেখানে। রাত হলেই তৈরি করতেন কোটি কোটি টাকার জাল নোট। ছাড়তেন বাজারেও। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন জাল টাকার কারবারি আসতো তার বাসায়। দীর্ঘদিন ধানমন্ডিতে থাকায় মহল্লায় সুনামও ছিল বেশ। বাসার নিচের দোকানিদের সঙ্গে সব সময় হাসিমুখে কথা বলতেন, ভালো ব্যবহার করতেন। কিন্তু কখনোই কেউ ভাবেনি এই মানুষটি রাজধানীর অন্যতম জাল টাকা তৈরির কারিগর।

শুক্রবার ভোরে রাজধানীর ধানমন্ডির ৭/ই’র ১০ নম্বর বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। এসময় সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাসা তল্লাশি ওয়্যারড্রপ এবং খাটের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয় কয়েক কোটি টাকার জাল নোট। যার মধ্যে সব ৫০০ ও ১০০০ হাজার টাকার নোট। এসময় টাকা তৈরির সরঞ্জাম হিসেবে কাগজ, প্রিন্টার, টোনার, কেমিকেল, ডায়াসসহ টাকা তৈরিতে যা লাগে সব পাওয়া যায়।

ভবনটির তৃতীয় তলার যে ফ্ল্যাটে সাইফুল ভাড়া থাকতেন তার পাশের ফ্লাটে থাকেন বাড়ির মালিক। অভিযানের পর তিনি হতচকিয়ে যান। বলেন- ‘পাশের ফ্ল্যাটে এমন কাণ্ড; কিন্তু এতো দিন ধরে টেরই পেলাম না।’

সাইফুলের বাসার নিচে একটি হোটেলে কথা হয় রোজিনা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর ধরেই তো তাকে চিনি। আমাদের হোটেলে প্রায়ই তিনি নাস্তা করতেন। কোনোদিন তো জাল টাকা তার কাছ থেকে পাইনি। সব সময় হাসি মুখে আমাদের সঙ্গে কথা বলতেন। বিভিন্ন গল্প করতেন।’

গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে রাজধানীর কদমতলী থেকে শাহ আলম নামের একজনকে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় এক লাখ ৯০ হাজার টাকা। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পশ্চিম ধানমন্ডির সাইফুলের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি কাইমুজ্জামান খান। তিনি বলেন, ‘বাড়ি ভাড়া ফরম দেখে আমরা জানতে পেরেছি সাইফুল এই বাসাটি ভাড়া নিয়েছিলেন ২০১৪ সালে। ধানমন্ডির মতো অভিজাত এলাকা তারা নিরাপদ মনে করেছে। ভেবেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব এলাকা টার্গেট করবে না। তাই এখানে বাসা ভাড়া নিয়ে এই ধরনের কার্যক্রম চালাচ্ছিল। কিন্তু আমাদের চোখ ফাঁকি দেওয়ার মতো ক্যাপাসিটি তাদের আছে বলে মনে করি না।’

(ঢাকাটাইমস/১০জানুয়ারি/এসএস/জেবি)