গরু চুরি ঠেকাতে রাতভর নির্ঘুম পাহারা

আতাউর রহমান সানী, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
| আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২০, ০৯:৫০ | প্রকাশিত : ২৪ জানুয়ারি ২০২০, ০৯:২৫
ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপশহরসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে গরু লুটের হিড়িক পড়ে গেছে। ধারালো অস্ত্র নিয়ে ডাকাতরা বসতবাড়িতে হানা দিয়ে লুট করে নিয়ে যাচ্ছে কৃষকদের গরু। প্রায় প্রতিদিনই ডাকাতদল হানা দিচ্ছে গ্রামগুলোতে। এতে নিজের পালের গরু তুলে দিতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা। এ কারণে কৃষকরা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। গরুসহ জানমাল রক্ষায় রাতভর পাহারা দিয়ে যাচ্ছেন।

এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার দাউদপুর ও রূপগঞ্জ ইউনিয়ন এলাকাটি কৃষিনির্ভর। এ দুটি ইউনিয়নের মানুষ কৃষি ও সবজি চাষের ওপর নির্ভর ছিল। পূর্বাচল উপশহর গড়ে উঠার পর থেকে নিজের বা অন্যের প্লটে ঘর নির্মাণ করে স্থানীয় অনেকেই বসবাস করে আসছেন। আর বেশিরভাগ কৃষক গরু পালন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।

বিশেষ করে ২ নম্বর সেক্টরের সিটি মার্কেট, সুলফিনা, আলমপুর, হারারবাড়ি, পর্শি, পাঁচবাগ দড়িগুতিয়াবো বাজার, গোপিন্দপুর, কামতা, গোয়ালপাড়া, ধামছি, গুচ্ছগ্রাম, কালনি, ফেরচাইত, জিন্দাসহ বেশ কয়েক গ্রামে এখন গরু লুট আতঙ্কে কৃষকরা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

গত এক মাসে বাগবেড় সিটি মার্কেট এলাকার মোতালিব মিয়ার দুটি গরু, রহিম মিয়ার দুটি গরু, আলমপুর এলাকার মোমেন দেওয়ানের তিনটি গরু, ধামছি এলাকার গাফ্ফার মিয়ার সাতটি গরু, কুমারটেক এলাকার মোহাম্মদ আলীর বাড়ি থেকে ছয়টি গরু, গোয়ালপাড়া এলাকার ফাইজ উদ্দিনের দুটি গরু, সেরাজ উদ্দিনের দুটি গরু, ৯ নম্বর সেক্টরের ফেরচাইত এলাকার আওলাদ হোসেনের দুটি গরু, সুলফিনা এলাকার জাইদুল মিয়ার তিনটি গরু, আলম মিয়ার একটি গরু, রত্না আক্তারের তিনটি গরুসহ আরও বেশ কয়েকজন কৃষকের গরু লুট করে নিয়ে গেছে। গরুগুলো লুট করে নিয়ে যাওয়ার কারণে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন তারা।

কৃষকরা অভিযোগ করে জানান, পূর্বাচল উপশরের ভেতরে থাকা এলাকাগুলোতে যোগাযোগব্যবস্থা অনেকটা ভালো। প্রশস্ত সড়ক হওয়ায় ডাকাতরা অতি সহজেই গাড়ি নিয়ে এসে ডাকাতি করে চলে যেতে পারে। পুলিশের পক্ষ থেকে তেমন কোনো টহলব্যবস্থা না থাকায় গরু লুটের ঘটনা ঘন ঘন ঘটছে। ইতোপূর্বে গরু লুট চক্রের সক্রিয় সদস্য রানা ভূঁইয়ার বিচার করেন এলাকাবাসী। চুরির অভিযোগে জেলহাজতে পাঠানো হয় গোয়ালপাড়া এলাকার জাকির হোসেন ওরফে জামাই জাকিরকে। আরও কয়েকজনকে গরু লুটের ঘটনায় আটক করে পুলিশে সোপর্দ করলেও গরু লুট বন্ধ করা যাচ্ছে না।

ফেরচাইত এলাকার আওলাদ হোসেন বলেন, ট্রাক বা পিকআপে করে অস্ত্রসহ ডাকাতরা গ্রামগুলোতে হানা দিচ্ছে। পূর্বাচলে অল্পসংখ্যক বাড়িঘর হওয়ায় কৃষকরা বাধা দিতে সাহস পায় না। অস্ত্রের ভয় দেখালে কৃষকরা নিজের পালিত গরু দিয়ে দিতে বাধ্য হয়।

রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জসিম উদ্দিন বলেন, গরু চুরি বা লুটের অভিযোগ কেউ করেনি। এছাড়া পূর্বাচল উপশহরের এলাকাগুলোতে ফাঁকা ঘরবাড়ি। পুলিশি টহল ব্যবস্থা রয়েছে। টহলব্যবস্থা আরো বাড়ানো হবে। তবে চুরি, ডাকাতি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধে পুলিশকে এলাকাবাসীর সহযোগিতা করতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :