এক অংকের সুদে ঋণ শুরু হলে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়বে

প্রকাশ | ২০ জানুয়ারি ২০২০, ১৯:২২ | আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২০, ১৯:৩৮

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি শামস মাহমুদ বলেছেন, ১ এপ্রিল থেকে ব্যবসায়ীদের এক অংকের সুদে ঋণ দেওয়া শুরু হলে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়বে। সোমবার ডিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সংগঠনটির সভাপতি। দেশের সমসাময়িক অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি এবং ২০২০ সালে ডিসিসিআই’র বর্ষব্যাপী কর্মপরিকল্পনা জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আট শতাংশ হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করলেও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ছে না। এর অন্যতম কারণ ব্যাংক ঋণের সুদের উচ্চহার।

একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, বাজেটের ঘাটতি মেটাতে সরকার অস্বাভাবিক হারে যে ঋণ নিচ্ছে তা বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহের জন্যও কোনো সমস্যা নয়। তার দাবি, সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে দেশের অবকাঠামো খাতের উন্নয়নের জন্য। এ খাতের উন্নয়ন হলে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। এতে বেসরকারি খাতে তেমন প্রভাব পড়বে না। কারণ বিদেশে বেসরকারি খাতের ঋণ নেয়ার অনেক সুযোগ রয়েছে।

খোলাপি ঋণ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘অনেকে ঋণ নিয়ে কারখানা স্থাপন করেন। কিন্তু গ্যাস-বিদ্যুতের সমস্যার কারণে উৎপাদনে যেতে পারেন না। ফলে সঠিক সময়ে ঋণ পরিশোধ করতে পারেন না। খেলাপি বাড়ে। এছাড়া জাপান, ভারতসহ অনেক দেশে নন-পারফর্মিং লোন বেশি রয়েছে; এটি তেমন সমস্যা নয়।’

নয় শতাংশ ব্যাংক ঋণ নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে শামস মাহমুদ বলেন, ‘নয় শতাংশ ব্যাংক ঋণের সুদহার বাস্তবায়ন এর আগে বেশ কয়েকবার পিছিয়েছে। এটি নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ মহল পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা চাই এবার সঠিক সময়ে নয় শতাংশ ব্যাংক ঋণের বিষয়টি বাস্তবায়ন হবে।’

তিনি বলেন, ব্যাংক ঋণের সুদের হার এক অংকে আসলে এসএমই খাতেও বিনিয়োগ বাড়বে। এতে দেশের অর্থনীতিতে পরিবর্তন আসবে।

তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালে ডিসিসিআই যে ক’টি খাতের ওপর অগ্রাধিকার দেবে তার মধ্যে পুঁজিবাজার রয়েছে। বছরটিতে বন্ড মার্কেটের পলিসি উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ নেয়া হবে। এতে একদিকে উদ্যোক্তাদের দীর্ঘমেয়াদি অর্থের জোগান হবে, অন্যদিকে বন্ডে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীরা ৫ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন।

পুঁজিবাজারের সমস্যার কারণও তুলে ধরেন ডিসিসিআই সভাপতি। বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারী উভয়ের মধ্যে ডে-ট্রেডিং মানসিকতা রয়েছে। বন্ড মার্কেটের অভাব রয়েছে। এর সঙ্গে ভালো কোম্পানিরও অভাব রয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে চলতি বছরে দেশের অর্থনীতির অগ্রগতির জন্য ১১ খাতকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেয়ার কথা জানায় ডিসিসিআই। এর মধ্যে রফতানি বহুমুখীকরণ, জনশক্তি উন্নয়ন, অর্থনীতির অগ্রগতির জন্য কূটনৈতিক সম্পর্ক বাড়ানো, পুঁজিবাজার পুনঃগঠন, জ্বালানি নিরাপত্তা, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, ইজ অব ডুইং বিজনেসে অগ্রগতি, গবেষণা ও উন্নয়ন, অবকাঠামো ও এসএমই খাতে জোর দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে ডিসিসিআইয়ে ঊধ্বর্তন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ বাশির উদ্দিনসহ সংগঠনের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা টাইমস/ ২০ জানুয়ারি/আরএ