৮০০ টাকা বকেয়া থাকায় প্রবেশপত্র কেড়ে নিলেন মাদ্রাসাসুপার!

পিরোজপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২১:৪০

পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় পরীক্ষার ফরম পূরণের টাকা বাকি থাকায় চলমান দাখিল পরীক্ষার এক ছাত্রীর পরীক্ষার প্রবেশপত্র মাদ্রাসাসুপার কেড়ে নিয়ে হল থেকে বের করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারায় শিক্ষাজীবন থেকে নষ্ট হয়ে গেল একটি বছর।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার দিনমজুর পিতা বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অভিযোগ করেন। পরে জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন আগামী তিন দিনের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্তে ভান্ডারিয়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলার নদমূলা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের দিনমজুর মনির হোসেন কবিরাজের মেয়ে সারমিন আক্তার (রোল নং-২৯৪৪১০) এ বছর দাখিল পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার্থী সারমিন রেজিস্ট্রেশনের ২ হাজার ৮০০ টাকার মধ্যে ২ হাজার টাকা জমা দেয়। বাকি টাকা পরীক্ষার ১২ দিনের মধ্যে দেয়ার শর্তে প্রবেশপত্র দেয়া হয়েছিল। তবে, শর্তানুযায়ী চার দিন বাকি থাকলেও নদমূলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার অলিউর রহমান পরীক্ষার ৪র্থ দিন রবিবার (আরবি ২য় পত্র) আল-গাযযালী কামিল মাদ্রাসার পরীক্ষা কেন্দ্রে সারমিনের প্রবেশপত্র কেড়ে নেন।

এসময় অলিউর রহমান বলেন, ‘বকেয়া টাকা দিতে পারিস নাই, তোর আর পরীক্ষা দেয়ার প্রয়োজন নাই- সোজা বাড়ি চলে যা।’

পরীক্ষার্থী সারমিন এসময় সুপারের পা জড়িয়ে কান্নাকাটি করলেও ফিরে পায়নি তার কেড়ে নেয়া প্রবেশপত্র। পরে ছাত্রী মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান খোকনের কাছে বিষয়টি জানালে তিনিও পরীক্ষার্থীকে তিরস্কার করে বাড়ি চলে যেতে বলেন।

নদমূলা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য জিয়াউল হক স¤্রাট বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মাদ্র্রাসাসুপার টাকার জন্য মেয়েটি পরীক্ষা দিতে না পারা কাম্য নয়। তার একটি বছর নষ্ট হয়ে গেল। একজন মাদ্রাসাসুপারের এমন আচরণ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের কাছে দৃষ্টান্তমূল শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।

শিক্ষার্থীর পিতা মনির হোসেন কবিরাজ জানান, রবিবার প্রবেশপত্র নেয়ার পরে সোমবার পরীক্ষা না থাকায় আমি সুপারের কাছে গিয়ে প্রবেশপত্র দেয়ার অনুরোধ করলে তিনি তা দেননি। আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট যাওয়ার কথা বললে সুপার আমাকে বলে ‘যা পার কর’, আমি প্রবেশপত্র দিব না।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাদ্রাসাসুপার অলিউর রহমান মুঠোফোনে জানান, ‘আমি প্রবেশপত্র নেই নাই। মাদ্রাসার কমিটি নিয়ে অনেক দিন দ্বন্দ্ব রয়েছে। ওই শিক্ষার্থীর পরীক্ষা খারাপ হওয়ায় মাদ্রাসা কমিটির কিছু সদস্য আমাকে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র করছে।’

ভান্ডারিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল আলম জানান, শিক্ষার্থী সারমিন আক্তারের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৪ফেব্রুয়ারি/এলএ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :