চাঁদপুরে অর্ধশতাধিক অবৈধ ইটভাটা, হুমকিতে জনস্বাস্থ্য

শওকত আলী, চাঁদপুর
 | প্রকাশিত : ১৬ জানুয়ারি ২০২০, ০৮:২১

চাঁদপুরে যত্রতত্রভাবে গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক অবৈধ ইটভাটা। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে গড়ে ওঠা এসব ইটভাটার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। বিশেষ করে ইটভাটাগুলোতে কাঠ, টায়ার ও মাত্রাতিরিক্ত সালফারযুক্ত পাথুরে কয়লা ব্যবহারের ফলে পরিবেশও রয়েছে হুমকির মুখে। শুধু তা-ই নয়, এসব অবৈধ ইটভাটার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামীণ জনপদ ও ফসলি জমিও।

চাঁদপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুরের আট উপজেলায় ১২৫টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে হালনাগাদ ছাড়পত্র রয়েছে মাত্র ৪০টি ইটভাটার। বন্ধ রয়েছে ২৫টি। বাকি ৬০টি ইটভাটা নিয়মনীতি না মেনেই অবৈধভাবে ইট উৎপাদন অব্যহত রেখেছে। তবে এর মধ্যে ১০/১৫টি ইটভাটার ছাড়পত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এ এইচ এম রাশেদ।

সূত্র মতে, এসব অবৈধ ইটভাটার বেশিরভাগই ১২০ ফুট উচ্চতার চিমনিবিশিষ্ট সনাতন ইটভাটা। আবার কিছু ইটভাটা রয়েছে নিষিদ্ধ এলাকায় যেমন, পৌরসভা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিংবা রেলাইনের পাশে অবস্থিত। এসব ভাটা পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে কাঠ, টায়ার, পোশাক কারখানার বর্জ্য, ভূষি জ্বালিয়ে তা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত করছে। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমনকি ইটভাটার ধোঁয়ায় জমির ফসল ও ফলদ গাছে ফল ধরাও প্রতিনিয়ত হ্রাস পাচ্ছে।

এদিকে ইটভাটার কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর চলাচলে গ্রামীণ জনপদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিনিয়ত ট্রাক্টরের যাতায়াতে ভেঙে পড়ছে বহু সেতু-কালভার্ট। এতে নিত্য-নৈমিত্তিক কাজে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।

এছাড়াও চাঁদপুরে কিছু ইটভাটায় মাত্রাতিরিক্ত সালফারযুক্ত পাথুরে কয়লা ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আর আমদানি করা এসব কয়লা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব কয়লা ব্যবহারের ফলে ইটভাটা সংলগ্ন এলাকাগুলোতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগেও আক্রান্ত হয়ে শত-শত মানুষ ভুগছে।

তবে সদর উপজেলার শাহতলী এলাকার বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম ও কাউছার আলম অভিযোগ করে বলেন, সংশ্লিষ্টদের নিয়মিত মনিটরিং না থাকায় ওইসব কয়লা যত্রতত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।

চাঁদপুর পরিবেশ আন্দোলনের নেতা নাছির চোকদার বলেন, ওইসব ইটভাটার ধোঁয়া বাতাসে মিশলে মানুষ শ্বাসকষ্টসহ মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়। তাই অচিরেই এগুলো বন্ধ করা দরকার।

এ প্রসঙ্গে চাঁদপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এএইচএম রাশেদ বলেন, কয়লায় সালফারের পরিমাণ মাপার যন্ত্র আমাদের নেই। তাই সেটা যাচাই করা সম্ভব নয়। তবে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটার বিরুদ্ধে আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান চালাচ্ছি। গত তিন-চার দিনে পাঁচটি ইটভাটাকে জরিমানা করে সর্তক করে দেয়া হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৬জানুয়ারি/কেএম/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :