জেনেভা ক্যাম্পে মাদক কারবারিদের পুলিশে দিচ্ছে এমআরডিএম

প্রকাশ | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২১:১৭

কাজী রফিক, ঢাকাটাইমস

জেনেভা ক্যাম্পে মাদক কারবার ঠেকাতে সক্রিয় হয়েছে ক্যাম্পভিত্তিক সংগঠন মহাজির রিহেবিলিটেশন ডেভেলপমেন্ট মুভমেন্ট (এমআরডিএম)। ক্যাম্পের মাদকসেবন বন্ধে প্রচারণার পাশাপাশি চিহ্নিত মাদক কারবারিদের মাদকসহ হাতেনাতে ধরে সোপর্দ করা হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে। 

স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস্তানিদের একটি বড় অংশের বসবাস রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে। বলা হয়, দেশের ১১৫টি ক্যাম্প নিয়ন্ত্রিত হয় এই ক্যাম্প থেকে। 

দীর্ঘদিন ধরে নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়ে যাচ্ছে এই ক্যাম্প। স্বাধীনতার পর থেকে এখানে বসবাসকারীদের কেউ কেউ জড়িয়েছেন মাদক কারবারে। মরণ নেশা ইয়াবা বড়ির নিরাপদ সংস্থান হিসেবে পরিচিতি পায় এই ক্যাম্প। পাশাপাশি গাজা, বিভিন্ন ধরনের মদ সহজলোভ্য ছিল জেনেভা ক্যাম্পে। 

বিষয়টি বড় আকার ধারণ করার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে ক্যাম্পের মাদক ব্যবসা। বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে পঁচিশ এর মতো চিহ্নিত মাদক কারবারি। ক্যাম্পটিতে একাধিক অভিযান চালিয়েছে র‌্যাব ও পুলিশ। মাদক কারবারের দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে সাজা দেয়া হয়েছে অনেককে। যাদের অনেকে এখন কারাগারে। তবে সে সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে পালিয়ে গেছে অনেকে। তাদের মধ্যে ইশতিয়াক ও পাকিস্তানি রাজুদের মতো বড় ইয়াবা ব্যবসায়ীরাও রয়েছে, যারা এখনো দূর থেকে ক্যাম্প ও এর আশপাশে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। 

ক্যাম্পবাসীদের মতে, অভিযানের সময় গা ঢাকা দেয়া অনেকেই এখন ক্যাম্পে ফিরেছেন। যারা সপরিবারে ক্যাম্প ছেড়েছিলেন তাদের অনেকে ফিরেছে, কারও পরিবার ফিরেছে। মূল ব্যবসায়ী অনিয়মিত আসা-যাওয়া করছে। 

এসব মাদক কারবারি যেন আবার ক্যাম্পের পরিবেশ খারাপ করতে না পারে, সেজন্য মাদক ও মাদক ব্যবসায়ী উৎখাতে বদ্ধপরিকর ক্যাম্পটির সংগঠন এমআরডিএম। ক্যাম্পের যুবসমাজ থেকে শুরু করে কেউ যেন মাদকের পথে পা না বাড়ায়, সে ব্যাপারে উর্দুভাষীদের সতর্কতা ও সচেতন করে আসছে এই সংগঠন। 

সংগঠনটির সভাপতি ওয়াসি আলম বশির ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন ধরনের মিটিং করছি, মিছিল করছি। মানুষকে মাদক সেবন না করার আহ্বান জানাচ্ছি। সবাইকে সতর্ক করছি। মাদক সেবন বন্ধের পাশাপাশি মাদক বিক্রি বন্ধেও আমরা কাজ করছি।’

ওয়াসি আলম জানান, গত ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি ১০টি ইয়াবাসহ একজনকে এবং ৯৫০ গ্রাম গাঁজাসহ অপর একজনকে আটক করে মোহাম্মদপুর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। 

মাদক বিক্রি রোধে তাদের কাজটা নতুন নয় বলে জানান ওয়াসি আলম। তবে এবার নতুন কিছু বিষয় তারা যুক্ত করেছেন। তিনি বলেন,  ‘যাদের আমরা আটক করব, তাদের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে তা সংগ্রহে রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া কাকে ধরা হলো, তার পরিচয় কী, তার কাছে কী পাওয়া গেছে সব লিখে রাখছি।’

এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘জেনেভা ক্যাম্প থেকে অনেক সময় জানানো হয়, তারা মাদক ব্যবসায়ীদের আটক করেছেন। আমরা গিয়ে ধরে নিয়ে আসি। এছাড়া ক্যাম্পে যেকোনো ধরনের মাদক ব্যবসা প্রতিরোধে আমাদের নিয়মিত নজরদারি রয়েছে।’

(ঢাকাটাইমস/১৪ফেব্রুয়ারি/কারই/মোআ)