নবজাতকের বাবার খোঁজে পুলিশ

প্রকাশ | ৩০ জানুয়ারি ২০২০, ২৩:১৭

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

একজন ভবঘুরে পাগলির সাথে অনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করে তার গর্ভে সন্তান ধারণ করিয়েছে কে- সেই প্রশ্নের উত্তর মিলছে না। তাই প্রশ্নের উত্তর মেলাতে সেই বাবাকেই এখন খুঁজছে তাহিরপুর থানা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার সকালে ফুটফুটে একটি মেয়ে সন্তান ভূমিষ্ট হয়েছে। শুধু আজেই নয় এই পাগলী তিন বছর পূর্বে আরেকটি কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছে। পাগলি মা তিন বছরের ব্যবধানে পরপর দুটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়ে পৃথিবীর আলো দেখালেও সেই সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের কোন হদিস মিলছে না। এ নিয়ে যেন কারো মাথা ব্যথা নেই। 

বাবা ছাড়া সন্তান হতে পারে না। কেউ না কেউ তার সাথে অনৈতিক সর্ম্পক করেছে। যার ফলে এই সন্তান। আর কে করেছে এমন কাজ- এ নিয়ে উপজেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে সকালে তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট বাজারের বাদামপট্টিতে।  

এই খবর পেয়ে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যনার্জি খোঁজ খবর নেন। পরে তিনি পাগলির শিশু কন্যার পিতৃ পরিচয় খুঁজে বের করতে পুলিশকে নির্দেশনা দেন।

জানা গেছে, উপজেলার বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাট বাজারে বাদাম পট্টিতে দীর্ঘদিন ধরে ভবঘুরে হয়ে অবস্থান করে আসছিলেন এই পাগলি। এক প্রর্য়ায়ে প্রায় ৩০ বছর বয়সী ওই পাগলি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। সকাল ৮টার দিকে বাজারের পরিচ্ছন্ন কর্মী হাফিজ উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে রেখে তার বাড়িতে থেকে পাগলি ফুটফুটে এক শিশু কন্যা প্রসব করেন। আর এই ডেলিভারির কাজটি করেন রাবেয়া বেগম। পরে নানানজনের নানান কথায় রাবেয়া বেগম ও পরিচ্ছন্ন কর্মী হাফিজ বিকাল সাড়ে ৩টার বাজার বণিক সমিতির মাধ্যমে মা ও নবজাতককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবার জন্য নিয়ে যান। 

পাগলি ও বাচ্চাসহ তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসাসেবার পর মা ও নবজাতক ভাল আছেন বলে জানান চিকিৎসক নিলুফার ইয়াসমিন।

রাবেয়া বেগম জানান, ওই পাগলির আগে লাবিবা (৩) নামে মেয়ে রয়েছে। এই মেয়েটি একইভাবে ভূমিষ্ট হলে আমি নিঃসন্তান হওয়ায় আমার নিজের মেয়ের মত করে নিজ দায়িত্বে ভরণপোষণ করে বড় করছি। এই শিশুটিকে আমিই নিতে চাই। কারণ আগের শিশুটি আমাকেই মা বলে জানে।

বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুক মিয়া বলেন, যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে- তা আমাদের সবাইকে খুব লজ্জার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। 

তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিকুর রহমান জানান, কিছুদিনের জন্য রাবেয়া বেগমের কাছে সদ্য ভূমিষ্ট ওই শিশু কন্যার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কারণ এর আগে জন্ম নেওয়া শিশুটি তার কাছেই বড় হচ্ছে। এরপরও সবার সাথে কথা বলে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কি করা যায়। এছাড়াও এ নবজাতক শিশু কন্যার পিতৃ পরিচয় শনাক্ত করতে পুলিশি তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান ওসি।

(ঢাকাটাইমস/৩০জানুয়ারি/এলএ)