‘নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিতে মিডিয়ার সচেতনতা প্রয়োজন’

প্রকাশ | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২২:২২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

নারীবান্ধব সমাজ গঠনে বিদ্যমান সংস্কৃতি পরিবর্তনের জন্য মিডিয়া এবং চারপাশের মানুষকে একত্রিত হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। বলেছেন, বাংলাদেশের জন্য নারীর ক্ষমতায়ন ছাড়া ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-এসডিজি অর্জন সম্ভব নয়। লিঙ্গভিত্তিক সমতা অর্জনে নারীর অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়ন জরুরি। এজন্য সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ডেইলি অবজারভার আয়োজিত ‘নারীর ক্ষমতায়নে সরকার ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ও ডিবিসি নিউজের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী এতে সভাপতিত্ব করেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সেলিমা আহমেদ এমপি, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির পরিচালক ফারজানা নাহিদ, বাংলাদেশ মহিলা সমিতির সহ-সভাপতি ডা. মারুফি খান, নারী উদ্যোক্তা সংগঠনের সভাপতি নিলুফার আহমেদ করিম, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক প্রমুখ।

মূল প্রবন্ধে ইউএনডিপি'র ওমেন্স ইকোনোমিক এমপাওয়ারমেন্ট স্পেশালিস্ট শারমিন ইসলাম জানান, এসডিজি-৫ বাস্তবায়নে এখনো অনেক পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ।

অনুষ্ঠানে অন্য বক্তারা নারীর ক্ষমতায়নে সরকারের নানা উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও এগিয়ে আসার তাগিদ দেন।  তারা বলেন, এক্ষত্রে গণমাধ্যমেরও বড় ভূমিকা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারী ক্ষমতায়নে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন উল্লেখ করে ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, ‘তিনি নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংবিধানে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেছেন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে নারীরা আজ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন।’

ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা বলেন, সরকার দেশের এক কোটি নারীকে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্ষমতায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।

তিনি নারীর ক্ষমতায়নে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি দেয়া হচ্ছে।

দেশের ৬৪ জেলায় কিশোর-কিশোরী ক্লাব তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাল্যবিবাহ বন্ধে আইন করা হয়েছে। আগের তুলনায় এখন বাল্যবিবাহ কমেছে। সরকারের পাশাপাশি নারী সংগঠনগুলোর নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় এবং বাল্যবিবাহ বন্ধে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

বিভিন্ন গার্মেন্টস অনেক নারী কাজ করেন উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের বেতন বৃদ্ধি করেছেন। কমিউনিটি ক্লিনিক করে স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দিয়েছেন। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানান তিনি।

ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার পথিকৃৎ। প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বের কারণে নারীরা আজ দেশের বিচার বিভাগ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনীসহ বিভিন্ন থেকে নারীদের ক্ষমতা বিস্তার লাভ করেছে। এসডিজি বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে নারীর ক্ষমতায়ন আরও জোরালো হবে।

সেলিমা আহমেদ বলেন, দেশে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকারের আন্তরিকতার অভাব নেই। এজন্য সরকারের পাশাপাশি নারী সংগঠনগুলোর কাজ করতে হবে। বিশেষ করে নারী নির্যাতনকারীদের বিচার এবং তাদের সাজা নিশ্চিত করতে হবে।

ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় পুরুষদের এগিয়ে আসতে হবে। পুরুষদের সহযোগিতা পেলে নারীরা আরও এগিয়ে যাবে। দেশের সার্বিক উন্নয়নে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

(ঢাকাটাইমস/০৫ফেব্রুয়ারি/জেআর/জেবি)