গুণগতমানের শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে: ইউজিসি চেয়ারম্যান

প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০২০, ১৮:২১ | আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২০, ১৮:৫৫

যশোর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

গুণগতমানের শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ। তিনি বলেছেন, এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভাব নেই। কিন্তু গুণগতমানের শিক্ষা নেই। এখন আমাদের গুণগত মানের শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে।

রবিবার দুপুর যবিপ্রবির ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ এসব কথা বলেন।

এর আগে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ২০২০ পালন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পিঠা উৎসব, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সড়কে আল্পনা আঁকা, কেককাটাসহ নানা আয়োজন করা হয়।

শিক্ষাকে বাণিজ্যিকিকরণ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, ‘ইভিনিং কোর্স বন্ধ করতে হবে। সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের নিজেদের স্বার্থের জন্য শিক্ষার্থীদের কষ্ট দিতে পারি না। এটা শিক্ষকদের ভূমিকা হতে পারে না। সমাজে শিক্ষকদের সঠিক ভূমিকা রাখতে হবে। তাহলে গুণগতমানের শিক্ষা ফিরে আসবে। আগের দিনের মতো শিক্ষকদের মান-মর্যাদা ফিরে আসবে। যেভাবে আমাদের শিক্ষকেরা সম্মান পেতেন, আমরা সেভাবে সম্মান পাব। এ জন্য শিক্ষকদেরই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।’

সভাপতির বক্তব্যে যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, অপরাজনীতিমুক্ত শিক্ষা ও গবেষণা সহায়ক পরিবেশের কারণেই যবিপ্রবি আজকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য আমরা চাকরি চাইব না, চাকরি দেব।

তিনি বলেন, যে কর্মকাণ্ড জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের পরিপন্থি, যা সোনার বাংলা গড়ার পথে অন্তরায়। যে কর্মকাণ্ড ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়ে দেশকে পিছিয়ে দেয়, দুর্নীতি-সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেয়- আমি তাকে রাজনীতিই মনে করি না।

তিনি বলেন, ‘র‌্যাগিং নামক জঘণ্য মানসিক বৈকল্যকে এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরতরে নির্মূল করা হয়েছে। তারপরও র‌্যাগিংয়ের মতো ভয়াবহ ব্যধিতে কেউ জড়িত থাকলে বা সহযোগিতা করলে, তাকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের প্রচলিত আইনে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হবে। পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ, স্নেহ এবং সম্মানই হবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যকার সম্পর্কের ভিত্তি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, প্রশাসনসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সব সদস্য, অ্যালামনাইবৃন্দ এবং সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। একইসঙ্গে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন উৎকর্ষের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘ভুল বন্ধুদের সংস্পর্শে যাবে না। মাদকে জড়াবে না। জঙ্গিবাদে জড়াবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এগুলোর বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। সুতরাং তোমরা এগুলো থেকে দূরে থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সবসময় পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- যবিপ্রবির ট্রেজারার অধ্যাপক আব্দুল মজিদ, ডিনস কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আনিছুর রহমান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড.  ইকবাল কবীর জাহিদ, রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আহসান হাবীব, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মীর মোশাররফ হোসেন, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারি, কর্মচারী সমিতির সভাপতি এসএম সাজেদুর রহমান, সাবেক শিক্ষার্থী সঞ্জয় ব্যানার্জি বাপ্পা, যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের নেতা আফিকুর রহমান অয়ন ও সোহেল রানা, পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী নাজনিন সুলতানা প্রমুখ।

আলোচনা সভা পরিচালনা করেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের সহকারী পরিচালক এসএম সামিউল আলম ও ফারহানা ইয়াসমিন।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ও মার্কেটিং বিভাগের ‘স্মার্ট ক্লাস রুম’ উদ্বোধন করেন ইউজিসির চেয়ারম্যান। একইসঙ্গে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টার, হ্যাচারি অ্যান্ডওয়েট ল্যাব, শেখ রাসেল জিমনেসিয়ামসহ বিভিন্ন গবেষণাগার ঘুরে দেখেন। 

(ঢাকাটাইমস/২৫জানুয়ারি/কেএম/এলএ)