ভোলায় গৃহবধূ হত্যার অভিযোগ
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় যৌতুকের দায়ে পারভিন বেগম (১৯) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী মো. সোহাগের বিরুদ্ধে। সোহাগ ও তার পরিবারের লোকজন ওই গৃহবধূকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন নিহতের ভাই মো. শাহিন।
এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। নিহত পারভিন তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আড়ালিয়া গ্রামের মো. মুজাহার বেপারীর মেয়ে।
বুধবার রাতে বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের চকডোস গ্রামে তার শ্বশুর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত পারভিন বেগমের ভাই মো. শহিন অভিযোগ করে বলেন, চার মাস আগে বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া উইনিয়নের চকডোস গ্রামের তাজুল ইসলামের দিনমজুর ছেলে মো. সোহাগের সঙ্গে পারভিন আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় সোহাগ দেড় লাখ টাকা যৌতুক দাবি করলে তারা নগদ এক লাখ টাকা দেয়। বাকি ৫০ হাজার টাকা পরে দিবে বলে। বিয়ের কিছুদিন পর এ টাকার জন্য পারভিনকে চাপ দেন সোহাগ। কিন্তু এ টাকা দিতে না পারায় সোহাগ বিভিন্ন সময়ে পারভিনকে মারধর করতে থাকে। এমনকি কয়েকবার টাকার জন্য মারধর করে পারভিনকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে। পরে স্থানীয়রা শালিশ করে আবার পারভিনকে সোহাগের বাড়িতে পাঠায়।
সর্বশেষ বুধবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে সোহাগের মা শেফালী বেগম তাদের ফোন করে পারভিন বিষ খেয়ে মারা গেছে বলে খবর দেয়। তারা এসে পারভিনকে সোহাগের বাড়িতে না পেয়ে বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে খোঁজ নেয়। সেখানেও না পেয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে তারা বোরহানউদ্দিন থানায় যায়। থানায় মামলা করতে চাইলে পুলিশ তাদের প্রায় দুই ঘণ্টা বসিয়ে রেখে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠায়।
শাহিন আরো জানায়, পারভিনের স্বামী সোহাগ ও শাশুড়ি শেফালী বেগম পারভিনকে যৌতুকের জন্য মারধর করে হত্যা করে বিষপানের নাটক সাজিয়েছেন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আমরা মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি।
তারা এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। সেই সঙ্গে সোহাগ ও তার পরিবারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দাবি করেন তারা।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত সোহাগের মোবাইলে ফোন করলে তার মা শেফালী বেগম জানান, এ ঘটনার সময় তিনি এবং তার ছেলে সোহাগ ঘরে ছিলেন না। তারা রাত ৮টার দিকে ঘরে এসে দেখেন পারভিন বেগম বিষ খেয়েছে। তখন তিনি পারভীনকে প্রথমে বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে নিয়ে যান। পরবর্তীতে রাতেই সেখান থেকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। পরে তিনি পারভিনের পরিবারকে বিষয়টি জানায়।
শেফালী বেগম আরো বলেন, মাঝে মধ্যে সোহাগ ও পারভিনের মধ্যে ঝগড়া হতো। এতে তিনি সোহাগকে রাগারাগি করতেন। তবে পারভিন কেনো বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে সেটি তিনি জানেন না।
বোরহানউদ্দিন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল কাদের বলেন, লাশের সুরতহাল রিপোর্ট ও হাসপাতালের তথ্য মতে পারভিন বেগম বিষ পান করে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রমাণিত হয়েছে। তাই এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। তবে কেনো আত্মহত্যা করেছে সেটি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে বলা যাবে। তবে তাকে কেউ হত্যা করেনি বিধায় আমরা হত্যা মামলা নিতে পারব না। আমরা একটি লোককে কেনো শুধু শুধু হত্যা মামলার আসামি করব।
(ঢাকাটাইমস/৬ফেব্রুয়ারি/কেএম/এলএ)