নির্বাচনের তারিখ পেছানোর দাবিতে আমরণ অনশনে ঢাবি শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০২০, ২২:৪৫ | আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২০, ২২:৫১

ঢাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

আসন্ন ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনের তারিখ পেছানোর দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী। অনশনে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরাও সংহতি প্রকাশ করেছেন।

বৃহস্পতিবার বিকালে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই কর্মসূচি শুরু করেন তারা। রাত সাড়ে ১০ টার দিকেও তাদের সেখানে অবস্থান করতে দেখা যায়।

৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন এবং সরস্বতীপূজা। পূজার দিনে ভোটের তারিখ পড়ায় তা পেছানোর দাবি তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। সরস্বতীপূজার কারণে নির্বাচন পেছানোর জন্য হাইকোর্টে একটি রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অশোক কুমার ঘোষ। শুনানি শেষে গত মঙ্গলবার রিটটি খারিজ করে দেন বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের বেঞ্চ। আদালত বলেছেন, ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনী কার্যক্রম এখন যে অবস্থায় আছে, ভোটের তারিখ পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। তাই নির্বাচন পেছাতে যে রিট করা হয়েছে, তা সরাসরি খারিজ করা হলো। এর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সেদিন বিকালেই শাহবাগ অবরোধ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে নির্বাচন কমিশনকে ১৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে মঙ্গলবারের অবরোধ শেষ করেন শিক্ষার্থীরা। এর ভেতর নির্বাচনের তারিখ পেছানো না হলে পরদিন বুধবার ইসি ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে বুধবার ইসি ঘেরাও এর উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীরা পদযাত্রা শুরু করলে শাহবাগে বাধার সম্মুখীন হয়ে সেখানেই অবস্থান নেন। সেখান থেকেই আজকের এ আমরণ অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।   

অনশনে অংশ নেওয়া জগন্নাথ হল সংসদের ভিপি উৎপল বিশ্বাস বলেন সাংবাদিকদের বলেন, একইসঙ্গে পূজা ও নির্বাচন হতে পারে না বলে আমরা মনে করি। তাই নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের দাবিতে আমরা সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে না ফেলে এই অহিংস আন্দোলনে অংশ নিই। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চলবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো শিক্ষার্থী আমাদের সঙ্গে অনশনে বসতে পারেন।

অনশনে সংহতি প্রকাশ করতে এসে জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড মিহির লাল শাহ বলেন, যেদিন আমাদের সরস্বতী পূজা সেদিন সকালে আমরা পবিত্র হয়ে পূজা অর্চনা করি। কিন্তু এবার পঞ্চমা শুরু হচ্ছে ২৯ তারিখ রাত ১১টা থেকে।  সুতরাং রাতে তো আমরা পূজা করতে পারব না। তাই আমাদের পরদিনই পূজা করতে হবে। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যালেন্ডারে কিন্তু ৩০ তারিখই পূজার দিন উল্লেখ আছে। সরকারি ক্যালেন্ডারে কেন সেটি উল্লেখ নেই সেটিও দেখার বিষয়। 

অনশনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা ‘সরস্বতীর হাঁসে চড়ে নির্বাচন যাবে উড়ে’, ‘হে! বাংলাদেশ, এটাই তোমার অসাম্প্রদায়িকতা?’ পূজা নাকি ভোট? সংখ্যালঘুর কি ঠাঁই নাই’ এমন নানান স্লোগান দেন।

সংহতি প্রকাশ করে সংস্কৃত বিভাগের অধ্যাপক ড অসীম সরকার বলেন,  ৩০ তারিখ আমাদের শ্রী শ্রী পঞ্চমী এবং শ্রী শ্রী সরস্বতী পূজা। সেদিন সিটি নির্বাচন হওয়ায় বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ভোট ক্যাম্প হবে।  সুতরাং একই সঙ্গে পূজা এবং ভোট অসম্ভব বলে আমি মনে করি।  বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পূজায় অংশ নিতে পারবে না।  এ অবস্থায় আমি নির্বাচন কমিশনার কে অনুরোধ করবো নির্বাচনের তারিখ পুনর্বিবেচনার জন্য। 

অনশনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থী  কান্তি লাল রায় বলেন, আমরা বিশ্বাস করি আমাদের খুব বেশিক্ষণ অনশনে বসতে হবে না। যদি অনশনে বসার কারণে আমাদের কোনো শিক্ষার্থী বা সম্মানিত শিক্ষক অসুস্থতায় পড়ে তাহলে আমরা নির্বাচন কমিশনারকে বলতে চাই এটির ফল ভালো হবে না।

ঢাকাটাইমস/১৬জানুয়ারি/ইএস