ভোলায় কোস্টগার্ড-জেলেদের পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন
ভোলায় সাধারণ জেলেদের দেশীয় অস্ত্রসহ জলদস্যু হিসেবে আটকের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলেরা। তারা নদীতে টহলরত কোস্টেগার্ডের বিরুদ্ধে সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের রামদাশ পুর গ্রামের আব্দুল গফুর ও কামাল হোসেন নামে দুই জেলে ও বাহাদুর বেপারী নামের এক মৎস্য ব্যবসায়ীকে রাম দা দিয়ে ডাকাত হিসেবে মামলা দিয়ে চালান দেয়ার অভিযোগ করেছেন। রবিবার দুপুরে ভোলা শহরের একটি পত্রিকা অফিসে রাজাপুর ইউনিয়নের প্রায় ১০-১৫ জন জেলে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জেলেরা বলেন, প্রতিদিনের মতো শনিবার সারাদিন তারা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের বঙ্গেরচর এলাকার মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে রাতে বঙ্গেরচর মাছ ঘাটের কাছে একটি খালে মাছ, জাল ও নৌকা নিয়ে রাত্রি যাপন করে। এ সময় তাদের নৌকার কাঁথা-কাপড় ভিজা থাকায় নৌকার জেলে আব্দুল গফুর ও কামাল রাঢ়ী নামের দুই জেলে ওই ঘাটের মিজান খানের আড়তে গিয়ে ঘুমান। রাত দেড়টার দিকে কোস্টগার্ডের একটি ট্রলার মাহিদুল মাঝির নৌকার কাছে গিয়ে তাকে ঘুম থেকে ডেকে ট্রলারসহ নিয়ে যায়। এ সময় কোস্টগার্ড তাকে রাত ৯টার দিকে ১০০টি গুলির বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি শোনেননি বলে জানান। পরে কোস্টগার্ড তাকে ট্রলারে রেখে মাছ ঘাটের দিকে যায়। এবং সেখান থেকে জেলে আব্দুল গফুর ও কামাল রাঢ়ী এবং ঘাটে থাকা মাছ ব্যবসায়ী বাহাদুর বেপারীকে ধরে নিয়ে আসে। এবং তারা মাহিদুল মাঝিকে ছেড়ে দিয়ে ওই তিনজনকে নিয়ে চলে আসে। এবং তাদেরকে সকালে ৯টি রামদাসহ জলদস্যু হিসেবে ভোলা থানায় চালান দেয়।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জেলেরা এ ঘটনার তদন্তপূর্বক নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেন। ভবিষ্যতে যাতে করে নদীতে জলদস্যু নিধনের নামে সাধারণ জেলেদের হয়রানি করা না হয় সে জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান জেলেরা।
অন্যদিকে রবিবার সকালে ভোলার খেয়াঘাট রোডে অবস্থিত কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে কোস্টগার্ড।
দক্ষিণ জোনের অপারেশন অফিসার লে. ওয়াসিম আকিল জাকির জানান, শনিবার দিবাগত রাতে রাজাপুরের বঙ্গের চর এলাকায় একটি মাছের আড়তে দেশী বন্দুক ও অস্ত্রসহ একই সময় দুই ডাকাত দল ডাকাতির করতে আসে। এ সময় ডাকাতদের দুই গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্রে করে গোলাগুলি ও সংর্ঘষ হয়। ওই সময় স্থানীয়রা কোস্টগার্ডকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ৯টি রামদাসহ দুজনকে আটক করে। অন্য ডাকাতরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের আটক করা যায়নি।
এ ঘটনায় রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান খান জানান, তার বঙ্গের চরের ঘাটটি গত অক্টোবর মাস থেকে বন্ধ। ওই ঘাটে কোনো মাছ বেচা-বিক্রি হয় না। আর সেখানে রাতে কোনো ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি।
তিনি আরো জানান, যাদেরকে কোস্টগার্ড আটক করেছে তারা তার ইউনিয়নের সাধারণ জেলে। তারা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। তারা কেউ কোনো দিন ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। তাদেরকে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করে ডাকাত বলে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/১২জানুয়ারি/কেএম)