পর্তুগালে সংঘর্ষে মৃত্যুর খবর গুজব

প্রকাশ | ২২ জানুয়ারি ২০২০, ১৩:০৬ | আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২০, ১৩:৫৪

রনি মোহাম্মদ, লিসবন,পর্তুগাল

পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে গত শনিবার রাতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার যে সংবাদ প্রচার হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও গুজব। তবে সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন।

লিসবনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা মার্তৃম-মনিজের রুয়া দো টেরিনোতে প্রবাসী বাংলাদেশি দুই পক্ষের মধ্যে ব্যক্তিগত ও আঞ্চলিক বিরোধের জের ধরে গত শনিবার পর্তুগাল সময় রাত ৯:১০ মিনিটে এই সংঘর্ষ হয়। এতে চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয় লিসবনের সাও জোসে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

জানা যায়, গেল বছরের সেপ্টেম্বরে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথম মারামারির ঘটনা ঘটে। দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে চলমান ব্যক্তিগত সমস্যার জের ধরে গত শনিবার রাতে দুই পক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষের পরপরই সেখানে পুলিশ পৌঁছে যায় এবং আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন লিসবনের সান্তা মারিয়া মাইওর জইন্তার প্রেসিডেন্ট ড. মিগুয়েল কোয়েলো। এ ঘটনায় লিসবনে বসবাসরত সাধারণ বাংলাদেশিদের মধ্যে আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।

এদিকে এই সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে পর্তুগালের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে লিসবনে বাংলাদেশি দুই পক্ষের মারামারিকে ধর্মীয় রেষারেষি থেকে সৃষ্ট একটি ঘটনা হিসেবে প্রচার করে। ধর্মীয় এমন অনাকাঙ্ক্ষিত মারামারি স্থানীয় পর্তুগিজরা তাদের দেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি বলে মনে করছে।

এছাড়া এই সংঘর্ষ নিয়ে বাংলাদেশের কিছু সংবাদ মাধ্যম প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ না করে এটাকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষ এবং এতে একজন নিহত হয়েছেন বলে প্রচার করে। স্থানীয় প্রবাসীরা জানান, এই খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

পর্তুগাল আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সভাপতি জহিরুল আলম জসিম ও আবুল বাসার বাদশা, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ এবং পর্তুগাল বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ তালুকদার বলেন, সৃষ্ট এই হামলার সাথে রাজনৈতিক কোনো ইন্ধন নেই এবং সংঘর্ষটি হয় একান্ত ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে।

লিসবনের বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রবীণ ব্যক্তিত্ব ওয়ার্ড কাউন্সিলর রানা তাসলিম উদ্দিন প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিজ নিজ জায়গা থেকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, কোনো অবস্থাতেই ঘটনাটি রাজনৈতিক বা ধর্মীয় ঘটনা হিসেবে প্রমাণ করার সুযোগ দেয়া যাবে না। তিনি আরও বলেন, গতকাল থেকে যে গুজব উঠেছে আহতদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ওই ব্যক্তি এখনো চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। এই বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবনের সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং পুলিশ প্রশাসন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন।

এদিকে হামলা পরবর্তী সময়ে আতঙ্কের মাঝে রয়েছে পর্তুগালে বসবাসরত প্রবাসী এবং অভিবাসন প্রত্যাশায় এদেশে আসা নতুন বাংলাদেশিরা। এমন হামলার জেরে পর্তুগালে বাংলাদেশ কমিউনিটির সম্মানহানির পাশাপাশি অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্য আগামী দিনে অভিবাসন বিভিন্ন ইস্যুতে কঠোরতা আরোপের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই ভবিষ্যতে এই ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন কমিউনিটি নেতারা।

(ঢাকাটাইমস/২২জানুয়ারি/জেবি)