শীতে জবুথবু উত্তরের জনপদ, দিনেও গাড়ির লাইট

প্রকাশ | ২১ জানুয়ারি ২০২০, ১৮:৫৭ | আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২০, ২০:১১

শাহ্ আলম শাহী, নিজস্ব প্রতিবেদক

শীতে নাকাল হয়ে পড়েছে দিনাজপুরসহ উত্তরের জনপদ। কয়েকদিন বাড়ার পর তাপমাত্রা আবার নেমে এসেছে আট ডিগ্রিতে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের লুকোচুরি আর রাতে ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। চলছে ঋতু বৈচিত্র্যের খেলা। নতুন করে শুরু হওয়া শৈত্যপ্রবাহে ছন্দপতন হয়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়। সেইসঙ্গে দেখা দিয়েছে শীতজনিত নানা রোগ।

দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বেশিরভাগই দিনের প্রথম ভাগ ঢাকা থাকছে ঘন কুয়াশায়। কোথাও কিছুক্ষণের জন্য সূর্যের মুখ দেখা গেলেও নিমিষেই ঘন কুয়াশায় তা ঢেকে যায়। তাই হেড লাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলাচল করছে দিনের বেলাতেও। কনকনে ঠান্ডায় ঘর থেকে বের হতে পারছেন না খেটে খাওয়া মানুষ।

গতকাল দিনাজপুর জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আট ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন। তিনি বলেন, সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই শৈত্যপ্রবাহ আরো দুই-তিনদিন চলবে। এছাড়াও গুঁড়ি-গুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এতে শীতের তীব্রতা আরো বাড়বে। তাপমাত্রা আরো নিচে নেমে আসতে পারে।

এদিকে ডায়রিয়া, আমাশয়সহ নানা শীতজনিত রোগে কাহিল হয়ে পড়েছে শিশু ও বৃদ্ধমানুষরা। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানিসহ নানা শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।

দিনাজপুর জেলা সিভিল সার্জেন ডা. আব্দুল কুদ্দুস জানিয়েছেন, যেসব শিশু ও বৃদ্ধ মানুষ শ্বাসকষ্টজনিত এবং ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাদের চিকিৎসা চলছে। জেলার ১৩ উপজেলার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও সদর হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ রয়েছে। সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

অন্যদিকে ঘন কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহের কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কৃষকের আলুক্ষেত ও বোরো ধানের বীজতলাসহ বিভিন্ন শীতকালীন শাকসবজি। বোরো ধানের বীজতলা হলুদ বর্ণ হয়ে মরে যাচ্ছে। আলুর খেতে দেখা দিয়েছে লেটব্রাইটসহ বিভিন্ন রোগ। এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. তৌহিদুল ইকবাল জানান, বোরো বীজতলা রক্ষা ও রোপণে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। শীতে গবাদী পশু ও হাঁস-মুরগির নানা রোগ দেখা দিয়েছে। গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি পালনকারীরা এ নিয়ে পড়েছে বিপাকে। তারা পরিবারের লোকজনের পাশাপাশি গবাদী পশু ও হাঁস-মুরগির শীত নিবারণের যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।

দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম জানিয়েছে, শীতের প্রকোপ থেকে জেলার মানুষকে রক্ষার জন্য জেলা প্রশাসন পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে এবং আরো করা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/২১জানুয়ারি/কেএম/ইএস)