অনিয়ম নিয়ে ফের ইউও নোট ইসি মাহবুবের

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের হলফনামা যাচাই এবং আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না বলে ‘ইউও নোট’ (আন-অফিসিয়াল নোট) দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। এই নোটের বিষয়সমূহ বিবেচনায় নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছেন তিনি।

প্রার্থীদের হলফনামা নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে মাহবুব তালুকদার ইউও নোটে বলেন, হলফনামা যাচাইয়ের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় হলফনামা প্রদানের বিধান প্রশ্নের সম্মুখীন। এতে নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

আজ সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদত হোসেন চৌধুরী, উত্তর সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবুল কাসেম এবং দক্ষিণ সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেনকে ওই ইউও নোট দেন মাহবুব তালুকদার।

ইউও নোটে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে আচরণবিধি রক্ষায় নির্বাহী হাকিমদের (ম্যাজিস্ট্রেট) কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়, সংসদ সদস্য নির্বাচনী কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা নির্বাচনী প্রচার করছেন।’ ইসিকে এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নিতেও বলেছেন তিনি।

মাহবুব তালুকদার আরও বলেন, ‘ইতোপূর্বে গত ১৩ জানুয়ারি আমার দেয়া ইউও নোটে সংসদ সদস্যদের নির্বাচনী প্রচারণা বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ বন্ধ করার জন্য একটি পরিপত্র জারির অনুরোধ জানিয়েছিলাম। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, নির্বাচনে সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন সংসদ সদস্য নির্বাচনী কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। আরেকজন সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ঢাকা শহরে রাজনৈতিক বক্তৃতা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এসব কার্যক্রম সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনের সুস্পষ্ট নির্দেশনাসহ পরিপত্রটি জারির আবশ্যকতা রয়েছে বলে মনে করি।’

তিনি বলেন, ‘আজ ২০ জানুয়ারি (সোমবার) প্রথম আলো পত্রিকায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের একটি বিজ্ঞাপন প্রচারিত হয়েছে, যার শিরোনাম ‘ফিরে দেখা ২০১৯ : মশক নিয়ন্ত্রণ’। এই বিজ্ঞাপনে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিগত বছরে মশক নিয়ন্ত্রণের নানা প্রকার ফিরিস্তি দেয়া হয়েছে। বিজ্ঞাপনটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সদ্য বিদায়ী মেয়রের পক্ষে তার সাফল্যের প্রচারণা ছাড়া আর কিছু নয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এই প্রচারণার জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।’

‘প্রার্থীদের হলফনামা নিয়ে নানা আভিযোগ আছে। হলফনামা যাচাইয়ের কোন উদ্যোগ নির্বাচন কমিশনে পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এতে হলফনামা প্রদানের বিধান প্রশ্নের সম্মুখীন, নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়।

মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থার সংকট নিরসন সম্ভব হবে না। কমিশন আইনানুগভাবে দৃঢতার সঙ্গে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারলে আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা সম্পর্কে জনমনে প্রশ্নের উদ্রেক হবে এবং কমিশনের নিষ্ক্রিয়তা জনসমক্ষে প্রতিভাত হবে।’

(ঢাকাটাইমস/২০জানুয়ারি/জেআর/মোআ)