পাঠকের চোখ নতুন বইয়ে

তানিয়া আক্তার, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২১:২৯

বইমেলায় প্রতিদিনই আসছে নতুন নতুন বই। প্রকাশকরাও বাঁধাইয়ের কাজ শেষে নতুন বইগুলো স্টলে এনেছেন। ফলে ধুম লেগেছে বেচাকেনার। পাঠকদের প্রতীক্ষা মিটেছে। সন্ধ্যা নামতেই বিক্রয়কর্মীরা প্রায় হাঁপিয়ে ওঠেন পাঠক সামলাতে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায়ও দেখা গেছে সারিবদ্ধ বইপ্রেমীরা ঢুকছেন বইমেলার দুই প্রাঙ্গণে। আর সন্ধ্যা নামতেই স্টলে স্টলে পাঠকের ভিড়। হাতে হাতে নতুন বইয়ের ব্যাগ।

সোহানা লিমা ছয়টি নতুন বই কিনেছেন স্টল ঘুরে ঘুরে। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমার কাছে বইমেলা মানেই নতুন বই। তাই যতটা পারছি কিনে নিয়ে যাচ্ছি।’

স্কুল শিক্ষার্থীরাও এসেছেন দলবেঁধে। কিনেছেন কিশোরদের বই। সবারই ঝোঁক নতুন বইয়ের দিকে। বিভিন্ন রিডিং ক্লাবের সঙ্গে তারা জড়িত। তাই প্রচুর বই পড়তে হয় তাদের।

নতুন বইয়ের মধ্যে ই-কমার্স এবং সাইন্স ফিকশনের বইগুলো বেশি চলছে।

ইত্যাদি প্রকাশনীর প্রকাশক আদিত্য অন্তর ঢাকা টাইমসকে বলেন, 'নতুন বইয়ের মধ্যে ই-কমার্সের বই বেশি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পাঠকদের মধ্যে নতুন বই কেনার প্রতি আলাদা একটা ঝোঁক দেখা গেছে।'

মিজান পাবলিশার্সের প্রধান নির্বাহী মিজানুর রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বইমেলার এই মাঝামাঝি সময়টাতেই বেচাকেনার ধুম লেগে যায়। আর এখন যারা আসছে তাদের প্রায় সবাই নতুন বই কিনছে।’

বাংলা একাডেমির তথ্যমতে, ইতিমধ্যে মেলায় এসেছে দুই হাজার ৬২২টি নতুন বই। এরমধ্যে শুধু বাংলা একাডেমি এককভাবে বিক্রি করেছে এক কোটি নয় লাখ ৭৯ হাজার ৭৩১ টাকার বই।

নতুন বইয়ের মধ্যে গল্প ৩৫১টি, উপন্যাস ৪২২টি, প্রবন্ধ ১৪০টি, কবিতা ৭৫৮টি, গবেষণা ৫০টি, ছড়া ৫১টি, শিশুতোষ ১১৫টি, জীবনী ৮২টি, রচনাবলি চারটি, মুক্তিযুদ্ধ ৯৯টি, নাটক ১৪টি, বিজ্ঞান ৫৪টি, ভ্রমণ ৪৮টি, ইতিহাস ৫৭টি, রাজনীতি ছয়টি, স্বাস্থ্য ১৭টি, বঙ্গবন্ধুর ওপর ৮০টি, রম্য/ধাঁধা ২০টি, ধর্মীয় ১০টি, অনুবাদ ৩০টি, অভিধান আটটি, সায়েন্স ফিকশন ৪৪টি এবং অন্যান্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে ১৬২টি।

এ প্রসঙ্গে কলম প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী জাকিয়া বলেন, মেলার বেচাকেনা বেশ ভালোই চলছে। আশা করছি বিক্রয়ের ধারা অব্যাহত থাকবে।

স্থাপনা ধারণা প্রদর্শনী

অমর একুশে গ্রন্থমেলা উপলক্ষ্যে স্থাপনা ধারণা প্রতিযোগিতার আয়োজন ছিল এবারের গ্রন্থমেলার উল্লেখযোগ্য সংযোজন। প্রতিযোগীদের উপস্থাপনকৃত স্থাপনাকর্ম নিয়ে বিকাল ৪টায় একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট স্থপতি অধ্যাপক সামসুল ওয়ারেস। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী এবং স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝর।

নতুন বই

মঙ্গলবার নতুন বই এসেছে ১৪৭টি। এ নিয়ে ১৭ দিনে প্রকাশিত নতুন গ্রন্থের সংখ্যা দুই হাজার ৬২২টি। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ মিনার মনসুর ও দিলওয়ার চৌধুরীর সম্পাদনায় ‘শেখ মুজিব একটি লাল গোলাপ’ (বাংলা একাডেমি), ডা. অপরেশ কুমার ব্যানার্জীর ‘সংক্ষিপ্ত চিকিৎসা বিজ্ঞান অভিধান’ (গ্রন্থকুটির), ড. মযহারুল ইসলামের ‘কিশোর নবীনদের বঙ্গবন্ধু’ (অনন্যা), দীপু মাহামুদের ‘মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ একজন’ (অনন্যা), আতিউর রহমানের ‘নাই নাই ভয় হবে হবে জয়’ (পাঞ্জেরী), হাবীবুল্লাহ সিরাজীর ‘স্বপ্নহীনতার পক্ষে’ (সাহস পাবলিকেশন্স), আবুল হায়াতের ‘প্রিয় অপ্রিয়’ (প্রিয় বাংলা প্রকাশন), লোপা মমতাজের ‘ইতিহাসের ফুটনোট’ (সংবেদ), কামাল চৌধুরীর ‘টুঙ্গিপাড়া গ্রাম থেকে’ (অন্যপ্রকাশ), পিয়াস মজিদের ‘কথার কল্লোল’ (মাওলা ব্রাদার্স), ইকরাম কবীরের ‘মেয়েটিকে বাঁচানো গেল না’ (রচয়িতা)।

মূল মঞ্চের আয়োজন

বিকাল ৪টায় মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় মিনার মনসুর ও দিলওয়ার চৌধুরী সম্পাদিত ‘শেখ মুজিব একটি লাল গোলাপ’শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আমিনুর রহমান সুলতান। আলোচনায় অংশ নেন জাহিদুল হক, জাফর ওয়াজেদ এবং আসলাম সানী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সম্পদ বড়ুয়া।

লেখক বলছি

লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন শামীম আজাদ, মলয় বালা, আফসানা বেগম এবং অরবিন্দ চক্রবর্তী।

কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন কবি জাহিদুল হক, বিমল গুহ এবং দুলাল সরকার। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী আঞ্জুমান আরা, ফয়সল আহমেদ এবং মৃন্ময় মিজান। ছিল এ. কে আজাদ-এর পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘আনন্দন’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন বুলবুল ইসলাম, শাহনাজ নাসরিন ইলা, অসীম দত্ত, মীর মন্ডল, স্বপ্নীল সজীব, পূরবী বিশ্বাস। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন মো. সিরাজুল হক (তবলা), রবিনস্ চৌধুরী (কী-বোর্ড), অসিত বিশ্বাস (এসরাজ) এবং বিশ্বজিৎ সেন (মন্দিরা)।

(ঢাকাটাইমস/১৮ফেব্রুয়ারি/টিএটি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :