দেশের অর্থনীতি এখন খারাপ অবস্থায়: অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৭:৩০

দেশের অর্থনীতি এখন খারাপ অবস্থায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তবে বছর শেষে এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল) এর ম্যানেজারদের বার্ষিক কনফারেন্স অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, এই মুহূর্তে সারা বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে দিয়ে চলছে। কোনো দেশেই আমদানি-রপ্তানি সঠিকভাবে হচ্ছে না। আমদানি-রপ্তানি কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশের কিছু সেক্টরে এর প্রভাব পড়েছে। তবে আশা করি বছর শেষে এই সেক্টরগুলোর আর পিছিয়ে থাকবে না। আমদানি-রপ্তানির অবস্থা ভালো হয়ে যাবে।

ব্যাংক খাতের অবস্থাও খুব ভালো নয় ইঙ্গিত করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকগুলো যদি ভালো চলতো, তাহলে ব্যাংকগুলোকে মার্জ করতে হতো না।

মুস্তফা কামাল বলেন, ১৯৯৭ সালে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির অবস্থা খারাপ ছিল। এরপর ২০০৯ সালে দ্বিতীয় দফায় খারাপ অবস্থার সৃষ্টি হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী দূরদর্শিতার কারণে এখন সেই অবস্থা থেকে উত্তোরণ হয়েছে। দেশের অর্থনীতির ভিত গড়ে উঠেছে। এ কারণেই গত ১০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি সারাবিশ্বে রোল মডেল হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি একজন ব্যবসায়ী। কিন্তু আমি ঋণ খেলাপি নই। আপনাদের (কর্মকর্তা) বিতরণকৃত ঋণ খেলাপি হয়ে যাওয়ার কারণে সংসদে আমাকে গালি শুনতে হয়। আপনারা বলেন, এটা কি আমার জন্য হয়েছে? আপনাদের জন্য না? কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রশ্ন রাখেন অর্থমন্ত্রী।

বিডিবিএলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনাদের মধ্যে সবাই খারাপ রয়েছেন তা বলবো না। কিছু সংখ্যক লোক রয়েছে যারা খারাপ। বাংলাদেশ ব্যাংক, কিংবা অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আগে, নিজেরা নিজেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। শাস্তি দিন। কারণ খারাপ কর্মকর্তাদের জন্য যখন ঋণ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন পুরো ব্যাংককেই এর ভুক্তভোগী হতে হয়। আর আপনাদের কারণে সংসদে আমাকে গালি শুনতে হয়।

বিডিবিএল ব্যাংকের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মুস্তফা কামাল বলেন, শিল্পখাতে অবদান রাখার জন্য এই ব্যাংকের সৃষ্টি। শিল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্থান তৈরি করার জন্য আপনারা জাতির কাছে দায়বদ্ধ। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা, মালিকানা ও দেখাশোনাসহ সব কিছুর দায়িত্ব আপনাদের।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, বিতরণকৃত ঋণ যেন খেলাপিতে পরিণত না হয়, সেজন্য গুণগত ঋণ বিতরণ করুন। বর্তমানে বিডিবিএলের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩৮ শতাংশ, যা মোটেও কাম্য নয়। আগামী বছরে ২০ শতাংশের নীচে নামিয়ে আনার চেষ্টা করবেন। এই মুহূর্তে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি খুবই কম। তবে এপ্রিল মাসে সব ধরনের ঋণে সুদহার ৯ শতাংশে নেমে আসলে বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলে জানান গভর্নর।

সভাপতির বক্তব্যে বিডিবিএলের চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন বলেন, আমাদের অতীত ইতিহাস সুখকর নয়। ২০১৯ সালে পরিচালন মুনাফা কমে দাঁড়িয়েছে ৪০ কোটি টাকা। আগের বছরের (২০১৮) পরিচালন মুনাফা ছিল ১১৭ কোটি টাকা। পুরনো গ্রাহকদের ফিরিয়ে আনতে চাই। এই মুহূর্তে মূল সমস্যা উচ্চ খেলাপি ঋণ। পাশাপাশি রয়েছে দক্ষ জনবলের অভাব।

ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী আলমগীর বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের ব্যাংকের মোট শাখা ৪৬টি। ২০২২ সালের মধ্যে আরও ২০টি শাখা খোলার পরিকল্পনা নিয়েছি। আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য মোবাইল ব্যাংকিং, এটিএম বুথ এবং এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করার চিন্তাভাবনা চলছে।

এ সময় তিনি জানান, ভবিষ্যতে নতুন করে ঋণ খেলাপি তৈরি হতে দেওয়া হবে না।

ঢাকা টাইমস/ আরএ/ ০৬ ফেব্রুয়ারি

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :