মেলার সব তথ্য নিয়ে ‘ডিজিটাল তথ্যকেন্দ্র’

প্রকাশ | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২১:২৯

মনিরুল ইসলাম, ঢাকাটাইমস

জমে উঠেছে দেশের লেখক-প্রকাশক-পাঠকদের নিয়ে সবচেয়ে বড় আয়োজন অমর একুশে বইমেলা। প্রতিদিন বাড়ছে নতুন বই এর সংখ্যা। দিন যতই যাচ্ছে বাড়ছে পাঠক এবং দর্শনার্থীর সংখ্যাও। এবারের মেলার আর্কিটেকচার ডিজাইন হয়েছে যেমন স্বস্তিদায়ক তেমনি দর্শণার্থীদের পুরো মেলার তথ্য দিতে রয়েছে ডিজিটাল তথ্যকেন্দ্র।

এতে মেলার স্টল ম্যাপ, মেলায় আসা বিভিন্ন নতুন ও পুরাতন বইয়ের তথ্য, প্রকাশনীসহ সকল স্টলের তথ্যাদি, বিভিন্ন লেখকের প্রকাশিত বইয়ের নামসহ বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন অনলাইন সেবা সম্পর্কে ধারণা পাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এর উদ্যোগে বাংলা একাডেমি অংশে নজরুল মঞ্চের পাশে স্থাপন করা হয়েছে এই ডিজিটাল তথ্যকেন্দ্রটি।

রাতুল নামের এক ভদ্রলোক। ভারতীয় একজন লেখকের বই খুঁজছেন তিনি। তবে ঠিক কোন স্টলে পাওয়া যাবে জানেন না । তথ্য কেন্দ্রে ঢুকে দায়িত্বরত এক স্বেচ্ছাসেবককে বললেন তার প্রয়োজনের কথা। মুহূর্তের ব্যবধানেই পেয়ে গেলেন তার কাঙ্খিত সেই লেখকের বই। জানলেন কোন স্টলে বইটি পাওয়া যাবে এবং স্টলটির অবস্থান সম্পর্কেও। কেমন লাগছে জানতে চাইলে ভদ্রলোক বলেন,  অসাধারণ।  আগে এরকম ছিল না। এখন অনেক উন্নত সেবা পাওয়া যাচ্ছে মেলায়। আমার কষ্ট অনেক বাঁচিয়ে দিয়েছে। 

যে কেউ আমার সরকার বা মাইগভ অ্যাপের মাধ্যমেও এসব তথ্য খুব সহজে পেতে পারবেন বলে জানান স্টলটির স্বেচ্ছাসেবক শাহ আলম। তিনি বলেন, যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের প্লে-স্টোরে গিয়ে মাইগভ কিংবা আমার সরকার লিখে সার্চ দিয়ে অ্যাপটি ডাউনলোড করা যাবে। অ্যাপ থেকে অমর একুশে গ্রন্থমেলার ব্যানারে ক্লিক করে এবারের বইমেলা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে। 

কিশোরদের সাইবার ক্রাইম সম্পর্কে সচেতন করার জন্য তথ্য কেন্দ্রের সামনে আয়োজন করা হয়েছে সাইবার কুইজ প্রতিযোগিতার। ‘সত্য-মিথ্যা যাচাই আগে, ইন্টারনেটে শেয়ার পরে’ প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে কিশোর বাতায়ন ‘কানেক্ট’ এর মাধ্যমে অনলাইনে এই কুইজে অংশগ্রহণ করতে পারছেন শিক্ষার্থীরা। কুইজে বিজয়ীদের জন্য রাখা হয়েছে আকর্ষণীয় পুরস্কারের ব্যবস্থাও । 

মোহাম্মদপুর থেকে এসেছেন রায়হান। তিনি কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জিতে নিয়েছেন পুরস্কার।  অনুভূতি জানিয়ে ঢাকা টাইমসকে রায়হান বলেন, প্রতিবছরই মেলায় আসি। এবারই প্রথম দেখলাম কুইজ প্রতিযোগিতার বিষয়টি। সাইবার জগতে কি করা উচিত কি করা উচিত না এ নিয়েই মূলত কুইজের প্রশ্নগুলো ছিল।  সবার মতো আমিও অংশগ্রহণ করলাম। পুরস্কার পেয়েছি এটা অনেক ভালো লাগছে। 

তথ্য কেন্দ্রের সামনেই  কিশোর ‘বাতায়ন’-এর একটি ফটোবুথ করা হয়েছে। যার মাধ্যমে দর্শনার্থীরা এই ফটোবুথে ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে আপলোড করতে পারছেন। এই হ্যাশট্যাগকে কেন্দ্র করে মেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। তারা জানান, স্টলে আগত দর্শনার্থীরা বিনামূল্যে ১০ এমবিপিএস গতির ওয়াইফাই ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাও পাবেন। 

ডিজিটাল তথ্যকেন্দ্র থেকে দর্শনার্থীরা অন্য কি কি সেবা নিতে পারছে জানতে চাইলে কেন্দ্রের কো-অর্ডিনেটর কামরুর হাসান ঢাকা টাইমসকে বলেন, যে কোনো সমস্যার জন্য ৩৩৩ এই নাম্বারে কল করলে সেবা পাবেন দর্শনার্থীরা। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সেবা পেতে এই নম্বরে কল করলে সহজেই সেবা পাওয়া যাবে ।

ফোনে থানা বা জেলা প্রশাসকসহ স্থানীয় সরকারের যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগ নম্বর চাইলে তাকে ফিরতি এসএমএস এ সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগ নম্বর এবং ই-মেইলের ঠিকানা মোবাইলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত ২০১১ সাল থেকে প্রতিবছর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় ‘ডিজিটাল তথ্যকেন্দ্র’ স্থাপন করে আসছে অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন এবং বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।

ঢাকাটাইমস/১৩ফেব্রুয়ারি/ইএস