সাত মাসে রাজস্ব খাতে প্রবৃদ্ধি ১২ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশ | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৯:৩৮ | আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৯:৪৩

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রাজস্ব আহরণ গত বছরের (জুলাই ২০১৯-জানুয়ারি ২০২০) তুলনায় এখন পর্যন্ত ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে শেষে সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী এসব কথা জানান। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিটির আহ্বায়ক মুস্তফা কামাল।

র্অথমন্ত্রী বলেন, প্রবৃদ্ধি হিসাব হবে গত বছর এ সময়ে আমরা কী অর্জন করেছি এবং এ বছর কেমন অর্জন করলাম। কিন্তু এ বছর যদি কম হয়, তাহলে দ্যাট ইজ নেগেটিভ গ্রোথ। আর যদি গত বছরের তুলনায় বেশি করি, তাহলে পজিটিভ গ্রোথ। আমার জানা মতে, এ বছর ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন আছে।

সভায় রাশিয়া থেকে এক লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানির প্রস্তাবসহ মোট সাতটি ক্রয়প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৮০৬ কোটি ৭৪ লাখ ১০ হাজার টাকা।

রাজস্ব ঘটতি বাড়ছে সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয় বড় আকারের, যাতে এটি অর্জন করার জন্য সবাই চেষ্টা করে।

ব্যাংক কোম্পানি আইনের খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে যে, প্রাইভেট ব্যাংকের ডিরেক্টর, এমডি, ডিএমডি নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে অ্যাপ্রুভ করলে তাদের নিয়োগ হবে। এ সংক্রান্ত ধারা সংযুক্ত হচ্ছে, এ বিষয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, খসড়া ব্যাংকিং কোম্পানি অ্যাক্টের নতুন ধারা আছে একটি। এটি আমি এখনও পাইনি। আমার কাছে খসড়া এলে বলতে পারবো। যদি এটি হয় তাহলে ভালো হবে বাস্তবায়ন করা গেলে। সরকারি ব্যাংকের ক্ষেত্রে এভাবেই অনুমোদন নিয়ে করা হয়।

তিনি বলেন, ‘আমাদের ব্যাংকিং কোম্পানি আইন বিদ্যমান আছে। এখানে কিছু অ্যামেনমেন্ট আনতে হবে এ আইনে। পুরো আইন চেঞ্জ করতে হবে না। প্রপোজাল এলে আমিই নিয়ে যাবো কেবিনেটে। সেখানে আলোচনা করে কেবিনেট যেগুলো গ্রহণ করবে সেগুলোই সংসদে অনুমোদনের জন্য যাবে, সেটাই নিয়ম।’

প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রাশিয়ার জেএসসি ফরেন ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশন প্রোডিনট্রং ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)'র মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় এক লাখ ৮০ হাজার মেট্রিকটন মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সরকারের ব্যয় হবে ৩৯০ কোটি ৭৬ লাখ ১৫০৫০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের বাজার মূল্য ২৫৫ দশমিক ৫৫ মার্কিন ডলার। প্রস্তাবটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘গোপালগঞ্জে অ্যাসেনসিয়াল ড্রাগস লিমিটেডের (ইডিসিএল) তৃতীয় প্রকল্প সিভিল কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড প্লামবিং ওয়ার্ক এর আওতায় নন টেন্ডার আইটেমের ভেরিয়েশন কাজের প্রস্তাব অনুমোদন। প্রকল্পটি নির্মাণকাজ চলাকালে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনা মোতাবেক ডিজাইন, ড্রইং, অনুযায়ী কাজের উপযোগিতা, সৌন্দর্য ও গুণগতমান বৃদ্ধি করাসহ কিছু নন টেন্ডার আইটেমের কাজ যুক্ত হওয়ায় ভেরিয়েশন বাবদ ৫ কোটি ১২ লাখ ৫৭ হাজার ৬৮৬ টাকা ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল চুক্তিতে ছিল ৯৭ কোটি ২১ হাজার ৫১৫ টাকা।

সর্বমোট প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১০২ কোটি ১২ লাখ ৭৯ হাজার ২০১ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে এসেনসিয়াল ড্রাগস লিমিটেডের (ইডিসিএল)। বৈঠকে অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো, নেত্রকোণা- কেন্দুয়া -আঠারবাড়ী- ঈশ্বরগঞ্জ জেলা মাহসড়ক উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পটির পূর্ত কাজের প্রস্তাব অনুমোদন। যৌথভাবে কাজটি পেয়েছে তাহের ব্রাদারস লি. রানা বিল্ডারস প্রাইভেট লিমিটেড ও মাঝাহার এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড। এতে মোট ব্যয় হবে ১১৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।

 

এলজিইডি কর্তৃক গৃহীত জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় ‘ক্লাইমেট রিসাইলেন্ট লোকাল ইনফ্রাস্টাকচার সেন্টার’ এর জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন। যৌথভাবে এ্যামবেরো কনসালটিং জিএমবিএইচ লিড পার্টনার, কমো কনসাল্ট পার্টনার, ট্রেনিং অ্যান্ড টেকনোলজি ট্রান্সফার লিমিটেড পার্টনারকে ( সাব কন্ট্রাক্টর প্রাণোন গ্লোবাল লিমিটেড) পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৬৭ কোটি ১৮ লাখ ৮২ হাজার ৮৯২ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।

একই প্রকল্পের আওতায় অপর একটি প্রস্তাবে ম্যানেজমেন্ট, ডিজাই অ্যান্ড সুপারভিশনের জন্য পরামর্শক নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন। যৌথভাবে ফার্ম জিআইটিইসি-আিজিআইপি জিএমবিএইচ ( লিড পার্টনার), রিসোর্স প্লানিং এন্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্স লিমিটেড এবং ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালটেন্স লিমিটেড কে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৭৪ কোটি ৪১ লাখ ৩৫ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা। এ ছাড়া শর্তসাপেক্ষে ঢাকা ওয়াসার আওতাধীন ঢাকা ওয়াটার সাপ্রাই নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের একটি প্রকল্পে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রস্তাব সায় দিয়েছে সরকার। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ।

(ঢাকাটাইমস/১৩ফেব্রƒয়ারি/জেআর/ইএস)