লেবাননে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে বিদায় সংবর্ধনা

প্রকাশ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২২:২৯

ওয়াসীম আকরাম, লেবানন

দীর্ঘ সাড়ে চার বছর দায়িত্ব পালন শেষে দেশে ফিরে যাচ্ছেন ‘প্রবাসীবান্ধব’ উপাধি পাওয়া রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রদূতকে বিদায় জানাতে গণসংবর্ধনার আয়োজন করে লেবানন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

রবিবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতে আল কোলায় হোটেল রেস্ট প্যালেসে স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় এ অনুষ্ঠান হয়।

লেবাননের কমিউনিটি নেতা মশিউর রহমান টিটুর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার। এতে সভাপতিত্ব করেন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সিরাজুল ইসলাম।

বিশেষ অতিথি ছিলেন, দূতাবাসের প্রধান সচিব (শ্রম) দূতালয় প্রধান আবদুল্লাহ আল মামুন, দূতাবাসের তৃতীয় সচিব আবদুল আল সাফি, আমেরিকান ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ইয়াজ উদ্দিন আহম্মদ।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বিগত সাড়ে চার বছরে আপনাদের মাঝে অনেক বক্তব্য রেখেছি। আজ শেষবারের মত আমি আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। শেষ মুহূর্তে হলেও আপনাদের সবাইকে একত্রিত দেখে আমি খুবই আনন্দিত ও গর্বিত। আজকে সবাই আমাকে যেই সম্মান দেখিয়েছেন, সেটা কোনদিন ভুলতে পারব না। আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি- আপনাদের সেবা দিতে। জানি না, কতটুকু সেবা দিতে পেরেছি।

মানবসেবা করা সবার ভাগ্যে জুটে না। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে আমি এ সুযোগটা পেয়েছিলাম। আমি সবর্দা চেষ্টা করেছি, আপনাদের সমস্যা সমাধানের- কিন্তু জানি না সফল হতে পেরেছি কিনা। প্রতিদিন আমি কমপক্ষে একজনকে সাহায্য করার টার্গেট করে থাকি, কারণ প্রতিদিন একজন করে সাহায্য করতে পারলে মাসে ৩০ জন। আর সেই হিসাবে বছরে ৩৬৫ জনকে সেবা দিতে সক্ষম হব।

পরিশেষে প্রবাসীদের প্রতি অনুরোধ করে তিনি বলেন, আপনারা অপরাধমূলক কাজ থেকে বিরত থেকে দেশের সম্মানটুকু অক্ষুণ্ন রাখবেন। আমি দোয়া করি- মহান আল্লাহ যেন সর্বদা আপনাদের ভালো রাখেন। আপনারাও আমার জন্য ও আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন। দীর্ঘ সাড়ে চার বছরের দায়িত্ব পালনকালে আমি যদি কারো মনে কষ্ট দিয়ে থাকি, আমাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

এসময় বক্তব্য রাখেন- কমিউনিটি নেতা বাবুল মুন্সি, সুফিয়া আক্তার বেবী, মানিক মোল্লা, রুবেল আহমেদ, আবদুল করিম, শরিফ খান, ইমাম হোসেন মিলন, হাবিবুর রহমান হাবিব, মনির হোসেন জয়, শামিম আহমেদ, আলমগীর ইসলামসহ আরো অনেকে।

কমিউনিটির নেতারা বলেন, রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকারের মত পৃথিবীর কোথাও আরেকটি রাষ্ট্রদূত খোঁজে পাওয়া যাবে না। লেবাননে এক লক্ষ ষাট হাজার প্রবাসী বাংলাদেশির মাথার ছায়া ছিলেন রাষ্ট্রদূত। তিনি সর্বদা অসহায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবিভাবক হিসেবে লেবাননের উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিমে বসবাসকারী প্রবাসীর  সুখে-দুঃখে পাশে ছিলেন। এছাড়া কখনো কখনো লেবাননের জেলে বন্দি প্রবাসীদের সুখ-দুঃখ জানার জন্য উপস্থিত হতেন কারাগারে। লেবানিজদের কাছে বাংলাদেশকে পরিচিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। যদিও বাংলাদেশকে লেবার সাপ্লায়ার দেশ হিসেবে জানতেন লেবানিজরা। তিনি যোগদানের পর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সভা- সমাবেশের মাধ্যমে ও সামাজিক- সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে লেবানিজদের বুঝাতে সক্ষম হন- বাংলাদেশ শুধু লেবার সাপ্লায়ার দেশ নয়, ব্যবসা-বিনিয়োগ ও মধ্যম আয়ের একটি দেশ।

এসময়ে লেবানন প্রবাসীদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূতকে ‘সম্মাননা মানপত্র’ প্রদানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন থেকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

মশিউর রহমান টিটু কমিউনিটির পক্ষ থেকে দেয়া মানপত্র পাঠ করে শোনান।

এসময় আর উপস্থিত ছিলেন- দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ, লেবাননে দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস, প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকসহ হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি।

(ঢাকাটাইমস/১৭ফেব্রুয়ারি/এলএ)