দায়িত্বের মেয়াদ শেষে কী চান পুতিন?
বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়ায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। দেশটিতে সংবিধান অনুযায়ী টানা দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্ট পদে থাকা যায় না। পুতিন প্রথমে দুই বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে মাঝে একবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। তারপর ফের দুই বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটিই তার শেষ মেয়াদ। তাহলে ভবিষ্যতের জন্য কী পরিকল্পনা করছেন তিনি? ক্ষমতায় থাকতে কী চান তিনি? এমন প্রশ্নই ঘুরছে বিশ্বব্যাপী।
সম্প্রতি তিনি দেশটির সংবিধানে ব্যাপক সংস্কারের প্রস্তাব করেছেন যাতে ক্ষমতার ভারসাম্যে পরিবর্তন আনা যায়। তারপর এক নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেছেন। কাগজে কলমে পুতিন দাবি করছেন এর মাধ্যমে রাশিয়াকে আরও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করা যাবে। তিনি সরকারের হাতে আরও ক্ষমতা দিতে চান। যেমন মন্ত্রী নিয়োগ বা এধরনের ক্ষমতা। অন্যদিকে তিনি প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সীমিত করতে চান। খবর বিবিসির।
বাস্তবে আসলে পুতিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে এখন চতুর্থ মেয়াদের জন্য ক্ষমতায় আসীন। এই মেয়াদ শেষ হলেও পুতিন যে রাশিয়ার ক্ষমতার মঞ্চ থেকে সরে যাবেন তা মনে হচ্ছে না। রাশিয়ার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, পুতিন রাশিয়ার রাষ্ট্রক্ষমতায় তার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার জন্য পরবর্তী পরিকল্পনার ছক কাটছেন।
বিশ্বের অনেক দেশের নেতাই তাদের ক্ষমতার মেয়াদ নিজেরাই বাড়িয়ে নিয়েছেন। এজন্যে হয় তারা সংবিধানের এক সংক্রান্ত বিধিনিষেধ বাতিল করে দিয়েছেন অথবা কোন সাংবিধানিক ফাঁক-ফোকরের সুযোগ নিয়েছেন। পুতিন ইতিমধ্যে এই কাজ একবার করেছেন। এবার মনে হচ্ছে পুতিন নতুন কোন কৌশল আঁটছেন। রাশিয়ায় ‘স্টেট কাউন্সিল’ নামে একটি পরিষদ আছে, যার প্রধান তিনি নিজে। এখন পর্যন্ত এর ক্ষমতা এবং উদ্দেশ্য খুবই সীমিত। কিন্তু এখন এই ‘স্টেট কাউন্সিল’কে সাংবিধানিক মর্যাদা দেয়া হচ্ছে এবং মনে করা হচ্ছে এই পদকেই বেশ ক্ষমতাশালী করা হবে। হয়ত সেই পদে থেকেই ক্ষমতা ধরে রাখবেন পুতিন।
রাষ্ট্র ক্ষমতার ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার এরকম কৌশলের নজির আছে। কাযাখাস্তানের নুরসুলতান নাযারবায়েভ প্রেসিডেন্টের পদ থেকে অবসর নিয়ে আজীবনের জন্য ‘লিডার অব দ্য নেশন’ বা ‘জাতির নেতা’র পদে অধিষ্ঠিত হন।
ভ্লাদিমির পুতিন ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের পদে থাকতে পারবেন। কিন্তু তারপর কে আসলে দায়িত্ব নেবেন, সেটা নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা আছে। পুতিন তার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যাকে বেছে নিয়েছেন, সেই মিখাইল মিশুস্টিনকে অনেকে হিসেবের বাইরে রাখছেন। তবে বিশ্লেষকদের মতে, ভবিষ্যতে যাই ঘটুক সেটি যে পুতিনের পরিকল্পনা মতো হবে তা অনেকটা নিশ্চিত।
ঢাকা টাইমস/১৯জানুয়ারি/একে