ঢাকা দক্ষিণ সিটির ২৭ নম্বর ওয়ার্ড

মাদক ও জলজটমুক্ত ওয়ার্ড গঠন করতে চান সাগর

প্রকাশ | ২২ জানুয়ারি ২০২০, ১৯:২৩

বোরহান উদ্দিন

পুরান ঢাকার হোসেনি দালান, বকশিবাজার ও আশপাশের এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৭নম্বর ওয়ার্ড। ওয়ার্ডজুড়ে দিনভর চলছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর বাইরে এখানে কাউন্সিলর পদে স্বতন্ত্র লড়ছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাগর আহমেদ শাহীন।

ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত সাগর লালবাগ থানা ছাত্রলীগের ১১ বছর সভাপতি ছিলেন। মহানগর ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদে ছিলেন। ছিলেন আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ সম্পাদক। বর্তমানে রহমতুল্লাহ মডেল হাইস্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি। বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ্ রেজিস্টার কল্যাণ সমিতির কেন্দ্রীয় মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

কাউন্সিলর হিসেবে নতুন প্রার্থী হলেও এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছেন সাগর আহমেদ। যানজট, বৃষ্টি হলে জলজট ও মাদকের বিস্তারকে এলাকার মূল সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে এর সমাধান করে পরিচ্ছন্ন ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তিনি। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী কথা বলেছেন সাগর আহমেদ শাহীন। ব্যাডমিন্টন প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন তিনি।

নির্বাচনে কেন আসলেন?

যারা ছাত্র রাজনীতির মধ্য দিয়ে হাতেখড়ি হয় তাদের মধ্যে নির্বাচন করার একটা বাসনা সবসময়ই থাকে। কারণ জনপ্রতিনিধি হতে পারলে মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ তৈরী হয়। তবে এবার মূলত ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের সর্বস্তরের মানুষের ভালোবাসায় নির্বাচনে আসতে হয়েছে। কারণ তারা পরিবর্তন চান।

কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছি। এলাকার আবাল-বৃদ্ধ- বনিতা সবাই আমার জন্য কাজ করছেন। আশা করি শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সব কার্যক্রম শেষ হবে। সবার মুখে ব্যাডমিন্টন প্রতীকের কথা। আশা করি আমাদের অবস্থা ভালো। শেষটাও ভালোই হবে। 

অন্য প্রার্থীর থেকে আপনাকে কেন ভোটাররা বেছে নেবে?

দীর্ঘদিন ছাত্র রাজনীতি করেছি। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় এবং অন্যান্য সময়ে একাধিকবার হামলার মুখে পড়েছি। গুলি খেয়েছি। বলতে পারেন মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। এই এলাকার সাংসদ হাজী সেলিম যখন একশো মামলার আসামি তখন আমার বিরুদ্ধে প্রায় অর্ধশতাধিক রাজনৈতিক মামলা ছিলো। জননেত্রী শেখ হাসিনার সকল আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভুমিকা পালন করেছি। একসময় সারা বাংলাদেশে লালবাগ থানা ছাত্রলীগকে এক নামে চিনতো নেতাকর্মীরা।

দলের জন্য ত্যাগ স্বীকারের প্রশ্নে আপোষহীন ছিলাম এখনো আছি। যা হাইকমান্ড থেকে তৃনমূলের নেতকর্মীরা জানেন। আর সমাজসেবার প্রশ্ন করলে একুটু বলতে পারি জনপ্রতিনিধি না হয়েও এলাকাবাসীর বিপদে-আপদে সবসময় এগিয়ে এসেছি। যে কারণে ভোটাররা তাদের সুচিন্তিত ভোট দেয়ার সময় এসব বিষয় বিবেচনা করবেন। 

সদ্য সাবেক যিনি কাউন্সিলর তাকে আমরাই নির্বাচিত করেছিলাম। কিন্তু তিনি কতটা প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পেরেছেন তা খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন। তাই মনে করি এবার সবাই পরিবর্তন চান।

দলের প্রার্থী আছেন, আপনিও প্রার্থী হলেন কেন?

এলাকার ভোটারদের অনুরোধে সমাজের জন্য কাজ করার চিন্তা থেকে নির্বাচন করেছি। আর দল থেকে কিন্তু বলা হয়নি নির্বাচন করা যাবে না। সব  থেকে বড় কথা এলাকার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সবাই আমার সঙ্গে কাজ করছেন। দিনরাত প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাই আমি তো আওয়ামী লীগের বাইরের কেউ নই।

ওয়ার্ডের মূল সমস্যা কি আর সমাধানে কি করবেন?

আমি মনে করি এলাকায় যানজট, বৃষ্টি হলে রাস্তায় পানি জমে যাওয়া বড় একটি সমস্যা। এরবাইরে মাদক এবং মশার সমস্যা নিয়ে মানুষের দুশ্চিন্তা আছে। এগুলো সমাধান করতে চাই সবার আগে। এজন্য যা করতে হয়, যেখানে যেতে হয় তাই করবো। মশা নির্মূলে অভিযান সবসময় চলবে।

এলাকার গণমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ওয়ার্ডকে পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন রাখা ও ডেঙ্গুমুক্ত করতে মনিটরিং সেল করা হবে। রাস্তাঘাট সংস্কারে নিয়মিত নজরদারি রাখা হবে। পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। যানজট নিরসনের জন্য স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করবো। যাদের পারিশ্রমিক ব্যক্তিগত তহবিল থেকে দেয়া হবে। শুধু তাই নয়, এলাকার জনগণ যাতে নিজের সমস্যার কথা সরাসরি বলতে অপারগ হলে অভিযোগ বক্স থাকবে। তাতে অভিযোগ লিখে রেখে দিলে পরে আমরা সেই অনুযায়ি সমাধানে কাজ করবো।

এই এলাকায় আলিয়া মাদরাসা মাঠ ছাড়া খেলাধুলা করার কোনো জায়গা নেই। এলাকার তরুণদের মাদকের হাত থেকে রক্ষা করতে খেলাধুলা করা খুব জরুরী। এই মাঠটি নিয়ে কারা অধিদপ্তরের সঙ্গে একটা সমস্যা চলছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিটি করপোরেশনের সহায়তায় মাঠটি উদ্ধার করা হবে। এছাড়াও এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় ঐতিহ্যবাহী পঞ্চায়েত আধুনিক ও শক্তিশালী করা হবে।

ঢাকাটাইমস/২২জানুয়ারি/বিইউ/ডিএম