মৃত ঘোষণার পর নড়ে উঠল নবজাতক

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২১ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

চুয়াডাঙ্গায় সদ্য ভূমিষ্ঠ এক কন্যা শিশুকে নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে শহরজুড়ে। সোমবার সকালে শহরের হাসপাতাল সড়কের উপশম নার্সিং হোমে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর ক্লিনিকের চিকিৎসক নবজাতককে মৃত ঘোষণা করেন। শিশুটিকে যখন মৃত ভেবে প্যাকেটে ভর্তির প্রস্তুতি চালাচ্ছিল, তখনই শিশুটি নড়ে উঠে- তার জীবিত হবার জানান দেয়। এরপর তড়িঘড়ি করে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ শিশুটিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হলে শহরজুড়ে শুরু হয় চাঞ্চল্য। শিশুটিকে দেখতে সদর হাসপাতালে ভিড় জমাচ্ছেন উৎসুক জনতা।

সদর উপজেলার হাজরাহাটি গ্রামের আবদুল হালিম ও জিনিয়া খাতুনের বিয়ে হয় কয়েক বছর আগে। এরই মধ্যে জিনিয়ার গর্ভে সন্তান আসে। তাকে নিয়মিত চেকআপ করতেন জেলা শহরের উপশম নার্সিং হোমের স্বত্ত্বাধিকারী ডা. জিন্নাতুল আরা।

রবিবার বিকালে জিনিয়ার প্রসব বেদনা শুরু হলে তাকে নেয়া হয় ডা. জিন্নাতুল আরার কাছে। সেখানে তার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন জিনিয়া। সোমবার ভোর ৪টার দিকে কন্যাসন্তান প্রসব করেন জিনিয়া খাতুন।

প্রসূতি জিনিয়া খাতুন জানান, রবিবার বিকালে প্রসব বেদনা উঠলে পরিবারের সদস্যরা তাকে ডা. জিন্নাতুল আরার মালিকাধীন উপশম নাসিং হোমে ভর্তি করে। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ সিজার করার কথা জানানো হলেও সোমবার ভোরে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে আমার কন্যা সন্তান হয়। কিন্তু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর ক্লিনিকের আয়া ও চিকিৎসকরা আমার মৃত কন্যা শিশু হয়েছে বলে জানান। এরপর তাকে ক্লিনিকের মেঝেতে অবহেলায় ওপর রেখে দেয়া হয়।

প্রসূতি জিনিয়ার মা কুলসুম বেগমের অভিযোগ, মৃত কন্যা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার খবরে আমরা যখন দাফন কাফনের জন্যও প্রস্তুতি নিতে থাকি। তখনই আমার মেয়ে তার কন্যাকে শেষবারের মত দেখতে চায়। এরপর শিশুকে কোলে নিতেই নড়ে ওঠে শিশুটি। এ সময় আমাদের চিৎকারে ডা. জিন্নাতুল আরা শিশুকে অক্সিজেন দিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে গোপনে সদর হাসপাতালে ভর্তি করতে বলেন।

এরপর সোমবার সকালে শিশুর পরিবারের সদস্যরা তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।

বর্তমানে শিশুটি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুর রহমান মালিক খোকনের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন।

শিশুটির নানা সজীত মণ্ডলের অভিযোগ, শিশুটি যে বেঁচে আছে এই বিষয়টি ওই ক্লিনিকের চিকিৎসকরা কোনভাবেই মানতে চাচ্ছিল না, উল্টো তারা শিশুর গলা চেপে ধরে শিশুকে মৃত বলে ঘোষণা করে।

শিশুর বাবা আব্দুল হালিম জানান, ও সাত মাসে জন্ম নিয়েছে। আমি ওর নাম রেখেছি জান্নাতুল। সে এখন ভালোই আছে। হাত-পা নেড়ে খেলছে। পিটপিট করে তাকাচ্ছে। আমার বিশ্বাস জান্নাতুল বেঁচে থাকবে।

হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুর রহমান মালিক খোকন বলেন, ‘সময় হওয়ার আগেই শিশুটি জন্ম নিয়েছে। তাকে ইনকিউবেটরের মধ্যে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আপাতত সে সুস্থ আছে। তবে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।

এ ব্যাপারে ডা. জিন্নাতুল আরা বলেন, ‘শিশুটি যখন হয় একেবারেই শ্বাস-প্রশ্বাস ছিল না। নাভির কাছে কেবল ঢিবঢিব শব্দ ছিল। চার ঘণ্টা অক্সিজেন দেয়ার পর সে কিছুটা সুস্থ হলে আমরা আজ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই।

(ঢাকাটাইমস/২০জানুয়ারি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :