দুর্গম চরেও ঠাঁই নেই ভূমিহীনদের

আব্বাছ হোসেন, লক্ষ্মীপুর
 | প্রকাশিত : ১১ জানুয়ারি ২০২০, ১৮:৫১

লক্ষ্মীপুরে দুর্গম চরেও পরিবার-পরিজন নিয়ে ঠাঁই হচ্ছে না ভূমিহীনদের। আশ্রয়ের খোঁজে দ্বারে-দ্বারে ঘুরছেন ভিটামাটিহারা হাজারো মানুষ। ভাঙা-গড়ার মধ্যেই জেগে উঠা এসব চরাঞ্চলে ভূমিহীনদের আশ্রয় দেয়ার কথা থাকলেও পুনর্বাসনের নামে ভূমি চলে যাচ্ছে প্রভাবশালীদের দখলে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকারের খাস জমি বছরের পর বছর অবৈধভাবে দখল করে প্রতি একর ভূমি ১০-১৫ হাজার টাকায় (লাগদি) ভূমিহীনদের কাছ থেকে আদায় করছেন রায়পুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেনসহ অনেকেই।

সরেজমিনে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরবংশীর কানিবগার চর এটি। এ চরে বসবাস করেন প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। তাদের একজন ভূমিহীন খাদিজা বেগম। নদীভাঙার কারণে ৪০ বছরের জীবনে ঠিকানা পরিবর্তন করতে হয়েছে তিনবার। হারিয়েছেন বাপ-দাদার ভিটামাটি। সন্তানদের নিয়ে আশ্রয়ের খোঁজে দ্বারে-দ্বারে ঘুরছেন বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু এ দীর্ঘ সংগ্রামে ভূমি অফিস থেকে পাননি এক টুকরো খাস জমি বন্দোবস্ত।

তার অভিযোগ, রায়পুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেনের কাছ থেকে তিন একর জমি নিয়ে চাষাবাদ ও বসবাস করছেন। বিনিময়ে প্রতি একর জমির খাজনা বাবদ বছরে তাকে দিতে হচ্ছে ১২-১৫ হাজার টাকা। অথচ এ সম্পত্তি মেঘনার জেগে উঠা চর। এ খাস সম্পত্তি দখল করে নেন তিনি। প্রতি বছর খাজনা দিতে দেরি হলে উচ্ছেদের হুমকি দেয়া হয়।

একই অভিযোগ করেন ভূমিহীন আবুল কালাম, লোকমান ব্যাপারী, আজগর মাঝি, কাদের, মহরম আলী সর্দ্দার, হাসান ও বাচ্ছুসহ শতাধিক মানুষ। তাদের অভিযোগ, রায়পুর উপজেলা পরিষদের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেনের রয়েছে চরে একদল লাটিয়াল বাহিনী।

গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর এসব চরে পরিদর্শনে যান জেলা প্রশাসক আঞ্জন চন্দ্র পালসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসক চরের বাসিন্দা ও ভূমিহীনদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। এ সময় এসব অসহায় মানুষের মুখে উঠে এসেছে আলতাফ হোসেনের বিভিন্ন জবর দখলের চিত্র।

স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আলী আহমদ খাস জমি প্রভাবশালীদের দখলে থাকার কথা স্বীকার করে বলছেন, সরকারের এসব সম্পত্তি উচ্ছেদ করতে গেলে প্রভাবশালীরা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তা বন্ধ করে দেয়। তিনটি চরে প্রায় ২৭শ একর সরকারি খাস সম্পত্তি আলতাফ হোসেনসহ অন্যরা দখল করে নেয়। নিজের অসহায়ত্বের কথা জানান তিনি।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন বলেন, প্রতিপক্ষরা তাকে ফাঁসাতে এসব কথা রটাচ্ছেন। এসব সম্পত্তি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। এতে তার করার কিছু নেই।

জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল বলছেন, ইতোমধ্যে চরগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। চরাঞ্চলে সরকারের যে খাস সম্পত্তি প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে, তার একটি তালিকা তৈরির কাজ চলছে। তালিকা তৈরি শেষে দখলকৃত ভূমি উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করা হবে। যতবড় প্রভাবশালীই হোক, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

(ঢাকাটাইমস/১০জানুয়ারি/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :