সুন্দরবনের গহীনে ভাসমান বিওপি পরিদর্শনে বিজিবির ডিজি

প্রকাশ | ২২ জানুয়ারি ২০২০, ২৩:১৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

সুন্দরবনের গহীন অরণ্যের জল সীমান্তে অবস্থিত ভাসমান বিওপি পরিদর্শন করলেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের  (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম।

বুধবার দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে বিজিবির খুলনা সেক্টরের নীলডুমুর দুইটি ব্যাটালিয়নের রিভারাইন বর্ডার গার্ড কোম্পানির অধীনের আঠারবেকি ও কাঁচিকাটা ভাসমান বিওপি এবং কৈখালী বিওপি পরিদর্শন করেন তিনি।

বিজিবি জানায়, দেশের মোট ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার বিস্তৃত সীমান্ত এলাকার মধ্যে ২৪৩ কিলোমিটার জলসীমা রয়েছে যার মধ্যে ১৮০ কিলোমিটার জলসীমা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে অবস্থিত। চোরাকারবারীরা প্রতিনিয়ত রুট পরিবর্তন  করে নৌ-পথকেও বেছে নিচ্ছে। তাছাড়া বনদস্যু ও জলদস্যুরা সুন্দরবনসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জলসীমান্তে নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে। এই বিস্তৃত জলসীমায় বিজিবির পর্যাপ্ত জলযান, ভাসমান বিওপি এবং জনবল না থাকায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সুন্দরবনের এই গহীন অরণ্যের জল সীমান্তে যথাযথ নজরদারি ও অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটছে। তাই জলসীমায় বিজিবির সক্ষমতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে বিজিবি কাজ করে যাচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে এই অঞ্চলে আরও দু’টি ভাসমান বিওপি স্থাপন করা হবে। মহাপরিচালকের এই পরিদর্শনের মাধ্যমে প্রস্তাবনাধীন দুইটি নতুন ভাসমান বিওপি স্থাপনের জন্য স্থান নির্বাচনের কাজ সম্পন্ন হলো।

বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম জানান, মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম বিজিবি মহাপরিচালক হিসেবে যোগদানের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন দুর্গম সীমান্তের বিওপি এবং সেখানকার সীমান্ত ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আঠারবেকি ও কাঁচিকাটা ভাসমান বিওপি এবং কৈখালী বিওপি পরিদর্শন করলেন। পরিদর্শনকালে খুলনা সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আরশাদুজ্জামান খান সহ বিজিবির অন্যান্য কর্মকর্তা এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি আরো বলেন, পরিদর্শনকালে বিওপির অপারেশনাল কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা আরও উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন মহাপরিচালক। তিনি সেখানে নিয়োজিত সকল বিজিবি সদস্যদের কুশলাদি সরেজমিনে জিজ্ঞাসা করেন। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও দক্ষতা ও সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি বিজিবি সদস্যদের অভিনন্দন জানান। একইসাথে তাদেরকে দেশপ্রেম, শৃঙ্খলা, সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে সীমান্ত রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব পালনের জন্য বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন। 

বিজিবি জানায়, বর্তমান সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বিজিবির এয়ার উইং সৃজিত হয়েছে এবং দুটি হেলিকপ্টার কেনা হয়েছে। এই হেলিকপ্টারের মাধ্যমে দুর্গম বিওপিগুলোকে বিভিন্ন ভাবে সহায়তা দেওয়া  আরো সহজ হবে। তাছাড়া জলসীমান্তের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং সুন্দরবন ও সেন্টমার্টিনসহ বাংলাদেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের আগ্রাসন রোধে নজরদারি বৃদ্ধি, নিজস্ব জল সীমানায় আধিপত্য বিস্তার ও অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিজিবির সাংগাঠনিক কাঠামোতে চারটি হাইস্পীড ইঞ্জিন বোট, দুইটি ফার্স্ট ক্রাফট ও একটি লজিস্টিক শিপ কেনার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এতে বিওপিসমূহের অপারেশনাল দক্ষতা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা বর্তমানের চেয়ে অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। 

ঢাকাটাইমস/২২ জানুয়ারি/এএ/ইএস