চুরির অপবাদে কিশোরকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন

নিজস্ব প্রতিবেদক, লক্ষ্মীপুর
| আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২০, ১৮:৩৪ | প্রকাশিত : ২০ জানুয়ারি ২০২০, ১৮:৩২

লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদ দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নিরব হোসেন নামে এক কিশোরকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনের পর গলায় জুতার মালা ও ঝাড়ু পরিয়ে উল্লাস করা হয়। এ ঘটনায় ওই কিশোরের নানি বাদী হয়ে সোমবার দুপুরে সদর থানায় একটি মামলা করেছেন। সেই নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দিলে ভাইরাল হয়ে যায়।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজিজুর রহমান মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কিশোর নিরব হোসেনকে নির্যাতনের ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলো- রাশেদ ও ইসমাঈল। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এ দিকে দুপুরে ঝাড়ু ও জুতার মালা গলায় পরিয়ে কিশোরকে এলাকায় ঘুরানোর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্নসহ এ ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন কিশোরের নানি আলেয়া বেগমসহ স্থানীয় এলাকাবাসী।

শনিবার বিকালে পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে নিজ কর্মরত দোকান থেকে টাকা চুরি হয়। এরপর চুরির অপবাদ দিয়ে কিশোর নিরব হোসেনকে খুঁিটর সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালান দোকানদার রাশেদ ও কামাল কসাই এবং ইসমাইল হোসেন কসাইসহ অন্যরা।

এরপর নিরব হোসেনের গলায় জুতার মালা ও ঝাড়ু পরিয়ে ঘুরানো হয়। নির্যাতনের পর তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

পরে ওই দিন রাতে শালিস বৈঠকের কথা বলে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন দোকানদার। এক পর্যায়ে রবিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ গ্রাম্য মাতব্বররা বিষয়টি নিয়ে শালিসে বসেন। এক পর্যায়ে ওই কিশোরকে দোষী সাব্যস্ত করে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

কিন্তু নানি আলেয়া বেগম এতিম ওই কিশোরের দায়িত্ব নিতে রাজি না হওয়ায় আবারও হট্টগোল শুরু হয়। দ্বিতীয়বার আবারো ওই কিশোরকে মারধর করেন তারা। রাতে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

গত ছয় মাস ধরে নিরব হোসেন স্থানীয় রাশেদের চামড়ার দোকানে শ্রমিকের কাজ করতেন। এর মধ্যে তার মাকেও হারায় নিরব। দোকানে মাসিক শ্রমের টাকা পায়নি বলে অভিযোগ করে নিরব হোসেন। এত কষ্ট করেও পারিশ্রামিক না পাওয়ায় মালিকের অগোচরে নিজের পাওনা টাকাই নিয়ে নেয় বলে দাবি করে কিশোর নিরব। এতে মালিক ক্ষিপ্ত হয়ে চুরির অপবাদ দিয়ে এ ঘটনা ঘটায়।

তবে দোকান মালিক রাশেদ বলছেন, নিরব হোসেন তার ক্যাসবক্স থেকে কিছু টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। এতে নিজে ও এলাকাবাসী তাকে শাস্তি হিসেবে ঝাড়ু ও জুতার মালা পরিয়ে দেন ও শালিস বৈঠকে স্থানীয় কাউন্সিলর ও মাতাব্বররা তার ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

স্থানীয় কাউন্সিলর শিপন ও শালিসদার ইসমাইল হোসেন এবং রাশেদ ঝাড়ু ও জুতার মালা পরিয়ে দেয়ার ঘটনা সম্পর্কে অবহিত নন বলে দাবি করেন। দায় এড়িয়ে তারা বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।

(ঢাকাটাইমস/২০জানুয়ারি/কেএম/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :