ভিন্নমতকে নিস্তব্ধ করে দিচ্ছে সরকার: ফখরুল

প্রকাশ | ১৮ জানুয়ারি ২০২০, ১৫:২৩ | আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২০, ১৮:৫৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ভিন্নমত সইতে পারে না এমন মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেশে আজ কেউ ভিন্নমত পোষণ করলেই তাকে স্তব্ধ করে দেয়া হচ্ছে। নিশ্চিহ্ন করা হচ্ছে, ছিন্ন করা হচ্ছে।’

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জাতীয় অধ্যাপক তালুকদার মনিরুজ্জামান স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

ফখরুল বলেন, ‘তালুকদার মনিরুজ্জামান সাহেবরা সব সময় আসেন না। পৃথিবীতে খুব ক্ষণজন্মা পুরুষ তারা। তার চলে যাওয়া দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। আজকে যে রাষ্ট্র আমরা সবাই মিলে তৈরি করেছি এটাতো একটা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এ বিষয়টি তালুকদার মনিরুজ্জামান সাহেবের নিশ্চয় একটা দুঃখের কারণ ছিল। এরপরে যে তিনি খুব একটা জনসম্মুখে আসতেন না, জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলেন তার অন্যতম কারণ ছিল এটা।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে আমরা যে রাষ্ট্র তৈরি করেছি সেখানে মানুষের কোনো অধিকার নেই। সাধারণ মানুষ তারা একেবারে সাধারণ হয়ে গেছে। যে চিন্তা নিয়ে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম সেই চিন্তা, চেতনা, ধারণাগুলো এখন প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আজকে যারা শাসকগোষ্ঠী তারা খুব সচেতনভাবেই দেশটাকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করছে। খুব দুঃখ হয় যখন দেখি দেশের যারা গুণী মানুষ আছেন তাদের কথা বলার কারণে কারাগারে পাঠানো হয়। যদিও তারা কোনো রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকেন না। তার এমন একটি উদাহরণ ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন।’

বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘যারা ভিন্নমত পোষণ করেন কারাগারে নিয়ে নিদারুণভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। যারা লিখেন, কথা বলেন এবং শুভ চিন্তা কাজ করতে চান আজকে তাদেরকেও পর্যদুস্ত করা হচ্ছে। দেশে আজ যারা ভিন্নমত পোষণ করতে চায়, ভিন্ন কথা বলতে চায় তাদেরকে বিভিন্নভাবে নিশ্চিহ্ন করা হচ্ছে, ছিন্ন করা হচ্ছে, নিস্তব্ধ করে ফেলা হচ্ছে। যাই হোক এর মধ্যেই আমাদের উঠে দাঁড়াতে হবে। এরমধ্যেই আমাদের কথা বলতে হবে।’

‘সত্য প্রকাশই প্রথম আলো সম্পাদকের অপরাধ’

প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের অপরাধ কী? অপরাধ যে মাঝেমধ্যে তিনি কিছু লিখতেন, তার পত্রিকায় কিছু সত্য কথা বের হতো—এই জন্য একটি অবহেলাজনিত মৃত্যুর মামলার সঙ্গে তাকে জড়িয়ে দেওয়া হলো। প্রধান আসামি করা হলো। তাকেসহ প্রথম আলোর আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ঠিক একইভাবে মাহমুদুর রহমান সাহেবকে, তার পত্রিকা আমার দেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তাকে দীর্ঘকাল কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছিল। যে ভিন্নমত পোষণ করতে চায়, ভিন্নকথা বলতে চায়, এখন তাকে নিশ্চিহ্ন করা, নির্মূল করা অথবা স্তব্ধ করে দেওয়ার কাজ চলছে।’

ঢাকা বিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীনের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলী খান, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, ড. মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহসানুল হক মিলন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/১৮জানুয়ারি/বিইউ/জেবি)