ঢাকা সিটি নির্বাচন

চুপচাপ ২০ দল-ঐক্যফ্রন্ট

প্রকাশ | ১৭ জানুয়ারি ২০২০, ০৭:৫৬ | আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২০, ১৬:০২

বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস

ঢাকা সিটি নির্বাচনে প্রচারণা জমে উঠেছে। উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটিতেই বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থীরা মাঠ দাপিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। প্রচারণা শুরুর পর গত সাতদিন ধরেই সকাল থেকে রাত অবধি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন আর ভোট চাইছেন।

দলের দুই প্রার্থীর সঙ্গে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের প্রভাবশালী নেতারাও প্রচারণায় রয়েছেন। কিন্তু বিএনপি প্রার্থীদের সমর্থন দিয়ে তাদের সঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেয়া বিএনপির পুরোনো মিত্র ২০ দলের শরিক এবং ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের প্রচারণায় দেখা মিলছে না।

যদিও ঢাকা উত্তরে মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের সঙ্গে ২০ দলের শরিক লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানকে দেখা গেছে। এর বাইরে বিএনপির আর কোনো শরিক দলের নেতৃবৃন্দকে মাঠে দেখা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

তবে ২০ দলীয় জোট এবং ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের ভাষ্য, আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় তারা জোরালোভাবে প্রচারণায় নামেননি। তবে তারা খুব দ্রুত তারা প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণায় নামবেন। কিন্তু কবে নামবেন সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট করে কেউ কিছু বলতে চাননি।

বিএনপির একজন যুগ্ম মহাসচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিলেন কিন্তু মাঠে নামলেন না তাহলে লাভটা কি হলো? যদিও শরিকদের অংশগ্রহণ থাকলে খুব বেশি লাভ না হলেও এতে সৌন্দর্য বাড়ে। নেতাকর্মীরাও স্বস্তি পায়। না হলে জোটের ঐক্য নিয়ে ভুল বার্তা যাবে।’

ঢাকা দক্ষিণে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেন ও উত্তরের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। দুই সিটিতে আগামী ৩০ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

২০ দলের শরিক ডেমোক্রেটিক লীগের মহাসচিব সাইফুদ্দিন মনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ফরমালি এখনো প্রচারণায় নামা শুরু হয়নি। তবে এখন সবাই বলছে বসা উচিত। যদিও ভেতরে ভেতরে যোগাযোগ হচ্ছে। আমিও কিন্তু এক দিন ছিলাম ইশরাক হোসেনের সঙ্গে।

বিলম্বে নামার কারণ কি এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘জামায়াত মিটিংয়েও আসেনি। এখনো তাদের কোনো খোঁজখবর নাই। বুঝতেছি না আসলে কি হয়েছে।’

২০১৫ সালের নির্বাচনে বিএনপি জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতের পক্ষ থেকে মেয়র পদে নির্বাচন করার আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছিল। যা নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল জোটের মধ্যে। তবে এবার তাদেরও কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি। মাঠেও কোনো তৎপরতা নেই। এর বাইরে অন্য দলগুলোর তেমন নেতাকর্মী না থাকলেও শীর্ষ নেতারা মাঠে থাকবেন এমন প্রত্যাশা ছিল বিএনপির। তবে এখনো তাদের মাঠে দেখা যায়নি।

বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পর গত ২৮ ডিসেম্বর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের বৈঠক হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় জোটের পক্ষ থেকে বিএনপির প্রার্থীকে সমর্থন দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এরপর ৮ জানুয়ারি মতিঝিলে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেনের কাছে দোয়া চাইতে যান ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেন। এ সময় তাদের প্রতি জোটের আনুষ্ঠানিক সমর্থনের ঘোষণা দেন তিনি।

পরে কামাল হোসেন বলেন, ‘সিটি নির্বাচনে আমরা বিএনপির দুই প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেনকে সমর্থন জানাচ্ছি।’ এ সময় তিনি তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেনের পক্ষে নির্বাচনের মাঠে থাকার জন্য দল ও জোটের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

অবশ্য গতকাল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে তাবিথ আউয়াল আর ইশরাক হোসেনের পক্ষে ঢাকার দুই সিটিতে চারটি পথসভা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কামাল হোসেন।

গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘নামেনি কেউ এখন নামবে। আর আমরা তো নেমেই আছি বিএনপির প্রার্থীদের পক্ষে। দ্রুতই আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে নামবো আশা করি।’ নাগাদ নামবেন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আলাপ-আলোচনা চলতেছে। দেখি কবে নামা যায়।’

ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেয়া লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘অন্যরা কেন নামছে না আমি বলতে পারবো না। তবে জোটের বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে তাই আমি নেমেছি।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান অবশ্য এতে খুব বেশি সমস্যা দেখছেন না। ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘মাঠে না নামলেও শরিকরা আমাদের প্রার্থীদের সঙ্গে আছেন। যেহেতু সিদ্ধান্ত হয়েছে তারা নিশ্চয়ই তাদের সুবিধামতো প্রচারণায় নামবেন।’

(ঢাকাটাইমস/১৭জানুয়ারি/ডিএম)