‘সম্মিলিত চাষ পদ্ধতি কৃষকের জন্য লাভজনক’

প্রকাশ | ১৭ জানুয়ারি ২০২০, ২৩:০১

কুমিল্লা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

‘সমবায়েরভিত্তিতে জমির আইল উঠিয়ে সম্মিলিত চাষাবাদ পদ্ধতি ১৯৭৫ সালেই বঙ্গবন্ধু পরিকল্পনা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সেই দর্শনই আমরা আজ বাস্তবায়ন করছি। সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদের ফলে সরকারের সব ধরনের ভর্তুকির পরও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কৃষকরা তাদের পণ্যের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। এ পরিস্থিতিতে কৃষির উৎপাদন ব্যয় হ্রাসের উপায় উদ্ভাবন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছিল। আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার করে যৌথ খামার প্রতিষ্ঠার ফলে কৃষি পণ্যের উৎপাদন খরচ হ্রাস পাবে এবং কৃষি হবে কৃষকের জন্য একটি লাভজনক জীবিকা। এছাড়াও আমার বিশ্বাস পরীক্ষামূলক এ প্রকল্পটি একটি উন্নয়ন মডেল হিসেবে দাঁড়াবে এবং কৃষিতে আরেকটি নতুন বিপ্লব সূচিত হবে।’

কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামে শুক্রবার দুপুরে এ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত কৃষকদের সাথে মতবিনিময় সভায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘যান্ত্রিকীকরণের চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলা করে আধুনিক চাষ ব্যবস্থা প্রবর্তনের মডেল উদ্ভাবনের লক্ষ্যে এ প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছে। এই পদ্ধতিতে খণ্ড খণ্ড জমিকে ডিজিটাল ভূমি জরিপের মাধ্যমে আইল উঠিয়ে দিয়ে বৃহদাকার জমিতে একই/বিভিন্ন জাতের ফসলের চাষাবাদ ও শস্য উৎপাদন করা হচ্ছে। আধুনিক এ পদ্ধতিতে কৃষকদের নিয়ে গঠিত একটি ‘সমাজভিত্তিক এন্টারপ্রাইজ’-এর মাধ্যমে চাষাবাদ পরিচালনা করা হচ্ছে। পরে মন্ত্রী ফিতা কেটে উক্ত প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।

বার্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পের আওতায় ডিজিটাল ভূমি জরিপের মাধ্যমে লাকসাম উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়নের নোয়াপাড়া ও ছনগাঁও গ্রামের যৌথ খামার প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী ৭৫ জন কৃষকের ৪০ একর কৃষিজমির সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্বাচিত ৪০ একর কৃষিজমির ১৪১টি প্লটের আইল উঠিয়ে একত্র করে চলমান বোরো মৌসুমে ট্রান্সপ¬ান্টারের মাধ্যমে ধান রোপন করা হচ্ছে। গতবছরের ৩০ ডিসেম্বর বার্ড, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়, লাকসাম এবং নোয়াপাড়া-ছনগাঁও যৌথ কৃষি খামার কমিউনিটি এন্টারপ্রাইজের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নে একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির আওতায় বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ বার্ড কৃষকদের উচ্চ ফলনশীল ধানবীজ, কৃষিযন্ত্র সহায়তা এবং যৌথ খামার ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করছে, যৌথ খামারের জমির মালিকরা কমিউনিটি এন্টারপ্রাইজ ব্যবস্থার মাধ্যমে কৃষিকাজ পরিচালনা করছে এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা কৃষি অফিস সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করছে।

পরীক্ষামূলক এ প্রকল্পটি সফল হলে কৃষিক্ষেত্রে একটি মডেল হিসেবে সারাদেশে কৃষকদের দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

স্থানীয় চেয়ারম্যান ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব রেজাউল আহসান, কুমিল্লা বার্ডের মহাপরিচালক শাহজাহান।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে লাকসাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুস ভইয়া, পৌর মেয়র অধ্যাপক আবুল খায়ের, উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম সাইফুল আলম, ভাইস চেয়ারম্যান মহব্বত আলী, লাকসাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম হীরাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কৃষকরা উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/১৭জানুয়ারি/এলএ)