এনবিআরের ‘অতি লোভীদের’ বিরুদ্ধে কঠোর হবো: চেয়ারম্যান

প্রকাশ | ২৩ জানুয়ারি ২০২০, ১৫:৫৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অতি লোভী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান  আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। বলেছেন, ‘সরকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেক সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, তারপর  মানে নেই অতি লোভী হওয়ার।’ এনবিআরে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সততা আনতে যতটুকু কঠোর হওয়া প্রয়োজন সেটা হবেন বলেও জানান নতুন এই চেয়ারম্যান।

বৃহস্পতিবার সেগুন বাগিচায় এনবিআরের সম্মেলেন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন। ২৬ জানুয়ারি কাস্টমস  দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে আমাদের ভালো উদাহরণ সৃষ্টি করতে হবে। সেইভাবে কাজ করতে হবে। প্রচুর হয়েছে ব্যক্তি উন্নয়ন। এখনতো অভাব-অনটন সেই পরিমাণ নেই যে অস্বচ্ছ হতে হবে। সরকার বেতন থেকে শুরু করে অবসরকালে সুযোগ-সুবিধা যেগুলো দেয় যথেষ্ট ভালো। একজন সরকারি কর্মকর্তাকে স্বচ্ছ থাকতে হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে চেয়্যারম্যান বলেন, ‘জিরো টলারেন্স এটা ফাঁকা বুলি, মিষ্টি মিষ্টি কথা। দেখা যায় যে,  জিরো টলারেন্স বলে সেটা বাস্তবায়ন করতে পারে না, ম্যান্টেন হয় না। জিরো টলারেন্সের কথা বলে নিজেই একটা  অপকর্ম করে বসে। জিরো টলারেন্স বলে জনপ্রিয় হওয়ার জন্য।  আমি চাইবো এই সেক্টরে (এনবিআর) আমাদের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সততা আনতে। এটা আনার জন্য আমাকে যতটুকু কঠোর হতে হবে আমি ততটুকু হবো। আপনারা সহোযোগিতা করবেন।’

সবাইকে  দেশকে নিয়ে ভাবার তাগিদ দিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই দেশের উন্নয়ন নিয়ে চিন্তা করা উচিত, ব্যক্তি উন্নয়ন নয়।  প্রচুর হয়েছে ব্যক্তি উন্নয়ন। ব্যক্তি ‍উন্নয়ন করতে করতে আগামী প্রজন্মের সামনে কোনো একটা ভালো দৃষ্টান্ত করতে পারছি না, কোনো একটা ভালো জিনিস আপগ্রেট করতে পারছি না।’

‘আমাদের সন্তানরা বাবা-মায়ের দিকে যখন তাকায় তখন দেখে তাদের ভেতরে কোনো আদর্শ নেই। তার প্রতিবেশীদের মধ্যে কোনো অদর্শ নেই। একটা লোককে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করবো তেমন লোক দেখে না। এই সমস্যা তৈরি হয়ে আছে, এটি জাতির জন্য ভালো বিষয় নয়।’

‘সবাই মিলে পরবর্তী প্রজন্মের সামনে একটা ভালো দৃষ্টান্ত তৈরি করে যেতে হবে আমাদের। দেশ উন্নত চাই কিন্তু সেটা শুধু অর্থনৈতিকভাবে নয়। এটা মিন করে চিন্তায়-চেতনায়। ভালো চিন্তা-চেতনায় কালচারে সব দিক দিয়ে উন্নত একটা জাতি হতে হবে। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে আমাদের উদাহরণ সৃষ্টি করতে হবে।’

এনবিআর নিয়ে পরিকল্পনার বিষয়ে জানাতে গিয়ে নতুন এই চেয়্যারম্যান বলেন, ‘দেশের অনেক সেক্টরে অনেক কিছু ইনোভেটিভ করার সুযোগ রয়েছে। এই (এনবিআর) সেক্টরেও আছে। রাজস্ব আহরণ নির্বিঘ্ন করা ও বৃদ্ধি করার জন্য কী কী পদ্ধতি বা কী কী ইনোভেশন করা যায় সেটা চেষ্টা থাকবে।’

এনবিআর নিয়ে ব্যবসায়ীদের অভিযোগের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে চেয়্যারম্যান বলেন, ‘কোনো ভ্যাট ট্যাক্স যদি না দেওয়া যায় তাহলে ব্যবসাবান্ধব হয়ে যাবে। যেই ভ্যাট ট্যাক্স দিতে হবে তখন ব্যবসাবান্ধব হলো না, ব্যবসা শেষ- এটা চিরায়িত অভিযোগ। এটা থাকবেই। আমরা চেষ্টা করি কোন সেক্টরের ব্যবসার কোন ধরনের পরিবেশ সৃষ্টি করা যায়। এর জন্য ভ্যাট ট্যাক্সের হার কী হওয়া উচিত চিন্তা করেই এটা করা হয়।’

আগামী ২৬ জানুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস’ উপলক্ষে সেদিন সকাল সাড়ে ৭টায় রাজস্ব ভবনের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য র‌্যালি শুরু হবে। এছাড়া সেমিনার ও মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান এনবিআর চেয়ারম্যান। 

(ঢাকাটাইমস/২৩জানুয়ারি/জেআর/জেবি)