ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলায় মোর্স কোড মেশিন (ভিডিও)

প্রকাশ | ১৮ জানুয়ারি ২০২০, ১২:১৯ | আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২০, ১২:২৭

আসাদুজ্জামান
ঢাকা টাইমস

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চলছে তিন দিনের ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা ২০২০। এই প্রথমবারের মতো এ মেলার আয়োজন করেছে সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। মেলায় টেলিযোগাযোগের নানা উদ্ভাবন প্রদর্শন করা হচ্ছে। এর মধ্যে দর্শনার্থীদের নজর করেছে টেলিগ্রাফ যন্ত্র। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মোর্স কোড মেশিন। এটি এটি ঐতিহাসিক যন্ত্র। যেটি উদ্ভাবনের মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে টেলিযোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। 

১৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা আজ শেষ হচ্ছে। মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত। এতে প্রবেশ ফি নেই। মেলায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্যাভিলিয়নে ঠাঁই পেয়েছে যোগাযোগের নানা ধরনের যন্ত্র। টেলিগ্রাফ মেশিন বা মোর্স কোর্ড মেশিন ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের টেলিফোনও প্রদর্শন করা হচ্ছে। কয়েক শতক ধরে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এসব যন্ত্র ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব সাফল্যের ফলে তার যুক্ত টেলিযোগাযোগ যন্ত্র এখন অনেকেটাই সেকেলে হয়েছে।  

টেলিগ্রাফ
টেলিগ্রাফ যন্ত্রের মাধ্যমে প্রেরিত মোর্স কোডে লিখিত টেলিগ্রাফি বার্তাকে টেলিগ্রাম বা কেবলগ্রাম, সংক্ষেপে কেবল বা তারবার্তা, বলা হতো। পরবর্তীতে টেলেক্স নেটওয়ার্কের (বিভিন্ন স্থানে রক্ষিত টেলিপ্রিন্টারের নেটওয়ার্ক) মাধ্যমে প্রেরিত টেলিগ্রামকে টেলেক্স বার্তা বলা হতো। টেলিফোনের মাধ্যমে বহুদূরে বা দেশ-বিদেশে কথা বলা সহজলভ্য হওয়ার আগে টেলিগ্রাম সুবিধা অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। ব্যবসায়িক যোগাযোগ তো বটেই, টেলিগ্রামের মাধ্যমে এমনকি ব্যবসায়িক দলিল, এবং চুক্তিপত্রও সম্পাদিত হতো। ফ্যাক্স টেলিগ্রাফের মাধ্যমে প্রেরিত ছবিকে তারচিত্র বা তারছবি বলা হতো।

টেলিগ্রাফ সেন্ডার কি ও রিসিভার ইউনিট
টরে টক্কা হিসেবে পরিচিত পাওয়া এই টেলিগ্রাফ সেন্ডার কি ও রিসিভার ইউনিট টেলিযোগাযোগের প্রথম ধাপ। মেলায় এই যন্ত্রকে ঘিরে দর্শনার্থীদের কৌতুহলের শেষ নেই। মোর্স কোডের মাধ্যমে সাংকেতিক ভাষায় তারবার্তা পাঠানোর কাজে এই যন্ত্র ব্যবহৃত হতো।  জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা এই প্রযুক্তিতেই প্রথম ট্রান্সমিট হয়।

কয়েন বক্স ফোন
ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলায় প্রদর্শিত হচ্ছে কয়েন বক্স ফোন। দুই দশক আগেও রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে এই কয়েন বক্স ফোন রাখা ছিল। বক্সে কয়েন প্রবেশ করিয়ে টেলিফোন করা যেতো। ১৮৮৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম কয়েন পে পদ্ধতিতে পাবলিক ফোন বুথ চালু করা হয়। বিটিটিবি ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশে প্রথম কয়েন বক্স ফোন চালু করে। শহরে টেলিযোগাযোগ বজায় রাখতে এই কয়েন বক্স ফোন বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। মেলায় এটি প্রদর্শিত হচ্ছে।

কার্ড ফোন
বিটিটিবি এবং টেলিফোন শিল্প সংস্থার যৌথ উদ্যোগ ১৯৯২ সালে কয়েন বক্স ফোনের বদলে শহরে কার্ড ফোন চালু করা হয়। প্রথমে ইতালিও ম্যাগনেটিক কার্ডফোন এবং পরবর্তীতে আধুনিক স্পেনের চিপ-টাইপ ফোন স্থাপন করা হয়। তখন টেলিফোন লাইনের সংকট থাকায় অনেকেই কার্ড কিনে কার্ড ফোন দিয়ে যোগাযোগ করত। এটাও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলায় গেলে কার্ড ফোন দেখতে পাওয়া যাবে। 

টেলিপ্রিন্টার, ফ্যাক্স, টেলি টাইপ রাইটার
ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্যাভিলিয়নে আরো প্রদর্শিত হচ্ছে টেলিপ্রিন্টার, ফ্যাক্স মেশিন এবং টেলি টাইপ রাইটার। এছাড়াও আছে ইলেকট্রোনিক টাইপ রাইটার। যা কালের বিবর্তনে এখন জাদুঘরে ঠাঁই পেয়েছে। অথচ এক সময় এসব যন্ত্রই যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল।

এছাড়াও মেলায় বিভিন্ন ধরনের টেলিফোন সেট প্রদর্শন করা হচ্ছে।

আজ শনিবার সমাপনি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ ২০২০ এর আসরের পর্দা নামছে। 

(ঢাকাটাইমস/১৮জানুয়ারি/এজেড)