আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ: প্রাণ গেল আরো একজনের
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার উত্তর হোসেনপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জের ধরে সংঘর্ষে জুলফিকার খালাসী (৫০) নামে আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার তিনি মারা যান।
নিহত জুলফিকার একই এলাকার রজব আলী খালাসীর ছেলে। এ সংঘর্ষে মারাত্মক আহত বাবুল মুন্সী শুক্রবার দুপুরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি একই গ্রামের মজিদ মুন্সীর ছেলে।
একই ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আরেকজন কহিনুর খালাসীর (৪৫) অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে আইসিউতে রাখা হয়েছে।
এদিকে, শনিবার সকালে খুনিদের ফাঁসির দাবিতে এলাকার নারী, পুরুষ ও শিশুরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। গ্রেপ্তার এড়াতে হামলাকারীরা নিজেদের ঘরে তালা দিয়ে পালিয়েছে। এ সংঘর্ষের সঙ্গে জড়িত থাকা সন্দেহে পুলিশ এ পর্যন্ত ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, শালিস ও এলাকার নেতৃত্ব নিয়ে উপজেলার হরিদাসদি মহেন্দ্রদি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দেলোয়ার মুন্সীর সঙ্গে একই এলাকার জামাল খালাসীর বিরোধ চলে আসছিল। তাদের মধ্যে গত এক মাসের ব্যবধানে তিন থেকে চারটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে দেলোয়ার মুন্সীর পক্ষের কয়েক যুবক মিলে এলাকার জঙ্গল পরিষ্কার করার নাম করে দা, কাচি ও ছ্যানি নিয়ে বের হন। কিন্তু এ ঘটনা দেখে প্রতিপক্ষ জামাল খালাসীর লোকজন নিজেদের ওপর হামলার আশঙ্কা ভেবে তাদের পরিছন্নতা কাজে বাধা দেন এবং বাকবিতণ্ডা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে শুক্রবার ফজরের নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেলোয়ার মুন্সীর লোকজন বাবুল খালাসী ওপর অতর্কিত হামলা করে। তাকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে ফেলে রেখে যায় হামলাকারীরা। পরে মসজিদ পাশ^বর্তী প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা চালায় এবং সেখানেও জুলফিকার খালাসী (৫৫), কহিনুর খালাসী (৪৫) ও সজিব মুন্সীসহ ছয়-সাতজনকে কুপিয়ে জখম করে। এছাড়াও লাঠিসোটার আঘাতে আরো প্রায় ১৫ জন আহত হন।
নিহত জুলফিকারের স্বজনরা জানান, দুই খুনের ঘটনার পর এলাকায় আরো অশান্ত ও আমাদের ফাঁসানোর জন্য প্রভাবশালী শাহিন চৌধুরী, চুন্নু চেয়ারম্যান, আয়নালসহ আরো কয়েকজন বিভিন্ন অপতৎপরতা চালাচ্ছেন। তারা কোনো অঘটন ঘটিয়ে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়ার পাঁয়তারা করছেন।
এ বিষয়ে হরিদাসদি মহেন্দ্রদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, দেলোয়ার ও জামাল দুজনই আওয়ামী লীগ করেন। তারা দুজনই ১ নম্বর ওয়ার্ডের নেতৃত্ব চান। তাদের মধ্যে নেতৃত্ব নিয়ে দীর্ঘদিনের কলহ রয়েছে। এ কলহের কারণে সাধারণ দু’জন মানুষ মারা গেল।
এ ব্যাপারে রাজৈর থানার ওসি খোন্দকার সওকত জাহান জানান, ওই এলাকার শান্তি রক্ষায় পুলিশ মোতায়েন আছে।
(ঢাকাটাইমস/১১জানুয়ারি/কেএম/এলএ)