‘উন্নয়ন সহযোগীরা আমাদের পেছনে টাকা নিয়ে ঘুরছে’

প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০২০, ১৩:১৪

নিজস্ব প্রতিবদেক, ঢাকাটাইমস

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ বলেছেন, উন্নয়ন সহযোগীরা সবাই ঋণ দিতে আগ্রহী। এখন তারা আমাদের পেছনে টাকা নিয়ে ঘুরছে। ইআরডি সচিব বলেন, আমরা সব টাকাই নিচ্ছি না। দেশের স্বার্থকে সামনে রেখে আমরা পরিকল্পনা করে কাজটা করছি।

শুক্রবার রাতে নগরীর বিয়াম মিলনায়তনে এক সম্মেলনে এসব কথা বলেন ইআরডি সচিব। ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বিসিএস অফিসার্স ফোরাম’ এ সম্মেলনের আয়োজন করে। জাবির প্রায় দুই হাজার প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা সম্মেলনে অংশ নেন। মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সচিব, উপাচার্য থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন খাতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন এসব শিক্ষার্থী।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বিসিএস অফিসার্স ফোরামের সভাপতি ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মনোয়ার আহমেদ।

ইআরডি সচিব বলেন, আমাদের এবারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) স্লোগান ‘অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’। আমাদের এই বছর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রায় ৭১ হাজার কোটি টাকা। আমরা ইতোমধ্যেই সেই পরিমাণ অর্থের কাছাকাছি অর্জন করতে পেরেছি। আমার দায়িত্ব বৈদেশিক সহায়তা আনা। বাংলাদেশ এখন তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। এখন মানুষ আমাদের পেছনে টাকা নিয়ে ঘুরছে।’

মনোয়ার আহমেদ বলেন, ‘এবার প্রথমবারের মতো আমরা ২ লাখ কোটি টাকার এডিপির ‘ল্যান্ডমার্ক অতিক্রম’ করেছে। অর্থবছরের ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকার এডিপির মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার ৯২১ কোটি টাকা ও বিদেশি উৎস থেকে ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার যোগান ধরা হয়েছে। আমরা ৭১ হাজার কোটি টাকা অর্জনের দ্বারপ্রান্তে।’

ইআরডি সচিব জাবি ক্যাম্পাস জীবনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমাদের প্রাণের টানের অপর নাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যাম্পাসে তাপস নামেই বেশি পরিচিত ছিলাম। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের আল বেরুনি হলে থাকতাম। প্রধানমন্ত্রী যখন এই দেশে পা রাখেন, তখন আমার দায়িত্ব এসেছিল আর বেরুনি হলের ছাত্রলীগের নেতৃত্বকে ধরে রাখা। আমি দায়িত্ব নিয়েছিলাম। পরপর তিন বছর হলের ছাত্রলীগের জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমি সরকারি চাকরিতে এসেছি।

আমরা সরকারি চাকরিতে যারা উচ্চপর্যায়ে রয়েছি, সবাই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ দেশকে স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার। এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি। আমরা যে যেখানেই অবস্থান করি না কেন, সরকারের প্রতি সবার দায়িত্ব-দেশ গড়তে হবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য তার হাতকে শক্তিশালী করা। সৎভাবে আমাদের মেধা দক্ষতা দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

ইআরডি সচিব বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করে গিয়েছেন। আমি সেই দিনও আমাদের গ্রামের এক অনুষ্ঠানে বলেছি বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়ে আমাদের বাপ চাচারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন। সেই জন্যই আজকে আমরা সচিব। বা সে জন্যেই আজকে আমরা এই পদে আছি। বঙ্গবন্ধুর  সুযোগ্যকন্যা আহবানে আমাদের নতুনভাবে যুদ্ধে নামতে হচ্ছে, এই যুদ্ধের নাম সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ। আমরা বিভিন্ন যায়গায় আছি। আমাদের সবার সুযোগ রয়েছে যে যেখান থেকে কাজ করি সেখান থেকে দায়িত্ব পালন করা।

মনোয়ার আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু যেমন সোনর বাংলা নির্মাণের স্বপ্ন দেখিয়ে গেছেন তার কন্যা তার হাল ধরেছে। তেমনি আমাদের এককভাবেও আমাদের নিজের ঘর থেকে শুরু করা উচিৎ। এই দেশকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা আমাদের যার যার কর্তব্য পালন করবো।

সম্মেলন উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই এসেসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির।

সম্মেলনে সংগঠনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বিসসিএম ফোরামের সাধারণ সম্পাদক পুলিশ সুপার আব্দুল আহাদ।

(ঢাকাটাকাইমস/২৫জানুয়ারি/জেআর/এমআর)