দালালমুক্ত হলো কক্সবাজার পাসপোর্ট অফিস, নেই হয়রানি

ছৈয়দ আলম, কক্সবাজার
 | প্রকাশিত : ২০ জানুয়ারি ২০২০, ০৭:৩৪

পাসপোর্ট সেবায় দালালদের টাকা দেয়া ছাড়া কাজ হয় না বলে বরাবর অভিযোগ ছিল কক্সবাজারবাসীর। কিন্তু এখন বদলে গেছে কক্সবাজার পাসপোর্ট অফিসের চিত্র। কোনো অভিযোগ নেই পাসপোর্ট করতে আসা মানুষগুলোর, নেই দালালের আনাগোনা, প্রতিটি কক্ষের ভেতরে-বাইরে বিরাজ করছে শৃঙ্খলতা। বিভিন্ন জায়গায় দেয়া হয়েছে সিসি ক্যামেরা।

মানুষ শান্ত ও সুশৃঙ্খলভাবে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে পাসপোর্টের জন্য ছবি ও ফিঙ্গার প্রিন্ট দিচ্ছেন। ধৈর্যের সঙ্গে তাদের সেবা দিচ্ছেন অফিস কর্তৃপক্ষ।

অভিযোগ ছিল, ফরম পূরণ, বিভিন্নজনকে ম্যানেজ, পুলিশ ভেরিফিকেশন, মেশিনের সমস্যাসহ নানা অজুহাতে সরকারি খরচের বাইরেও অতিরিক্ত টাকা আদায় করত দালালরা। আগে এসব কর্মকা-ে অফিসের গুটিকয়েক কর্মকর্তাদের সঙ্গে দালালদের যোগসাজশের অভিযোগও ছিল, যা বরাবরই অস্বীকার করত অফিস কর্তৃপক্ষ।

কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবু নাঈম মাসুমের কারণে পাল্টে গেছে কক্সবাজার পাসপোর্ট অফিসের চিত্র।

স্থানীয়রা জানায়, যদি কক্সবাজারে এই অফিসার না থাকতেন- তাহলে এই রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকার প্রায় এক লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশের পাসপোর্ট বানিয়ে নিত। এরকম অনেক জালিয়াতি চক্রের সদস্য, ভুয়া ছেলে-মেয়ে বানিয়ে পাসপোর্ট নিতে আসা অনেককে ধরে সাজা ও জরিমানা করা হয়েছে।

কুতুবদিয়া থেকে সেবা নিতে আসা আবদুল করিম জানান, কর্মসংস্থানের কারণে বিদেশ যাওয়ার জন্য তিনি পাসপোর্ট করতে এসেছেন। সরকারি খরচের বাইরে কাউকে কোনো টাকা দেননি বা কোনো টাকা দাবি করা হয়নি। তবে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী মায়ের নাম ভুল লেখায় একবার হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। এ নিয়ে সরাসরি অফিসারের কাছে গেলে মুহূর্তেই সংশোধন করে দেন তিনি।

টেকনাফের হ্নীলা পানখালী এলাকার ইউসুফ বলেন, দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য রবিবার ফরম জমা দিই। অফিস কর্তৃপক্ষ ৩০ মিনিটের ভেতর আমার ছবি ও ফিঙ্গার প্রিন্ট সম্পন্ন করেছে। তিনি দালাল বা অফিস কর্তৃপক্ষের কারও কাছে হয়রানির শিকার হননি বলে জানান।

চিকিৎসা করতে ভারত যাওয়ার জন্য চকরিয়ার খুটাখালী থেকে আসা ইলিয়াছ মিয়া বলেন, কয়েকমাস ধরে জাতীয় পরিচয়পত্রে সমস্যার কারণে পাসপোর্ট পেতে সমস্যা হচ্ছিল। তারপরেও আমাকে চিকিৎসার জন্য পাসপোর্ট পেতে দ্রুত সহায়তা করেন। সহকারী পরিচালক আবু নাঈম আমার পাসপোর্ট স্লিপে ঢাকা অফিসে যাওয়ার জন্য লিখে দিলে আমি দ্রুত পাসপোর্ট পাই।

সহকারী পরিচালক আবু নাঈম মাসুম বলেন, পাসপোর্ট করতে এসে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হন, তারা যেন প্রাপ্য সেবা পান, সবসময় আমরা সে চেষ্টাই করছি। সেবার মান নিশ্চিত করতেই আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, পাসপোর্ট অফিসে দালালদের তৎপরতার অভিযোগ বিভিন্ন সময়ে আমরা পেয়েছি, কিন্তু তাদের চিহ্নিত করতে না পারায় ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে অফিস দালালমুক্ত রাখতে সব সময় সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/২০জানুয়ারি/পিএল/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :