যেমন ছিলো ঢাকা দক্ষিণের ভোটের চিত্র

প্রকাশ | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২৩:৩০

বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস

সকাল সাড়ে আটটার পর আর কে মিশন রোডের শহীদ শাহজাহান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দেন ঢাকা দক্ষিণের বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেন। এরপর ছুটে বেড়িয়েছেন এই কেন্দ্র থেকে অন্য কেন্দ্রে। নিজের পোলিং এজেন্ট সব ঠিক আছে না, ভোটের সার্বিক পরিস্থিতি দেখার জন্য শুরু থেকে ভোটের শেষ সময় পর্যন্ত নিজ এলাকায় চষে বেড়িয়েছেন তিনি। এরমধ্যে কেন্দ্র দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগ শুনলেই সেদিকে ছুটেছেন ইশরাক। সঙ্গে তার ছোট ভাইসহ ছিলেন গণমাধ্যমকর্মীরা।

রবিবার সকাল থেকে বিকাল চারটা অবধি ইশরাক হোসেনের সঙ্গে প্রায় ২০টি কেন্দ্রে ঘুরে দেখা গেছে, কেন্দ্রের সামনে ও ভেতরে অননুমোদিত মানুষে ছয়লাব। কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা নেই কারো। ভোটার ছাড়া অন্যদের কাউকে বাধা দিতে দেখা যায়নি।

এ সময় বেশিরভাগ কেন্দ্রে ছিলো না ধানের শীষের কোনো এজেন্ট। কোথাও আবার এজেন্ট বের করে দেয়া হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায়। তবে ধানের শীষের প্রার্থী কেন্দ্রে ঢোকার পর ছুটে আসতে দেখা গেছে বের করে দেয়া এজেন্টদের।

এসব কেন্দ্রে ইশরাক হোসেন প্রিজাইডিং ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বের করে দেয়া এজেন্টদের বুথে বসার ব্যবস্থা করেছেন। কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।

দিনভর টিকাটুলীর সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ, কামরুন্নেসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্বামীবাগ উচ্চ বিদ্যালয়, করাতিটোলা সি.এম.এস মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, রায়েবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাজারীবাগের লেদার টেকনোলজি ইনস্টিটিউট, সূত্রাপুর কমিউনিটি সেন্টার, জুবলী স্কুল, ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব, জুরাইন শেখ কামাল উচ্চ বিদ্যালয়, পোস্তাগোলার নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ভাষা প্রদীপ উচ্চ বিদ্যালয়,শ্যামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শ্যামপুর মডেল স্কুল এন্ড কলেজে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। 

সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজে দেখা গেছে, একটি বুথ ছাড়া কোথাও বিএনপির এজেন্ট নাই। তাদের কয়েকজন যুবক এসে বের করে দিছে বলে ইশরাককে জানান। পরে তিনি পুলিশ এবং প্রিজাইডিং কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এজেন্টদের ঢোকার ব্যবস্থা করেন।

কেন্দ্রে ছিলো না তেমন কোনো ভোটার।  বাইরে ছিলো নৌকার প্রার্থীর ব্যাজ পরিহিত লোকজনের ব্যাপক ভিড়।

স্বামীবাগ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্ট বের করে দেওয়া হয় এমন অভিযোগ শুনে সেখানে গিয়ে ঘটনার সত্যতা মিলে। ভোটারদেরও কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেয়া দেওয়া হচ্ছিল। পরে ইশরাকের উপস্থিতিতে ভোট দিতে আসেন ভোটাররা।

এছাড়া এই কেন্দ্রসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে ভোটারদের হয়রানি করার তথ্য পাওয়া গেছে।

কয়েকজন ভোটার অভিযোগ করেন যখন তারা ভোট দিতে ভিতরে প্রবেশ করেন তখন তাদের এ কক্ষ না সে কক্ষে বলে বারবার ঘুরানো হয়।

স্বামীবাগ কেন্দ্রে প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে ভোটাররা অভিযোগ করেন, এক ব্যক্তি গোপন কক্ষে অবস্থান করে সকলের ভোট দিয়ে দিচ্ছেন। পরে সাংবাদিকদের সামনে ইশরাক হোসেন সেই ব্যক্তিকে কাজ না করার আহ্বান জানালেন তিনি প্রতিশ্রুতি দেন পরবর্তীতে আর তিনি এ ধরনের কোনো কাজ করবেন না।

পরে সেখান থেকে তিনি করাতিটোলা সি.এম.এস মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, রায়েবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেদার টেকনোলজি ইনস্টিটিউট কেন্দ্রও পরিদর্শনে যান।

এসব কেন্দ্রে দেখা গেছে, বেশিরভাগ জায়গায় বিএনপির এজেন্ট ছিলো না। আর কেন্দ্রের ভেতরে বাইরে প্রচুর অঅনুমদিত লোকজনের আনাগোনা।

ধানমন্ডির একটি কেন্দ্রে দেখা গেছে, মহিলা কেন্দ্রে পুরুষ থাকা যাবে না বলে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলরের পাঁচজন এজেন্টকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, অথচ মহিলা কেন্দ্রে পুরুষ এজেন্ট থাকতে পারবে।  পরে ইশরাকের উপস্থিতি সেই এজেন্টদের ঢোকার ব্যবস্থা করা হয়।

এসব কেন্দ্রেও দেখা গেছে কেন্দ্রের ভিতরে বহিরাগত লোকজন যে যার মতো ঘুরছেন। কিন্তু কেউ তাদের বাধা দেয়নি।

(ঢাকাটাইমস/০১ফেব্রুয়ারি/বিইউ/ইএস)