শহীদ পরিবারের বাড়ি দখল: আসামি জাবেদের জামিন

প্রকাশ | ২৩ জানুয়ারি ২০২০, ১৮:২৬

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

জাল দলিল তৈরি করে পুরান ঢাকার বংশালে শহীদ পরিবারের বাড়ি দখলের অভিযোগে দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার আসামি শেখ মো. জাবেদ উদ্দিনের জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ এ জামিনের আদেশ দেন।

বৃহস্পতিবার আসামি জাবেদের পক্ষে অ্যাডকোতেট শাহিনুর ইসলাম আসামির জামিন আবেদন করে শুনানি করেন।

আসামি পক্ষ শুনানিতে দাবি করেন, ক্রয় সূত্রে আসামি এ জমির মালিক। সরকার যখন এ জমি পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করে তখন আসামি পক্ষ মালিকানার দালিল দিয়ে দেওয়ানি আদালতে মামলা করেন। সেই দলিল মূলেই মামলায় রায় পেয়েছেন আসামিরা। এখন সেই দলিল জাল বলে দুদক মামলা করেছে। দলিল জাল প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত মামলা করার কোনো সুযোগ নেই। ওই সময় দুদকের পক্ষের প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীরকে বিচারক বলেন, যে দলির মূলে রায় পেয়েছে। সেখানে এ ফোরামে অপনারা দলিল জাল বলার কে? ভুল ফোরামে মামলা করেছেন। শুনানি শেষে আদালত জামিন মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত বছর ২২ ডিসেম্বর দুদকের ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাউদ্দিন এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় জামিনপ্রাপ্ত জাবেদ উদ্দিন ও মিরাজ মো. জাকির উদ্দিনকে আসামি করা হয়। গত ৩ জানুয়ারি আসামি জাবিদ অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হন। পরে গত ৭ জানুয়ারি তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোসহ রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওই রিমান্ড শেষে গত ১৪ জানুয়ারি তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে কারাগারে থাকা জাবেদ বৃহস্পতিবার জামিন পেলেন।

দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে জাল দলিল তৈরি করেন। সেগুলোর ব্যবহার করে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে জমা দিয়ে শহীদ পরিবারকে বরাদ্দ দেয়া জমি দখল করে নেন। রাজধানীর ২২১ নবাবপুর এলাকায় অবস্থিত ওই জমির ওপর থাকা তিনতলা ভবন ভেঙে নতুন বহুতল ভবনের বেজমেন্ট তৈরির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। বর্তমান মৌজা মূল্য অনুসারে ওই জমির দাম দুই কোটি টাকারও বেশি।
আরও বলা হয়, ঢাকার নবাবপুর রোডের ওই জমি সরকারি অর্পিত সম্পত্তি। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জমিটি শহীদ পরিবারের সদস্য একেএম শামসুল হক খানের মা মাসুদা খানমকে বরাদ্দ দেয়া হয়। ওই সম্পত্তি বর্তমানে শহীদ পরিবারের সর্বশেষ সদস্য আজহারুল হক খানের নামে আছে। যা ভোগদখলে থাকা অবস্থায় শেখ মো. জাবেদ উদ্দিন ও তার সহযোগিরা জালিয়াতির মাধ্যমে জয়দেবপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে একটি দলিল তৈরি করেন। ওই ভুয়া দলিলের গ্রহীতা ননী গোপাল বসাকের মৃত্যুর পর তার ছেলে তপন কুমার বসাক সম্পত্তির মালিক হন মর্মে দাবি করা হয়।

উল্লেখ থাকে যে, এই বাড়ি দখলে মো. জাবেদ উদ্দিনদের সহায়তার অভিযোগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ওয়ারি জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইব্রাহিম খানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।

ঢাকাটাইমস/২৩জানুয়ারি/ইএস