ওমানে নিহতদের তিনজন মৌলভীবাজারের

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২১:২৯ | প্রকাশিত : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২১:২৩

ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চারজনের মধ্যে তিনজনের বাড়ি মৌলভীবাজারে। কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ও হাজীপুর ইউনিয়ন এবং কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নে তাদের বাড়ি।

রবিবার স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে ৪টায় ওমানের আদম এলাকায় এই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রবাসীদের মাধ্যমে মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে নিহত তিনজনের গ্রামের বাড়িতে শুরু হয় শোকের মাতম।

জানা যায়, কাজ শেষে বাইসাইকেলে করে বাসায় ফেরার সময় দ্রুতগতির প্রাইভেটকারের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই চার বাংলাদেশির মৃত্যু হয়।

মর্মান্তিক এ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে মৌলভীবাজারের তিনজন হলেন- কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বিলেরপার গ্রামের লিয়াকত আলী (৩৫), শরীফপুর ইউনিয়নের সঞ্জরপুর গ্রামের সবুর আলী (৩৩) ও কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের চিতলীয়া বাজারের টিলালাইন এলাকার আলম আহমদ (৩৫)। অপর বাংলাদেশির পরিচয় পাওয়া যায়নি।

ওমানের কর্মরত লিয়াকত আলীর শ্যালক জসিম উদ্দীন মোবাইল ফোনে জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলেই তিনজনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। তবে তিনি জানান, আরও দুজন নিহত হয়েছেন, তাদের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি।

কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের নিহত আলমের ছোট ভাই ওয়াসিম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার বড় ভাই পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার আশায় বাড়িতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে রেখে ধার-দেনা করে ছয় মাস আগে ওমানে যান। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস পরিবারের স্বচ্ছলতার জায়গায় আজ আহাজারির মাতম।’

নিহতের স্ত্রী নাসিমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘প্রবাস আমার সংসার জীবনকে তছনছ করে দিয়েছে। ধারদেনা করে আমার স্বামী বিদেশে গিয়েছিলেন পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে। এখন এই ধারদেনা কীভাবে পরিশোধ করবো।’

নিহত আলম আহমদের পরিবারেও চলছে কান্নার রোল। স্থানীয় ইউপি সদস্য শামীম আহমদ জানান, আব্দুল বাছিতের ছেলে আলম আহমদ পাঁচ মাস আগে ওমানে যান। তার স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তার মৃত্যুর সংবাদে গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের লিয়াকত আলীর চাচা মাসুদুর রহমান জানান, বিলেরপার গ্রামের মুসলিম আলীর ছেলে লিয়াকত প্রায় চার বছর আগে ওমানে যান। তার স্ত্রী ও নয় বছর বয়সের এক সন্তান রয়েছে। সেখানে কনস্ট্রাকশনের কাজ করে পরিবার চালাতেন লিয়াকত। পাসপোর্ট নবায়ন করে দুই মাস পরে দেশে আসার কথা ছিল। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে লিয়াকত সবার ছোট। তার মৃত্যুতে পরিবারে গভীর শোক বিরাজ করছে।

কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের সঞ্জরপুর গ্রামের নিহত সবুর আলীর মামাতো ভাই কামাল খান বলেন, ‘গ্রামের আব্দুস শহীদের ছেলে সবুর আলী ১০ বছর ধরে ওমান ছিল। দুই বছর আগে দেশে আসে একবার। কিছুদিন থাকার পর আবার ওমান পাড়ি জমায়। তার মা আছেন, বাবা নেই। চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে সে তৃতীয়। নিহত সবুরের দুই মেয়ে এক ছেলে রয়েছে। তার গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।’

হাজীপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চু বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের লিয়াকত আলীসহ নিহত তিনজনের লাশ যাতে তাড়াতাড়ি দেশে ফিরে আসে, সে জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

(ঢাকাটাইমস/০৩জানুয়ারি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :