‘আট আনায় জীবনের আলো কেনা’

বিশেষ প্রতিনিধি, ফরিদপুর
| আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৭:৫৫ | প্রকাশিত : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৬:৫৩

‘আট আনায় জীবনের আলো কেনা’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ফরিদপুরে শুরু হয়েছে বইমেলা। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সপ্তাহব্যাপী এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের অম্বিকা ময়দানে মেলার উদ্বোধন করা হয়। মেলা চলবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত।

মেলায় ফরিদপুর প্রেসক্লাবের একটি স্টলসহ মোট ৩১টি স্টল রয়েছে। স্টলগুলো থেকে বই কেনা ও দেখার সুযোগ আছে।

জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা, জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ঝর্ণা হাসান, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল হাসান খন্দকার, কবি ইকবাল রাশেদীন, কবি শওকত আলী জাহিদ প্রমুখ।

জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে প্রতিবছর এই বইমেলার আয়োজন করা হবে, যা সবশ্রেণির মানুষের সংশ্লিষ্টতার মধ্যদিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে আয়োজিত হবে। এটি ‘ফরিদপুর গ্রন্থমেলা’ নামে প্রতিবছর বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হবে।

অনন্য একটি বিষয় হলো- মেলাটি আয়োজিত হবে শিশু-কিশোরদের দেয়া অর্থে। অনন্য সাধারণ এ উদ্যোগে প্রতিটি শিক্ষার্থী প্রতি মাসে আট আনা চাঁদা দেবে এবং বছরে এভাবে মোট ছয় টাকা চাঁদা দেবে। তাদের অর্থে আয়োজিত হবে একটি চমৎকার বইমেলা। এতে করে ওই সব শিশু-কিশোরদের মধ্যে বিশালতার স্বপ্ন তৈরি হবে এবং তারা দায়িত্বশীল হয়ে বেড়ে উঠবে।

এছাড়া মেলায় বইয়ের পাশাপাশি আলোচনা সভা, বিতর্ক অনুষ্ঠান, সঙ্গীতানুষ্ঠান, নৃত্য ইত্যাদি সাংস্কৃতিক পরিবেশনাও থাকবে।

জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, ‘প্রযুক্তি মানুষকে প্রথাগত পাঠাভ্যাস থেকে দূরে নিয়ে যাচ্ছে। মানুষ ভার্চুয়াল জগতে বিচরণ করছে। ফলে কল্পনার জগতে, মননের জগতে দেখা দিচ্ছে বন্ধ্যাত্ব। সৃষ্টিশীলতার চর্চা হচ্ছে না, সংবেদনশীলতার চর্চা হচ্ছে না, মানবিক মূল্যবোধ সঞ্চারিত হচ্ছে না- নতুন প্রজন্মের মধ্যে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের যে অনুধাবন তা হচ্ছে- একটি আলোকিত প্রজন্ম গড়ে তোলা। একটি আলোকিত প্রজন্মই পারে স্বপ্ন নির্মাণ করতে, স্বপ্নের লালন করতে এবং স্বপ্নের বাস্তবায়ন করতে। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসে কমপক্ষে এক সপ্তাহব্যাপী বইমেলা নিয়মিত অনুষ্ঠিত হবে ফরিদপুরে। সেখানে আরো থাকবে সুস্থ বিনোদন চর্চার সকল ব্যবস্থা। জীবন কোন বদ্ধ জলাশয় নয়, জীবন হচ্ছে বহমান নদীর মতো। কিন্তু পাঠাভ্যাস থেকে দূরে সরে পড়ার কারণে জীবনের এ বহমানতা ভীষণভাবে জরাগ্রস্ত হচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের প্রয়োজন সর্বশক্তি দিয়ে জ্বলে ওঠা। ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং বিশ্বজনীন ধারণাসমূহের চর্চা এ প্রজন্মকে অনেক বেশি দেশাত্মবোধ ও দায়িত্ববোধে উজ্জীবিত করবে- এটা উপলব্ধি করা আমাদের দায়িত্ব।’

প্রশাসক বলেন, ‘আসুন আমরা সবাই মিলে একটি জ্ঞানভিত্তিক প্রজন্ম, সমাজ এবং চেতনা উন্মেষের জন্য সর্বশক্তি দিয়ে এগিয়ে যাই এবং এ আদর্শ বুকে নিয়ে আমরাই পারি সবকিছু বদলে দিতে, আমরাই পারি রাঙা প্রভাত এর শুভ সূচনা করতে। জাগরণের অন্বেষা অনুপ্রবিষ্ট হোক এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে। মুজিববর্ষে আসুন আমরা নতুন প্রত্যয় নিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু করি সকল তমসা, অনাচার, অচলায়তনের বিরুদ্ধে। আসুন আমরা সকলে আট আনায় জীবনের আলো কেনার মিছিলে সমবেত হই।’

এসময় অন্যরা বলেন, ‘বই মানুষের মগজে পুষ্টির জোগান দেয়। আজ মানুষের মধ্যে বই পড়ার প্রবণতা কমে গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, ইন্টারনেটে বেশি আসক্ত হয়ে পড়েছে সবাই। এ প্রবণতা কমিয়ে বই পড়ার ব্যাপারে উৎসাহিত হতে হবে, উৎসাহিত করতে হবে।’

(ঢাকাটাইমস/১৫ফেব্রুয়ারি/পিএল/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :