আবরার হত্যা

গেজেট প্রকাশ না হওয়ায় চার্জশুনানি ফের পেছাল

প্রকাশ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৩:১৮ | আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৩:২১

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
আবরার ফাহাদ (ফাইল ছবি)

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের গেজেট প্রকাশিত না হওয়ায় ফের অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়েছে। এ মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৮ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আদালত।

সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ নতুন এই তারিখ নির্ধারণ করেন।

শুনানিকালে আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। শুনানির পর তিনি জানান, ছেলে হত্যার চার্জশিট তিন মাস হয়ে গেছে। এখনো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে না যাওয়া এবং মামলার বিচারকাজ শুরু না হওয়া রহস্যজনক।

বরকত উল্লাহ আরও জানান, ‘ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর অফিস থেকে তাকে আসতে বলা হয়েছে মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আবেদন করার জন্য। এজন্য তিনি এসেছেন এবং আবেদন করেছেন।’

এ সম্পর্কে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘ফোন করে এনেছি আবেদনে স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য। তিনি আজ (সোমবার) স্বাক্ষর করেছেন। তাই আশা করি আগামী ধার্য তারিখের মধ্যে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি পাঠানোর প্রজ্ঞাপন হয়ে যাবে।’

এর আগে আজ সোমবার শুনানিকালে বিচারক ইমরুল কায়েশ জানান, মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তাই এ আদালত মামলাটি চার্জশুনানির জন্যই আগামী ১৮ মার্চ তারিখ রাখছেন।

শুনানিকালে আসামিপক্ষের আইনজীবী মাহবুবুর রহমান, আমিনুল গণি টিটো, নজরুল ইসলাম, মঞ্জুরুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু উপস্থিত ছিলেন।

এর আগেও একইভাবে গত ৩০ জানুয়ারি চার্জগঠনের শুনানি পিছিয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করেছিলেন।

মামলাটিতে গত ১৩ নভেম্বর মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. ওয়াহিদুজ্জামান আদালতে দাখিল করেন।

মামলায় কারাগারে থাকা আসামিরা হলেন বুয়েট ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. অনিক সরকার, উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররেফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, মো. মনিরুজ্জামান মনির, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, শিক্ষার্থী মো. মুজাহিদুর রহমান ও এএসএম নাজমুস সাদাত, বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, কর্মী মুনতাসির আল জেমি, গ্রন্থ ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইসাতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, শিক্ষার্থী আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান, শিক্ষার্থী শাসছুল আরেফিন রাফাত, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের তৃতীয় বর্ষে ছাত্র আকাশ হোসেন, শিক্ষার্থী মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, শামীম বিল্লাহ, হোসেন মোহাম্মাদ তোহা, মুয়াজ ওরফে আবু হুরায়রা, বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র মোর্শেদ অমত্য ইসলাম ও এস এম মাহমুদ সেতু। যাদের মধ্যে প্রথম ৮ জন আদালতে স্বীকারোক্তি করেছেন।

অপর তিন আসামি বুয়েটের ইলেকট্রিক এন্ড ইলেকট্রনিক্স বিভাগের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র মুহাম্মাদ মোর্শেদ-উজ-জামান মন্ডল ওরফে জিসান (২২), সিভিল ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম (২০) ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের ছাত্র মুজতবা রাফিদ (২১) পলাতক রয়েছেন।

উল্লেখ্য, আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র ছিলেন। তিনি থাকতেন বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিচতলার ১০১১ নম্বর কক্ষে। গত ৬ অক্টোবর একই হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে তাঁকে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়। রাত তিনটার দিকে হল থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পর তার বাবা বরকত উল্লাহ ১৯ জনকে আসামি করে গত ৭ অক্টোবর সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

ঢাকাটাইমস/১৭ফেব্রুয়ারি/আরজে/এমআর