জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে পুলিশি হামলার ভিডিও প্রকাশ

প্রকাশ | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৪:২৭ | আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৪:৫৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

গত দু’মাস আগে ভারতের দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ করে ছাত্রদের ওপর এলোপাথাড়ি আক্রমণ চালিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত জামিয়া কো-অর্ডিনেশন কমিটির পক্ষ থেকে লাইব্রেরির ভেতরে পুলিশের হামলার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে।

জামিয়া কো-অর্ডিনেশন কমিটির পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়েছে,‘‘এই সিসিটিভি ফুটেজ শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি নৃশংসতার প্রমাণ। এতে প্রমাণিত হয়, কীভাবে রাষ্ট্রের পোষা সন্ত্রাসবাদীরা লাইব্রেরিতে ঢুকে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস অত্যাচার চালিয়েছে।’’

ভিডিওটি প্রকাশের পরে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, তাদের অপরাধ দমন শাখা জামিয়া কাণ্ডের তদন্ত করছে। তারা ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করছে। 

কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এক টুইট বার্তায় দিল্লি পুলিশের সমালোচনা করেছেন। টুইটাকে প্রিয়াঙ্কা লিখেন, ‘‘দেখুন দিল্লি পুলিশ কীভাবে শিক্ষার্থীদের মারধর করছে। একজন হাতে বই তুলে দেখাচ্ছে, তার পরেও তার উপর এলোপাথাড়ি লাঠি চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। অর্থাৎ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং দিল্লি পুলিশের কর্মকর্তারা মিথ্যা বলেছিলেন যে, লাইব্রেরিতে ঢুকে কাউকে মারধর করেননি তারা। এই ভিডিয়ো সামনে আসার পরও জামিয়ার ঘটনায় কারোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করা হলেই, এই সরকারের অভিসন্ধি সকলের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’

গত বছর ভারতের পার্লামেন্টে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) পাস হয়েছে। নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে যারা নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। তাদেরকে ভারতের নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। তবে মুসলিমরা এ নাগরিকত্ব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে।

সিএএ পাস হওয়ার পরে ধর্মের ভিত্তিতে ভারতকে বিভাজনের অভিযোগ ওঠেছিল ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-র বিরুদ্ধে। ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সিএএ বিরোধী তীব্র আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনচলাকালীন গত ১৫ ডিসেম্বর তুমুল বিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে দক্ষিণ দিল্লির জামিয়া এবং ওখলা এলাকা। 

পুলিশ অভিযোগ করে, আন্দোলনকারীরা শতাধিক মোটর বাইকসহ অন্তত তিনটি বাসে আগুনে ধরিয়ে দেয়। তবে কয়েকটি প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ নিজেরাই বাসে অগ্নিসংযোগ, বাইক ও দোকান ভাঙচুর করে। 

পরে জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রাতের অন্ধকারে হামলা চালায় দিল্লি পুলিশ। টানা কয়েক ঘণ্টা হামলা চালালেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। 

মারধরের পাশাপাশি পুলিশ গুলিও ছুঁড়েছিল বলে অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা। প্রাথমিকভাবে দিল্লি পুলিশ গুলির অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরে তারা গুলির কথা স্বীকার করে।

(ঢাকা টাইমস/১৬ফেব্রুয়ারি/আরআর)