ঢাকা উত্তর সিটি

নির্বাচনে থাকলেও প্রচারে নেই

প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০২০, ১০:২৯ | আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২০, ১৩:০১

কাজী রফিক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে উত্তরে ভোটের মাঠে থাকা চার মেয়র প্রার্থীই আলোচনায় নেই। তাদের প্রচারণা গণমাধ্যমেও উঠে আসেনি তেমন একটা। বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির হেভিওয়েট দুই প্রার্থীর চাপে তারা অনেকটা ভোটে থেকেও যেন নেই। নৌকা আর ধানের শীষের মেয়র প্রার্থীরা প্রচারের মাঠ গরম করে রাখলেও বাকি চার প্রার্থীর উপস্থিতি তেমন চোখেই পড়ছে না। এমনকি মহানগরীর অলিগলি পাড়া-মহল্লায় তাদের পোস্টারও দেখা যায়নি।

ঢাকা উত্তর সিটিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বাদেও মেয়র পদে নির্বাচন করছেন আরও চারজন। তারা হলেন পিডিবি মনোনীত প্রার্থী শাহিন খান (বাঘ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শেখ মোহাম্মদ ফজলে বারী মাসউদ (হাতপাখা), সিপিবির আহমেদ সাজেদুল হক (কাস্তে) ও এলডিপির আনিসুর রহমান দেওয়ান (আম)।

ঢাকার দুই সিটিতে আগামী ৩০ জানুয়ারি ভোট হবে। এরই মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে প্রার্থীরা গত ছয় দিন ধরে প্রচারণাও চালাচ্ছেন। দুই সিটিতেই প্রচারে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীরাই প্রচারে এগিয়ে রয়েছেন।

বড় দুই দলের বাইরে অন্য প্রার্থীরা প্রচারের মাঠে রয়েছেন দাবি করেছেন। তবে তারা আলোচনায় না আসার পেছনে মিডিয়া কাভারেজ না পাওয়াকে দায়ী করেছেন। তাদের ভাষ্য, গণমাধ্যম বড় দুটি দলের প্রার্থীদের নিয়েই ব্যস্ত। যে কারণে অন্য মেয়র প্রার্থীরা উপেক্ষিত।

এদিকে এই প্রার্থীদের বেশিরভাগই সাধারণ মানুষের কাছে অপরিচিত। এসব প্রার্থীর ক্ষেত্রে নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নামকাওয়াস্তে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। প্রচারের ষষ্ঠ দিন পার হলেও কোথাও তাদের পোষ্টার, লিফলেট বা ব্যানার চোখে পড়েনি। এমনকি নৌকা-ধানের শীষ বাদে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী আর কোনো প্রতীকের পক্ষে মাইকিংও শোনা যাচ্ছে না।

তবে উত্তরের চার মেয়রপ্রার্থীই প্রচারে না থাকার বিষয়টি মানতে নারাজ। নির্বাচনী মাঠে নিজেদের অবস্থান সুস্পষ্ট বলেই তাদের ভাষ্য। গণসংযোগ থেকে শুরু করে সব ধরনের কার্যক্রমই তারা চালিয়ে যাচ্ছেন।

পিডিবি মনোনীত প্রার্থী শাহিন খান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘প্রতিটি এলাকায় আমার পক্ষে মাইকিং চলছে। আমি নিজে গণসংযোগ করছি। জনগণেরও সাড়া পাচ্ছি। জনগণ বড় দুটি দলের ওপরই বিরক্ত। জনগণ নতুন কাউকে চায়। তবে নির্বাচনে কি হবে, তা নিয়ে তারা (ভোটাররা) শঙ্কিত।’

উত্তরে কাস্তে প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে লড়ছেন সিপিবির আহমেদ সাজেদুল হক। নির্বাচনের মাঠে থাকলেও গণমাধ্যম উপেক্ষা করছে বলেই তার অভিযোগ।

ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘অন্য দলের প্রার্থীদের কোটি টাকার পোস্টারের বিপরীতে আমাদের লাখ টাকার পোস্টার দেখা যাবে না। সেটাই স্বাভাবিক। তবুও আমরা পোস্টার লাগাচ্ছি। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী প্রচারণা করছি। আমরা মূলত ঢাকার অবহেলিত এলাকাগুলোতে বেশি প্রচারণা চালাচ্ছি। যারা নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত আমরা তাদের কাছে যাচ্ছি। আমরা প্রেস রিলিজ পাঠাচ্ছি। কিন্তু গণমাধ্যম আসছে না।’

সাজেদুল আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুযায়ী দুপুর দুইটার আগে প্রচারণা করা যাবে না। কিন্তু অনেকেই সেটা করছে। আমাদের গণমাধ্যম সেদিকে নজর দিচ্ছে না। নির্বাচন কমিশনও নির্বিকার। এ ছাড়া বিধিমালার ১১/১ ধারায় বলা আছে, কোনো শোডাউন করা যাবে না। জনগণের ভোগান্তি সৃষ্টি করা যাবে না। কিন্তু সেটিও অনেকে মানছেন না।’

সাজেদুলের মতো মিডিয়া কাভারেজ না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী শেখ মোহাম্মদ ফজলে বারী মাসউদের। এ ছাড়া তার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।

ঢাকা টাইমসকে হাতপাখা প্রতীকের এই প্রার্থী বলেন, ‘আমরা প্রচারণা করছি। জনগণের কাছে যাচ্ছি। ভোট চাচ্ছি। আমাদের প্রচারণা চোখে পড়ছে না, কারণ আমাদের মিডিয়া কাভারেজ নেই। গণমাধ্যম আমাদের কাছে আসছে না।’

আর এরই মধ্যে উত্তর সিটির নানা প্রান্তে গণসংযোগ চালিয়েছেন জানিয়ে আম প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে থাকা কর্নেল অলির দল এলডিপির প্রার্থী আনিসুর রহমান দেওয়ান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমার পোস্টার লাগানো শুরু হয়েছে। মালিবাগ এলাকা থেকে এই কার্যক্রম শুরু করেছি। পুরো উত্তর সিটিতে ব্যাপক হারে আমরা গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছি। প্রচারণা থেমে নেই। ভোটারদের থেকেও সাড়া পাচ্ছি।’

(ঢাকাটাইমস/১৬জানুয়ারি/কারই/ডিএম)