তসলিমার নাগরিকত্ব নিয়ে সীতারামনের বিভ্রান্তিকর তথ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২০, ০৮:০৪ | প্রকাশিত : ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ২১:৫৩

মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি বঞ্চনা, ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব, সংবিধান বিরোধী— এমন হাজারো প্রশ্নের মুখে পড়েছে ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)। সেই সব ক্ষোভ-বিক্ষোভ সামাল দিতে বিজেপির চেষ্টার ত্রুটি নেই। নানা পরিসংখ্যান, নানা উদাহরণ তুলে ধরে প্রমাণের চেষ্টা চলছে, এই আইনে কোনো সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করে তৈরি হয়নি। তার উদাহরণ দিতে গিয়ে বিপত্তি বাধালেন বিজেপি সরকারের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে বলে গায়ক আদনান সামি ও বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের নাগরিকত্ব গুলিয়ে ফেললেন তিনি। বললেন, তসলিমাকে নাগরিকত্ব দিয়েছে বিজেপি সরকার!

জানা গেছে, জন্মসূত্রে পাকিস্তানি গায়ক আদনান সামিকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে তা দেওয়া হয়নি। তাঁকে শুধুমাত্র ভারতে বসবাসের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই সীতারামনের মন্তব্যে অস্বস্তিতে বিজেপি।

রবিবার চেন্নাইয়ে সিএএ নিয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন নির্মলা সীতারামন। সেই অনুষ্ঠানে তিনি বিদেশিদের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত তথ্য-পরিংসংখ্যান তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘‘২০১৬ থেকে ’১৮ এই দু’বছরে আফগানিস্তান থেকে ভারতে আসা ৩৯১ জন মুসলিমকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের শরণার্থী হিসেবে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে ১৫৯৫ জনকে। এই সময়ের মধ্যেই আদনান সামিকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে, সেটা একটা উদাহরণ। অন্য উদাহরণ তসলিমা নাসরিনকে নাগরিকত্ব দেওয়া। এটাই প্রমাণ করে আমাদের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে।’’

তসলিমা নাসরিন জন্মসূত্রে বাংলাদেশি। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি তাঁর লেখালেখি ও উপন্যাসে ‘মুসলিম-বিরোধী’ মতবাদ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। ফলে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন তসলিমা। ‘নির্বাসিত’ তসলিমা সুইডেনের নাগরিকত্ব পান। পরে ভারতে বসবাসের আবেদন করেন। সেই আর্জি মঞ্জুর করে ২০০৪ সালে তাঁকে শুধুমাত্র ভারতে বসবাসের অনুমতি দেয় কেন্দ্র। নাগরিকত্ব দেওয়া হয়নি। অথচ নির্মলা সীতারামন এ দিন সেই দাবিই করেছেন।

অন্য দিকে জন্মসূত্রে পাকিস্তানের নাগরিক সঙ্গীতশিল্পী আদনান সামিকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছিল ২০১৬ সালে। তিনি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে আবেদন জানিয়েছিলেন, মানবিক কারণে তাঁকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হোক। ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের ৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী আদনান সামিকে ‘সিটিজেনশিপ বাই ন্যাচারালাইজেশন’ অনুমোদন দেয় কেন্দ্র।

সীতারামন এ দিন আরও পরিসংখ্যান দিয়ে জানান, গত ছ’বছরে ২৮৩৮ জন পাকিস্তানি, ৯১৪ জন আফগানিস্তানি এবং ১৭২ জন বাংলাদেশিকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে, যাঁদের মধ্যে অনেক মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষও রয়েছেন। এ ছাড়া ১৯৬৪ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত চার লক্ষেরও বেশি শ্রীলঙ্কান তামিল শরণার্থীকে নাগরিকত্ব দিয়েছে ভারত।

সিএএ ‘অসাংবিধানিক’ বলে নানা মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে। অনেক রাজ্যই জানিয়েছে, তারা সিএএ চালু করবেন না। আবার কেরল ও পঞ্জাব বিধানসভায় সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব পাস হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘একটি রাজ্য বিধানসভায় সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব পাশ করেছে। এটা রাজনৈতিক মন্তব্য করার শামিল। আমরা সেটা বুঝি। কিন্তু যখন তাঁরা এটা বলছেন যে সিএএ কার্যকর করবেন না, সেটা আইন-বিরোধী। এটা অসাংবিধানিক।’’

ঢাকাটাইমস/১৯জানুয়ারি/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

গাজায় আরও ৭১ ফিলিস্তিনির প্রাণহানি 

ফেসবুকে রোহিঙ্গাবিদ্বেষ ছড়ানোর নেপথ্যে ছিল মিয়ানমারের জান্তা: জাতিসংঘ

রাফাহতে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী: নেতানিয়াহু

নির্বাচন করার জন্য অর্থ নেই, সরে দাড়ালেন ভারতীয় অর্থমন্ত্রী

সিরিয়ার আলেপ্পোতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩৮

দ. আফ্রিকায় বাস খাদে পড়ে নিহত ৪৫, অলৌকিকভাবে বেঁচে গেল শিশু

দুই নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যার পর বালিচাপা দিলো ইসরায়েলি সেনারা 

গাজায় যুদ্ধাপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে আইসিসির প্রতি আহ্বান

কলকাতা বিমানবন্দরে চলল গুলি, নিরাপত্তা কর্মীর মৃত্যু

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়ে হুমকি পেলেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :