করোনাভাইরাস: পশুপাখি বিক্রি বন্ধ, শীতকালীন খেলা বাতিল

প্রকাশ | ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ১৫:৫২ | আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ১৬:১৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা চীনে হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে চীনা সরকার করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ২০টি শহরে গণপরিবহন, সংশ্লিষ্ট এলাকার মন্দির বন্ধের পাশাপাশি পর্যটন গন্তব্য ‘নিষিদ্ধ শহর’ ও গ্রেট ওয়ালের একটি অংশও বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড়া রোববার নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে পশু-পাখি বিক্রির ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। 
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, গত শনিবার থেকে চীনে সপ্তাহব্যাপী লুনার নিউ ইয়ার (চান্দ্রবর্ষ) শুরু হচ্ছে। আশক্সক্ষা করা হচ্ছে, চান্দ্রবর্ষের ছুটিতে এক স্থান থেকে অন্যত্র ভ্রমণের কারণে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ আশক্সক্ষায় অনেক শহরে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ফলে ৫ কোটির বেশি মানুষ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। 
 
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, রোববার দেশটির জাতীয় শীতকালীন খেলা স্থগিত করা হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে শীতালীন খেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ২০২২ সালের শীতকালীন অলিম্পিক খেলার পূর্বে উক্ত খেলাকে প্রাক-প্রস্তুতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।  
 
রোববার পর্যন্ত নোভেল করোনা ভাইরাসে (২০১৯-এনসিওভি) আক্রান্ত হয়ে চীনে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬ জনে। ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৯৮৫ জন এবং আরও দুই হাজার ৬৮৪ জন আক্রান্ত হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্চেছ। 
 
চীনা টেলিভিশন জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৈঠক করেছেন। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, তার দেশ ‘গুরুতর পরিস্থিতি’ মোকাবিলা করছে।
 
নিহতদের সকলেই চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের। সেখানেই সর্বপ্রথম এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। এরই মধ্যে উহানের বাসিন্দাদের বাইরে কোথাও যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন।
 
হুবেই প্রদেশের প্রায় ২ কোটি মানুষকে অন্যদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে। উহানের সঙ্গে বিমান ও রেল যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যাতায়াত বন্ধ রয়েছে বেশিরভাগ সড়কেও।
 
উহানের সর্বত্র ফেইসমাস্ক বাধ্যতামূলক করা হয়েছে; কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে শহরটি একটি ভূতুড়ে নগরীতে পরিণত হয়েছে বলে বাসিন্দারা বিবিসিকে জানিয়েছেন।
 
চীনের স্বাস্থ্য কমিশনই জানিয়েছে, কেউ উহানে যাবেন না। যারা উহানে রয়েছেন, তারা শহর ছাড়বেন না। যদিও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এমন কোনও সার্বিক নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি। ইতিমধ্যেই সেদেশের ১৩টি প্রদেশে ও তাইওয়ানে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাসের সংক্রমণ। পরিস্থিতি নিয়ে জেনেভায় বৈঠকও করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
 
চীনে মারাত্মক আকার ধারণ করলেও অন্যান্য দেশে এখন পর্যন্ত মাত্র ১৩ জনের শরীরে ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়ায় পরিস্থিতিকে এখনই ‘বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা’ হিসেবে ঘোষণা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।  
 
“ভুল করবেন না। চীনে জরুরি অবস্থা সৃষ্টি করলেও এটি এখনি বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেনি, তবে হয়ে উঠতে পারে,” বলেছেন ডব্লিউএইচও-র প্রধান টেড্রস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস। 
 
চীনের বাইরে থাইল্যান্ডেই সবচেয়ে বেশি চার জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান মিলেছে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান এবং দক্ষিণ কোরিয়াতেও।
 
(ঢাকাটাইমস/২৬জানুয়ারি/আরআর)